কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় দেড় হাজার সহকারি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। দীর্ঘ দিনের সৃষ্ট হওয়া শিক্ষক সঙ্কট দূরীকরণে এই নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী এক বছরের মধ্যে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মাউশি আওতাধীন সারা দেশে ৩৪৩টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক শূন্য রয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। নিয়োগ সংক্রান্ত বিধিমালা না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ কার্যক্রমেও স্থবিরতা দেখা দেয়। সম্প্রতি সেই বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। এ বিষয়ে একটি গ্রেজেট প্রকাশ করা হয়।
জানা গেছে, সারা দেশে ৩৪৩টি বিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ১০ হাজার ৩৫০টি সহকারি শিক্ষকের পদ থাকলেও সেখানে ৮ হাজার ৮৭ শিক্ষক রয়েছে। শূন্য রয়েছে ২ হাজার ২৬৩টি। এছাড়াও চলতি বছরের শেষে আরও ৭৫ জন সহকারি শিক্ষক অবসরে যাবেন। অথচ ৩৫ ও ৩৬তম বিসিএসে মোট ৯৬০ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে দীর্ঘ সময় ক্ষেপণ হওয়ায় অনেক প্রার্থী ভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করছেন। ফলে পিএসসির করা সুপারিশভুক্ত সব প্রার্থীকে যোগদান করানো সম্ভব হয় না।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, দ্রুত এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পিএসসির মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তার প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় ও শূন্য পদের জন্য শিক্ষক চাহিদাপত্র দিতে মাউশিকে নির্দেশ দেয়া হয়। গত ১০ এপ্রিল মাউশি থেকে সে চাহিদাপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রয়োজনীয় (অবসর গ্রহণ ও শূন্য পদে) শিক্ষক চাহিদাপত্র তৈরি করে গত ১০ এপ্রিল তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক ১ হাজার ৩৭৮ শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবপত্রে দেখা গেছে, সারা দেশে ৩৪৩টি বিদ্যালয়ে বাংলা বিষয়ে ৩৬৩ শূন্য পদের জন্য ৩৬৩ জন, ইংরেজি বিষয়ে ৩৬৩ পদে ১০৫ জন, গণিতে ২৭২ পদের জন্য ২০৫ জন, সামাজিক বিজ্ঞানে ১৮১ পদের জন্য ৮৩ জন, ভৌতবিজ্ঞানে ১৮১ পদের জন্য ১০ জন, জীববিজ্ঞানে ১৮১ পদের জন্য ১১৮, ব্যবসায় শিক্ষা ১৮১ পদের জন্য ৮ জন, ভূগোলে ৯০ পদের জন্য ৫৪ জন, চারু ও কারুকলায় ৯০ পদের জন্য ৯২ জন, শারীরিক শিক্ষায় ৯০ পদের জন্য ৯৩ জন, ইসলাম ধর্মে ১৮১ পদের জন্য ১৭২ জন এবং কৃষি শিক্ষায় ৯০ শূন্য পদের জন্য ৭২ জন শিক্ষক নিয়োগের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক আব্দুল মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমানে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ বিধিমালা জারি হওয়ায় নিয়োগ সংক্রান্ত সব জটিলতা কেটে গেছে। এ কারণে পিএসসির মাধ্যমে সরাসরি সহকারি শিক্ষক নিয়োগ দিতে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইনের সঙ্গে বৈঠকের পর তার নির্দেশে ইতোমধ্যে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। সচিব দেশে আসলে তা পিএসসিতে পাঠানো হবে। এরপর পিএসসি থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য তারিখ ঘোষণা করা হবে। তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের পুলিশি চারিত্রিক সনদ পাওয়ার পর তাদের নিয়োগ দেয়া হবে।