হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
বাহুবলে দেবোত্তর সম্পত্তি দখলকে কেন্দ্র করে হামলায় ১০ জন লোক আহত হয়েছে। আহতদের বাহুবল হাসপতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করছে। ঘটনার সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি ঘর-বাড়ি ভাংচুরেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের ইজ্জতনগর গ্রামে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের বানিয়াগাও গ্রামের বড়বাড়ি নামে একটি বাড়িতে দেবোত্তর সম্পত্তির একাংশে শ্রী শ্রী ভগবতি মন্দির স্থাপন করে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূজা-অর্চনা করে থাকে। উক্ত মন্দিরের সামনে ৩ শতক খালি জায়গা সুধাংশু কর ও সমর কর নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে একই গ্রামের মোতাব্বির হোসেনের কাছে বিক্রি করে দেয়। উক্ত ক্রয়-বিক্রয়কে বেআইনী উল্লেখ করে তা দেবোত্তর সম্পত্তি দাবি করে মন্দিরের সেবায়েত গুণেন্দ্র কর আদালতে মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে বিরোধ চলছিল।
শুক্রবার শেষ রাত (বৃহস্পতিবার ৩০ নভেম্বর) ৩টার দিকে মোতাব্বির হোসেনের নেতৃত্বে কথিপয় লোক উক্ত সম্পত্তি দখল করতে গেলে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বাধা দেয়। পরবর্তীতে ভোর ৫টার দিকে মোতাব্বির হোসেন গ্রামের প্রায় অর্ধশত লোক নিয়ে উল্লেখিত সম্পত্তি দখল করে একটি ঘর তৈরি করে। এ সময় বাধা দিতে আসা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের উপর হামলা চালায়। এতে গণেন্দ্র কর (৫৫), আহতরা হলো ইজ্জতনগর গ্রামের অমিত কুমার দে (৪৯), লক্ষ্মী রানী দেব (৫৫), লিটন চন্দ্র কর (৩৫), হেনা কর (৬৫), রায় রঞ্জন দে (৫৫), হরিপদ রঞ্জন দে (৫৫), কাজল কর (৫৫), উদয় কর (১৯) সহ ১০ জন আহত হন। আহতদের মাঝে লক্ষ্মী রানী দেব ও লিটন চন্দ্র কর বাহুবল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। হামলার সময় গণেন্দ্র করের বাড়ির ভাংচুর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পরপর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাই, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জসীম উদ্দিন ও বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলীর নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোতাব্বির হোসেনের দখলদারি ঘর উচ্ছেদ করেন। এ সময় পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত ইজ্জতনগর গ্রামের মৃত হাজী আব্দুল মতিনের পুত্র মোতাব্বির হোসেন (৬০), মৃত হাজী আব্দুল মতিনের পুত্র আবুল হোসেন (৬৫), আব্দুর রহমানের পুত্র ফজলুল হক (২৭), আব্দুর রহমানের পুত্র আমিনুল হক (২৫), পূর্ব রূপশংকর গ্রামের মৃত আব্দুল গফুরের পুত্র আব্দুল ছাত্তার (৮০), মৃত আব্দুল হামিদের পুত্র বিলাত মিয়া (৩৪) ও আবুল হোসেনের পুত্র কাছুম আলী (৩০) কে গ্রেফতার করে।
ঘটনার খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনিষ চাকমা ও পুলিশ সুপার বিধান ত্রিপুরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলী জানান, ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।