দুর্নীতি মামলায় সুচির ৫ বছর কারাদন্ড

3

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গৃহবন্দী থাকা মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সুচিকে আরও পাঁচ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। দুর্নীতির দায়ে তার বিরুদ্ধে এই দন্ড ঘোষণা করা হয়।
সুচির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মোট ১১টি মামলা চলছে। এর মধ্যে প্রথমটিতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাদন্ড পেলেন। গণতন্ত্রপন্থী এই নেত্রীর কারাদন্ডের রায়ের ব্যাপারে জানেন এমন একটি সূত্রের বরাত দিয়ে বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। শান্তিতে নোবেলজয়ী ৭৬ বছর বয়সী আউং সান সুচির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় এক ডজনের বেশি মামলা দায়ের করেছে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী দেশটির জান্তা সরকার। এর মধ্যে তার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। রাজধানী নেপিডোর জান্তানিয়ন্ত্রিত আদালতেই সেসব মামলার বিচার চলছে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, বিভিন্ন অভিযোগে দায়ের হওয়া সব মামলায় যদি সুচি দোষী সাব্যস্ত হন, সেক্ষেত্রে সবমিলিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রায় ১৯০ বছরের কারাদন্ডাদেশ হতে পারে। সুচি অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ বরাবরই মিথ্যা বলে দাবি করে এসেছেন। বুধবার রাজধানী নেপিডোর আদালতে কার্যক্রম শুরু হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই সুচির বিরুদ্ধে বিচারক রায় ঘোষণা করেন। কারণ বন্ধ দরজার পেছনে এই বিচার কার্যক্রম চলছিল এবং সঙ্গত কারণেই সেখান থেকে তথ্য প্রকাশের বিষয়ে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
এদিকে কারাদন্ডের রায় ঘোষণার পরপরই সাজা কার্যকর করতে ৭৬ বছর বয়সী সুচিকে এখন কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হবে কিনা সেটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ২০২১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গ্রেফতারের পর থেকে সুচিকে একটি অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়েছে। অবশ্য সুচির রায়ের বিষয়ে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের কোন মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
এর আগে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উস্কানি দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি এবং কোভিড-১৯ প্রোটোকল লঙ্ঘনের মাধ্যমে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ভাঙ্গার দায়ে গত ৬ ডিসেম্বর সুচিকে চার বছরের কারাদন্ড দিয়েছিলেন দেশটির একটি আদালত। সরকারের শীর্ষ পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ১১ মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে দেয়া প্রথম কোন রায় ছিল সেটি। তবে সুচির বিরুদ্ধে এই রায়ের পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সেসময় আদালত সুচিকে চার বছরের কারাদন্ড দিলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে দুই বছর কমিয়ে দেয় মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
পরে চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি সুচিকে আরও চার বছরের কারাদন্ড দেয় দেশটির একটি আদালত। অবৈধ ওয়াকিটকি রাখাসহ কয়েকটি অভিযোগে এই কারাদন্ড দেয়া হয়। এতে সুচির কারাদন্ড দাঁড়িয়েছিল ছয় বছরে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। বন্দী করা হয় গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সুচি ও তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা হারানোর পর মিয়ানমারের সাবেক শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এটি তৃতীয় কোন মামলার রায়।