সেলিম হাসান কাওছার গোলাপগঞ্জ থেকে :
গোলাপগঞ্জে পর্ণোগ্রাফি মামলায় হাবিবুর রহমান শিবলু (২৭) নামে এক বখাটে যুবককে গ্রেফতার করে শ্রীঘরে পাঠিয়েছে পুলিশ। সে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ইয়াগুল গ্রামের আজির উদ্দিনের ছেলে। ওই মামলার অন্য আসামী একই গ্রামের মৃত সজ্জাদ আলীর ছেলে আজির উদ্দিন (২৬) পলাতক রয়েছে। পৌর রণকেলী ইয়াগুল গ্রামের আব্দুস ছত্তারের স্ত্রী- মরিয়ম বেগমের করা মামলায় পুলিশ তাকে আটকের পর পর্ণোগ্রফি মামলায় আদালতের মাধ্যমে শ্রীঘরে প্রেরণ করে। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, এজাহার নামীয় আসামীরা আব্দুস ছত্তারের মেয়ে ঢাকাদক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের এসএসসি ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ও রণকেলী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ২০১৬ সাল থেকে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করে আসছিল। ২০১৭ সালে তারা দু’বোন পিকনিকে যাওয়ার পর অভিযুক্ত আসামীদের বান্ধবীদের মাধ্যমে মোবাইলের ক্যামেরায় ফটো তুলে রাখে। তারা এই ছবি হাতে আনার পর তাদের দু’বোনকে অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ কথা বলে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দিয়ে আসছিল। অভিযুক্ত আসামী ও অভিযোগকারীর মা একই গ্রামের বাসিন্দা। এজাহারে বলা হয় ২০১৬ সাল থেকেই তাদের দু’বোনকে কলেজ ও স্কুলে যাওয়া আসার পথে এসব হুমকি দিয়ে আসছিল অভিযুক্তরা। আসামীদের প্রস্তাবে দু’বোন রাজি না হওয়ায় তারা কম্পিউটার ডিভাইসের মাধ্যমে ফটো বিকৃত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কয়েকটি ফেইক আইডি খুলে আপলোড করে। এ ঘটনায় গেল ২৪ রমজান ঐ দু’বোনের বাবা গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন। পুলিশ ওই ডায়রীর সূত্র ধরে মঙ্গলবার সকালে গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী বাজার থেকে শিবলুকে আটক করে। আটকের পর দু’শিক্ষার্থীর মা আব্দুস ছত্তারের স্ত্রী- মরিয়ম বেগম (৪৫) বাদী হয়ে পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮ (২),(৩),(৪) ধারায় মামলা দায়ের করেন। গতকাল বুধবার পুলিশ তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি একেএম ফজলুল হক শিবলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন পর্ণোগ্রাফির মামলায় আদালতের মাধ্যমে আটকৃত একজনকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে মামলার বাদীর মোবাইলে কল দেয়া হলে কে ফোন ধরে বলেন আমি বাজারে আছি। বাড়ীতে গেলে মায়ের সাথে আলাপ করবেন।
এদিকে ঐ মামলার ২য় আসামী আজির উদ্দিনের বড় ভাই শামসুল ইসলাম ও জয়নুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন। তাদের ভাইকে পরিকল্পিত ভাবে ঐ মামলায় ফাসানো হয়েছে। সে একজন প্রতিবন্দী। গ্রামে একটি মুদির দোকান রয়েছে তার। সারাদিন দোকানেই বসে থাকে। ওই মামলার বাদীর মেয়েরা খারাপ প্রকৃতির। তাদের সাথে অনেক ছেলেদের সম্পর্ক রয়েছে। তাদের অনৈতিক চলাফেরার কারণে বিভিন্ন সময়ে শালিসও হয়েছে। তারা গ্রামের সম্মান মেরে এখন আমার ভাইকে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। পুলিশের তদন্তকারী এএসআই কাল্পনিক কিছু ছবি সংগ্রহ করে মামলা রেকর্ড করেছেন। স্থানীয়রা বিষয়টি সমাধানের জন্য মামলার বাদীনির কাছে গেলে তিনি বলেন,আমার দু’মেয়ের বিয়ের ১০লাখ টাকা খরচা দিলে মামলা তুলে নেবো।