আরেকটি প্রতাপ ছড়ানো জয় বাংলাদেশের

42

স্পোর্টস ডেস্ক :
আরেকটি প্রতাপ ছড়ানো জয় পেল বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় সিরিজের পঞ্চম ম্যাচে মঙ্গলবার জিম্বাবুয়েকে ৯১ রানে হারালো টাইগাররা। এর আগে সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে আট উইকেটে ও তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১৬৩ রানে হারিয়েছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।
সিরিজে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে বড় জয় পেয়ে আগে থেকেই টাইগাররা ফাইনাল নিশ্চিত করে রেখেছিল। আজকের জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলে আরও শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ। অন্যদিকে, জিম্বাবুয়ে আজ হারলেও তাদের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন রয়েছে। বর্তমানে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কা উভয় দলেরেই পয়েন্ট চার করে।
আগামী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচ রয়েছে। এই ম্যাচে যদি শ্রীলঙ্কা হেরে যায় তাহলে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে নেট রান রেটের ভিত্তিতে যারা এগিয়ে থাকবে তারাই ফাইনালে বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে। আগামী ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল ম্যাচ।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে এদিন বাংলাদেশের দেয়া ২১৭ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৩৬.৩ ওভারে ১২৫ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন সিকান্দার রাজা। বাংলাদেশের পক্ষে মাশরাফি বিন মুর্তজা ২টি, সাকিব আল হাসান ৩টি, সানজামুল ইসলাম ২টি ও রুবেল হোসেন ১টি করে উইকেট নেন।
জিম্বাবুয়ের ওপেনিং জুটি ভাঙেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে টাইগার দলপতির বলে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন হ্যামিলটন মাসাকাদজা। তিনি করেন ৫ রান। ইনিংসের সপ্তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। ওভারের পঞ্চম বলে সলোমন মিরেকে বোল্ড করেন তিনি। আর ষষ্ঠ বলে ব্রেন্ডন টেইলরকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। ইনিংসের দশম ওভারে মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ হন ক্রেইগ আরভিন।
দলীয় ৩৪ রানে চার উইকেট হারানোর পর পিটার মুর ও সিকান্দার রাজার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু এই জুটিকে বেশি দূর যেতে দেননি সানজামুল ইসলাম। ইনিংসের ২৩তম ওভারের চতুর্থ বলে পিটার মুরকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউ হন ম্যালকম ওয়ালার।
দলীয় ৯৫ রানে সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে জিম্বাবুয়ের। ইনিংসের ৩০তম ওভারে গ্রায়েম ক্রেমারকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন রুবেল হোসেন। ৩৩তম ওভারে সিকান্দার রাজাকে বোল্ড করেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৩৬তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে সাব্বির রহমানের হাতে ধরা পড়েন টেন্ডাই সাতারা। ৩৭তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ধরা পড়েন কাইল জারভিস।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২১৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে তামিম ইকবাল করেন ৭৬ রান। সাকিব আল হাসান করেন ৫১ রান। বাকিদের মধ্যে দুই অঙ্কের ঘরে রান করেন মুশফিকুর রহিম (১৮), সানজামুল ইসলাম (১৯) ও মোস্তাফিজুর রহমান (১৮)। ইনিংস শেষে রুবেল হোসেন অপরাজিত থাকেন ৮ রান করে। জিম্বাবুয়ের পক্ষে গ্রায়েম ক্রেমার ৪টি, কাইল জারভিস ৩টি, সিকান্দার রাজা ১টি ও টেন্ডাই সাতারা ১টি করে উইকেট নেন। আজ চারটি উইকেট নেয়ার মাধ্যমে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০০টি উইকেটের মালিক হয়েছেন গ্রায়েম ক্রেমার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৯১ রানে জয়ী বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ইনিংস: ২১৬/৯ (৫০ ওভার)
(তামিম ইকবাল ৭৬, এনামুল হক বিজয় ১, সাকিব আল হাসান ৫১, মুশফিকুর রহিম ১৮, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২, সাব্বির রহমান ৬, নাসির হোসেন ২, মাশরাফি বিন মুর্তজা ০, সানজামুল ইসলাম ১৯, মোস্তাফিজুর রহমান ১৮*, রুবেল হোসেন ৮*; কাইল জারভিস ৩/৪২, টেন্ডাই সাতারা ১/৩৩, ব্লিজিং মুজারাবানি ০/৩৬, সিকান্দার রাজা ১/৩৯, গ্রায়েম ক্রেমার ৪/৩২, ম্যালকম ওয়ালার ০/৩২)।
জিম্বাবুয়ে ইনিংস: ১২৫ (৩৬.৩ ওভার)
(হ্যামিলটন মাসাকাদজা ৫, সলোমন মিরে ৬, ক্রেইগ আরভিন ১১, ব্রেন্ডন টেইলর ০, সিকান্দার রাজা ৩৯, পিটার মুর ১৪, ম্যালকম ওয়ালার ০, গ্রায়েম ক্রেমার ২৩, কাইল জারভিস ১০, টেন্ডাই সাতারা ৮, ব্লিজিং মুজারাবানি ০*; সাকিব আল হাসান ৩/৩৪, মাশরাফি বিন মুর্তজা ২/২৯, সানজামুল ইসলাম ২/২৮, মোস্তাফিজুর রহমান ২/১৬, রুবেল হোসেন ১/১৮)।