জগন্নাথপুরে এবার মান সম্মত বেড়িবাঁধ নির্মাণ হওয়ায় কৃষকদের স্বস্তি

42

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে এবার মান সম্মত বেড়িবাঁধ নির্মাণ হওয়ায় স্থানীয় কৃষকসহ জনমনে স্বস্তি বিরাজ করছে। যদিও প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারো হাত নেই। তবুও ভাল কাজ দেখে কৃষকদের মনে অনেকটা শান্তি দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, স্বাধীনতার পর এই প্রথম জগন্নাথপুরে মান সম্পন্ন বেড়িবাঁধ নির্মাণ হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার বরাদ্দও ছিল অনেক বেশি। সেই সাথে ছিল কঠোর তদারকি। সব মিলিয়ে সময় একটু বেশি লাগলেও ভাল কাজ হয়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরের ৫২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রায় ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ আসে। পিআইসি কমিটির মাধ্যমে কাজ হওয়ায় ভাল হয়েছে বলে কৃষকদের দাবি। তবে সব থেকে আলোচিত বিষয় ছিল এবার তদারকি। জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ এবার নিজে মাঠে নেমে কঠোর ভাবে তদারকি করেছেন। কাজে অবহেলার জন্য অনেক পিআইসিকে শাস্তিও দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভয়ে সারাক্ষণ পিআইসিরা আতঙ্কে ছিলেন। যেখানেই কাজে গাফিলাতি হয়েছে, সেখানেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কঠোর হস্তক্ষেপ। এতে অনেক বাধার সম্মুখিন হতে হয়েছে। অনেক সময় অনেক স্থানে বেড়িবাঁধের পাশ থেকে মাটি উঠাতে দেয়নি জমির মালিকরা। যে কারণে তাৎক্ষণিক সময়ে পাউবো’র ম্যাজারমেন্ট পরিবর্তন করে অন্য দিকে গুড়িয়ে কাজ করতে হয়েছে। এবারের তদারকির বিষয়টি আজীবন মনে থাকবে বলে অনেক পিআইসিগণ বলেন। তারা মনে করেন, এটি একটি শিক্ষা। দায়িত্ব নিলে সঠিকভাবে কাজ করতে হয়। তা কঠোর ভাবে শিখিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। স্থানীয়রা জানান, ইতোমধ্যে পুরো বেড়িবাঁধের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অধিকাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেছে। বাকি মাত্র কয়েকটি প্রকল্পের কাজ আগামি ৩/৪ দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২২ মার্চ বৃহস্পতিবার নলুয়ার হাওর পোল্ডার-১ এলাকার পিআইসি কমিটির সভাপতি ছালিকুর রহমানের ৪৫০ মিটার, জাবেদ আহমদের ১০৫০ মিটার, আবদুল হাকিমের ২৫০ মিটার ও দবির মিয়ার ১৫৭০ মিটার বাধের কাজ শেষ হয় বলে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেন। তাদের করা মান সম্মত কাজ দেখে স্থানীয়রা অনেক খুশি হয়েছেন। এছাড়া পর্যায় ক্রমে অন্যান্য পিআইসিগণের কাজও প্রায় শেষ প্রান্তে। এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, কাজের মধ্যে অর্ধেক কাজ হচ্ছে মনিটরিং। যথা সময়ে মান সম্মত কাজ শেষ করার জন্য আমাকে অনেক সময় কঠোর হতে হয়েছে। এতে মনে কষ্ট না নিতে তিনি পিআইসিগণের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, এবার অবশ্যই মান সম্মত কাজ হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় পুরো কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। মাত্র কয়েকটি প্রকল্পের সামান্য কাজ বাকি রয়েছে। আশা করছি আগামি ২/৩ দিনের মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তারা আমাদের মতো মাঠে গিয়ে বেড়িবাঁধের অনেক ত্র“টি-বিচ্যুতি গণ-মাধ্যমে তুলে ধরায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া সহজ হয়েছে।