সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই- আর এক্ষেত্রে তথ্যমেলা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ- তথ্যমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার জেলা প্রশাসন, সিলেট এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), সিলেট এর উদ্যোগে নগরীর রিকাবীবাজারস্থ মোহাম্মাদ আলী জিমনেসিয়ামে দু’দিনব্যাপী (২ ও ৩ জানুয়ারি ২০১৮) তথ্যমেলা আয়োজন করা হয়। তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সেবা সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে অবহিত করার সেতুবন্ধন সৃষ্টির লক্ষ্যে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় সরকারি বেসরকারি ২৯টি প্রতিষ্ঠান (সরকারি ২৩টি, বেসরকারি ৬টি) অংশগ্রহণ করে।
২ জানুয়ারি বিকেল তিনটায় মেলার উদ্বোধন করেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। উদ্বোধনের পর জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ারের সভাপতিত্বে তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি ও আইনের কার্যকর বাস্তবায়নে প্রয়োজন সরকারি বেসরকারি সকল অংশীজনের সক্রিয় অংশগ্রহণ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট এবং বিশেষ অতিথি গোলাম কিবরিয়া, পুলিশ কমিশনার, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সনাক সভাপতি আজিজ আহমদ সেলিম, টিআইবি সিলেট ক্লাস্টারের প্রোগ্রাম ম্যানেজার-সিই চিত্ত রঞ্জন রায়, তরুণ প্রজন্মের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ইয়েস গ্র“পের দলনেতা পল্টু কুমার রায়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক সদস্য এডভোকেট সৈয়দা শিরিন আক্তার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সনাক সদস্য এডভোকেট সৈয়দ মনির আহমাদ।
প্রধান অতিথি বিভাগীয় কমিশনার ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম তার বক্তব্যে বলেন, এক সময় বলা হতো কহড়ষিবফমব রং ঢ়ড়বিৎ এখন বলা হয় ওহভড়ৎসধঃরড়হ রং ঢ়ড়বিৎ সুতরাং সময় পাল্টেছে। এখন শুধু জ্ঞান নিয়ে সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ নেই। জ্ঞানের সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য হাতে থাকলে একজন মানুষ ক্ষমতায়িত হবে, সমৃদ্ধ হবে। তিনি বলেন, তথ্য অধিকার আইন পাশ হওয়ার পর থেকে নানাবিধ আয়োজনে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মানুষকে সচেতন করার প্রচেষ্টা অব্যাহ রয়েছে। তবে এর পাশাপাশি কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে যেমন, তথ্য প্রদানকারী হিসেব সঠিকভাবে তথ্য সংরক্ষণ করতে না পারা, দক্ষ জনবলের ঘাটতি, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের ঘাটতি এবং সর্বোপরি ব্যাপক জনসচেতনতার অভাব। এজন্যে সরকার, তথ্য কমিশন এবং জনগণ সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি মানুষের নৈতিক চরিত্র তথা ব্যক্তিচরিত্রের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। তিনি আরো বলেন, এ আইনের সুফল পেতে এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা ও সুশাসন নিশ্চিকরণে তথ্য অধিকার আইন কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের কোন বিকল্প নেই- আর এক্ষেত্রে তথ্যমেলা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তিনি সিলেট জেলার সকল দপ্তরে আইন অনুযায়ী তথ্য প্রদানকারী দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ না হয়ে থাকলে নিয়োগ দেয়ার এবং যে সকল দপ্তরে রয়েছে সেগুলো যথানিয়মে আপডেট করার পরামর্শ প্রদান করেন। বিজ্ঞপ্তি