স্টাফ রিপোর্টার :
পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় গোলাপগঞ্জে ও হবিগঞ্জে মা-ছেলে সহ নিহত ৫ এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন।
গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : গোলাপগঞ্জে দ্রুত গতিতে গাড়ি ছেড়ে বাস চালক মোবাইলে কথা বলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ২জন নিহত ও অন্তত ৩০/৩৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। তবে পুলিশ জানিয়েছে দুর্ঘটনা কবলিত বাসের হেলপার নিহত হয়েছে। ওই বাসের হেলপার জকিগঞ্জ উপজেলার মৃত ইছাক আলীর পুত্র আব্দুল করিম (১৯)। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের পৌর শহরের দাঁড়িপাতন এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পরপরই স্থানীয় জনগণ, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন বাসের যাত্রীদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঘটনার প্রায় ঘন্টাখানেক পর ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট ঘটনাস্থালে আসে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত ও নিহতদের উদ্ধার করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই স্থানীয়রা প্রায় ৩০জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন। বিকাল সাড়ে ৫টায় পুলিশের রেকার ঘটনাস্থলে পৌছে ও সন্ধ্যায় খাদ থেকে বাস উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। আহত যাত্রীরা জানান, ঘটনার সময় চালক মোবাইল ফোনে আলাপ করছিলেন। চালকের ভুলের জন্য বাসটি দুর্ঘটনায় কবলিত হয়েছে। জানা যায়, বিকেল ৩টার দিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা বাস (সিলেট-জ-১১-০৮১৩) মুক্তা এন্টারপ্রাইজ গোলাপগঞ্জ চৌমুনীতে থেকে যাত্রী উঠানামা শেষে গোলাপগঞ্জ উপজেলার জকিগঞ্জ সড়কের দাড়িপাতন এলাকায় পৌছা মাত্র বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি খাদে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা যাত্রীদের উদ্ধার করলেও বাসের নীচে একজন যাত্রীর চাপা পড়েন। পরে ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনী, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয়দের প্রায় দু’ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। আহতরা হলেন বিয়ানীবাজার আলীনগর ইউনিয়নের আলীনগর এলাকার হাজী বুরহান উদ্দিন (৫০), বিয়ানীবাজার জলঢুপ এলাকার নবিন্দ্র চক্রবর্তী (৪৫), জকিগঞ্জ উপজেলার দেলওয়ার আহমদ(২৮), গোলাপগঞ্জ আমুড়া ইউনিয়নের ঘাগুয়া গ্রামের মৎস্য ব্যবসায়ী আবুল হাসান (৩৫), সরওয়ার হোসেন (৩০), পৌর এলাকার ইয়াগুল গ্রামের মনির উদ্দিনের পুত্র কয়েছ আহমদ (২৫), সুমা রাণী দাস(২২), কুলসুমা বেগম (২৮), ছিদ্দিকা বেগম (১৮), তৌয়বুন বেগম (২৫), ফাহিমা আক্তার (২৬), লিজা আক্তার (১০), সেলিম আহমদ (৪০), লিলি বেগম (৩৮), সাবেরা বেগম(২৪), শহিদুর রহমান (২২), সুমা বেগম (১৭), রাহেলা আক্তার (২০), রাহি আহমদ (১০), সেলিম আহমদ (৪৫), মেরিন বেগম (২৩) পাকি মিয়া (৫০)। বাকী আহতদের নাম ঠিকানা জানা যায়নি। এদিকে দুর্ঘটনায় কবলিত বাসের যাত্রী বিয়ানীবাজার উপজেলার জলডুপ গ্রামের রবিন্দ্র চক্রবর্তী রাগব জানান, গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী থেকে বাসটি ছেড়ে যাওয়ার পর ড্রাইভার কাওছার আহমদ মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। দুর্ঘটনার স্থানে আসা মাত্র গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এরপর তিনি কিছু বলতে পারেননি। এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম ফজলুল হক শিবলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সিলেট ফায়ার সার্ভিসের ডিএডি দীনমনি শর্মা প্রতিবেদককে জানান, উদ্ধার কাজ সমাপ্ত হয়েছে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে মা ছেলেসহ ৩জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ৩০জন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মডেল বাজার নামকস্থানে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের জবেদ মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ কামরুন নাহার মেয়ুয়া(৬০) ছেলে কাওছার হোসেন খোকন(৩৫) ও সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত আসাদ্দর আলীর পুত্র কফিল উদ্দিন(২৭)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা হবিগঞ্জ গামী হবিগঞ্জ-সিলেট এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকা মেট্রো (ব-১১-০৬৮৬) ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলা আউশকান্দি ইউনিয়নের মডেল বাজার নামকস্থানে পৌঁছামাত্রই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী খাদে পড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই ৩জন নিহত হয়। খবর পেয়ে শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ ও দমকল বাহিনীর টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় হতাহতদের উদ্ধার করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় ৪জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। শেরপুর হাইওয়ে পুলিশের (ওসি) বিমল চন্দ্র ভৌমিক এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দমকল বাহিনী ও স্থানীয়দের সহযোগীতায় যাত্রীদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করি।