মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজার পৌরসভার বড়হাট এলাকায় জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’-এ নিহত নারীসহ তিন জঙ্গির মধ্যে আরও এক জঙ্গির পরিচয় শনাক্ত করেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। তার নাম মো.সাখাওয়াত হোসেন ওরফে মাহফুজুর রহমান। নৌ-বাহিনীর সাবেক সদস্য ছিল সাখাওয়াত। এনিয়ে দুই জঙ্গি পরিচয় শনাক্ত করলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মৌলভীবাজার সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মো.কামাল হোসেন বলেন,‘বড়হাটে জঙ্গি আস্তানার ঘটনায় ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল মামলা রুজু হয়। মৌলভীবাজার মডেল থানার মামলা নং-৩। বড়হাটে তিন জঙ্গির মধ্য একজনকে শনাক্ত করা হয়েছিল। সিআইডিতে মামলাটি হস্তান্তরের পর পরই তদন্তে মোড় নেয়। বড়হাটে নারীসহ তিন জঙ্গি মারা গিয়েছিল। তিনি বলেন,তদন্তে জানা যায় যে এরমধ্যে একজন নৌ-বাহিনীর সাবেক সদস্য মো.সাখাওয়াত হোসেন ওরফে মাহফুজুর রহমান। তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থানার দূরবাড়িয়া গ্রামে। সে ওই গ্রামের মো. নুরুল ইসলাম ছেলে। মাহফুজুর রহমান বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল। পলাতক অবস্থায় বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করতো। সে ছদ্মবেশে থাকার সময় বিভিন্ন জায়গায় ছদ্মনাম ব্যবহার করে আসতো। গত ২৮ ফেব্র“য়ারি তার আত্মীয়-স্বজন এসে ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করে।’
মৌলভীবাজার ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) ওসি মো. আব্দুস ছালেক বলেন,ঘটনার পরপর নিহত নারীসহ তিন জঙ্গির মধ্যে শনাক্ত হয় জঙ্গি আশরাফুল আলম নাজিম। এর আগে ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল মনোয়ারা বেগম নামের এক নারী হাসপাতাল মর্গে লাশের ছবি দেখে তার ছেলে নাজিমকে শনাক্ত করেন।’ আরও বলেন,‘নারী জঙ্গির পরিচয়ও শনাক্তের পথে। খুব শিগগিরই আদালতে চার্জশিট দিতে পারবো। তদন্ত চলছে। নিহত জঙ্গির সঙ্গে আর কারও সম্পৃক্ততা আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর পেছনে মাস্টারমাইন্ড আছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি আব্দুস ছালেক।’ প্রসঙ্গত: নাসিরপুরে ‘অপারেশন হিট ব্যাক’ ও বড়হাটে ‘অপারেশন ম্যাক্সিমাস’ চলাকালে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দুই শিশুসহ নিহত হয় মোট ১০ জন। এদের মধ্যে নাসিরপুরে নিহত ৭ জনের সবাই একই পরিবারের সদস্য। আর বড়হাটে নিহত একজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেলেও বাকি দুই জঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায়নি।
পরিচয় পাওয়া ৮ জনের স্বজনরা লাশ গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করলে বেওয়ারিশ দুই লাশের সঙ্গে পৌর এলাকায় পৃথক সময়ে ১০ জনের লাশ দাফন করে মৌলভীবাজার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
নাসিরপুর জঙ্গি আস্তানার মামলা নম্বর ০১ ও বড়হাটের জঙ্গি আস্তানার মামলা নম্বর ০৩। মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি অকিল উদ্দিন ২০১৭ সালের পহেলা এপ্রিল পৃথকভাবে সন্ত্রাস বিরোধী আইন/২০০৯ (সংশোধনী-২০১৩) এর ৬(২)৭/৮/৯/১০/১২/১৩ ধারায় মামলা দুটি দায়ের করেন।