বিয়ানীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
বিয়ানীবাজারে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টার পর এ ঘটনা ঘটে। মোকাম মসজিদের সামনে নিহত যুবক পান খেতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। নিহত যুবকের নাম আনোয়ার হোসেন। সে সুপাতলা গ্রামের সিরাজ উদ্দিনের পুত্র এবং ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেনের ভাই। পূর্ব বিরোধের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে।
পুলিশের ধারণা, পূর্ব বিরোধের জের প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত করে আনোয়ার নামের যুবককে হত্যা করে রায়েল আহমদ। বছর খানেক পূর্বে হোটেলে বসা নিয়ে আনোয়ার ও রায়েলের মধ্যে মারামারি ঘটে। এতে রায়েল আহত হয়েছিল। সে ঘটনা সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি হলেও সুযোগ পেয়ে রায়েল বদলা নিতে ছুরিকাঘাত করে।
পুলিশ এ ঘটনায় রায়েলের ভাই পাভেল আহমদ ও আজাদের আটক করেছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। আনোয়ারকে খুন করেছে সায়েলের বড়ভাই রায়েল। সে কসবা কোনাপাড়া এলাকার সবজি বিক্রেতা পংকি মিয়ার ছেলে। তবে কি কারণে এ হত্যাকান্ড তা কেউ বলতে পারছেন না। এ দুই যুবকের মধ্যে কোন বিরোধের বিষয়টিও জানাতে পারেননি নিহত আনোয়ারের স্বজনরা।
জানা যায়, পান খাওয়ার জন্য মোকাম মসজিদের সামনের একটি পান দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো নিহত আনোয়ার। এ সময় কোথায় থেকে এ তরুণ এসে কোন কিছু না বলে তার বুক বরাবর ছুরি চালায়। একবার ছুরিকাঘাত করেই ওই দুর্বৃত্ত পালিয়ে যায়। আনোয়ার মাটিতে লুটিয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার শাহরিয়ার বলেন, তার বুকের বাম পাশের শেষ পাজরের কাছে গভীর ক্ষত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হতে পারে আমাদের ধারণা। এখানে নিয়ে আসার আগেই সে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ে।
মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ছুটে যান বিয়ানীবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান খান, পৌর মেয়র আব্দুস শুকুর, শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস মাকসুদুল ইসলাম আউয়ালম, চেয়ারম্যান সিহাব উদ্দিন। এর আগে খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানার ওসি মোঃ শাহজালাল মুন্সী, ওসি তদন্ত জাহিদুল হকসহ থানা পুলিশের টিম হাসপাতালে ছুটে যান।
আনোয়ারের মৃত্যু সংবাদ ছুটে হাসপাতালে তার স্বজনরা ছুটে আসেন। এ সময় এক মর্মান্তিক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সকলের কান্নার হাসপাতালের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। মৃত্যু সংবাদ শুনে হাসপাতালে উৎসুক জনতা ভীড় করেন। এ সময় উৎসুক মানুষকে সামাল দিতে পুলিশ প্রবেশ পথে নজরদারি বাড়ায়।
এ দিকে দুর্বৃত্তদের খোঁজে পুলিশের কয়েকটি দল পৌরশহর ও আশপাশ এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করছে।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি শাহজালাল মুন্সী বলেন,মূল ঘাতককে এখনোও আটক করা যায়নি। পুলিশ রায়েলের ভাই পাভেল আহমদ ও আজাদের আটক করেছে। নিহত আনোয়ারের লাশের সুরত হাল সম্পন্ন করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।