স্পোর্টস ডেস্ক :
টাইব্রেকারে স্পেনকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল রাশিয়া। আর দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন শেষ হলো ২০১০ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দল স্পেনের। ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় ১-১ সমতায়। এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। অতিরিক্ত সময়েও ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জয় তুলে নেয় রাশিয়া।
টাইব্রেকারে প্রথমে শটটি নেন স্পেনের ইনিয়েস্তা। দারুণ শটে গোল করেন তিনি। এরপর রাশিয়ার স্মোলভ এসে গোল করেন। তারপর স্পেনের জেরার্ড পিকেও গোল করেন। এরপর রাশিয়ার সের্গেই ইগনাশেভিচও গোল করেন। টাইব্রেকারে স্কোর তখন ২-২। তখনও টানটান উত্তেজনা।
কিন্তু স্পেনের তৃতীয় কিকটি নিতে এসে হতাশ করেন কোকে। দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন রুশ গোলরক্ষক আকিনফিভ। এরপরই ম্যাচ রাশিয়ার দিকে হেলে পড়ে। রাশিয়ার তৃতীয় কিকটি নেন গলোভিন। তিনিও গোল করতে ভুল করেননি।
স্পেনের চতুর্থ কিকটি নিতে এসে অধিনায়ক সার্জিও রামোস গোল করেন। রাশিয়ার চতুর্থ কিকটি নেন চেরিশেভ। তিনিও গোল করেন। এরপর স্পেনের পঞ্চম কিকটি নিতে আসেন ইয়াগো আসপাস। কিন্তু এই এই শটটিও ঝাঁপ দিয়ে ঠেকিয়ে দেন আকিনফিভ। যার ফলে টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিক রাশিয়া।
রাশিয়া বিশ্বকাপের প্রথম টাইব্রেকার ম্যাচ এটি। অবশ্য নকআউট পর্ব সবে শুরু হয়েছেই গতকাল। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে সবদিক দিয়ে এগিয়ে ছিল স্পেন। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না। রুশ গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় বারবার আক্রমণ করেও গোলের দেখা পায়নি স্পেন। আজ ম্যাচ সেরা হন রাশিয়ার গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভ।
রবিবার ম্যাচের শুরুতেই রাশিয়ার আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। ১১তম মিনিটে আত্মঘাতী গোলটি করেন রাশিয়ার সের্গেই ইগনাশেভিচ। এবারের বিশ্বকাপে এটি দশম আত্মঘাতী গোল।
ডি-বক্সের কাছাকাছি জায়গায় ফ্রি-কিক পায় স্পেন। ফ্রি-কিকটি নেন ইসকো। গোলপোস্টের সামনে তখন সার্জিও রামোসকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন ইগনাশেভিচ। এক পর্যায়ে ইগনাশেভিচ-রামোস দুইজনই পড়ে যান। এমন সময় বল এসে ইগানাশেভিচের পায়ের গোঁড়ালিতে লেগে জালে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
৪২তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে ম্যাচে ১-১ সমতা আনে রাশিয়া। গোলটি করেন ডিজুবা। কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বল ডি-বক্সের মধ্যে থেকে হেড করেছিলেন ডিজুবা। বলটি হেড করার জন্য ডিজুবার সামনে থেকে লাফ দিয়েছিলেন জেরার্ড পিকেও। কিন্তু পিকের পেছন থেকে বলটি ডিজুবা হেড করার পর এসে পিকের হাতে লাগে। রেফারি সঙ্গে সঙ্গেই পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন। এ নিয়ে রেফারির কাছে স্পেনের খেলোয়াড়রা বোঝানোর চেষ্টা করেন যে এটা অনিচ্ছাকৃত ছিল। কিন্তু রেফারি তার সিদ্ধান্তেই অনড় ছিলেন। রেফারির সঙ্গে তর্ক করার কারণে হলুদ কার্ড দেখেন পিকে। ১-১ সমতায় ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ হয়। ৭৫তম মিনিটে স্পেন এগিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু ইনিয়েস্তার বুলেট গতির শট ঝাঁপ দিয়ে ঠেকিয়ে দেন রাশিয়ার গোলরক্ষক। এরপরও স্পেন বারবার আক্রমণে গিয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার গোলরক্ষক আকিনফিভ দুর্দান্তভাবে সব আক্রমণ রুখে দেন। ১০৮তম মিনিটে দুর্দান্ত আক্রমণ সেভ করেন আকিনফিভ।
বিশ্বকাপে এবার পঞ্চমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল রাশিয়া। এর আগে তারা ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার সেরা অর্জন সেমিফাইনাল। ১৯৬৬ সালে তারা সেমিফাইনালে খেলেছিল।
‘বি’ গ্র“প থেকে গ্র“প চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছিল স্পেন। গ্র“প পর্বে তিন ম্যাচ খেলে তারা একটিতে জয় পায় ও দুইটিতে ড্র করে। অন্যদিকে, ‘এ’ গ্র“প থেকে গ্র“প রানার আপ হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠে রাশিয়া। গ্র“প পর্বে তারা তিন ম্যাচ খেলে দুইটিতে জয় পায় ও একটিতে হারে।