স্টাফ রিপোর্টার :
বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আখালিয়া সড়কে একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। শাবি ফটক সংলগ্ন এলাকা এতে রণক্ষেত্র তৈরি হয়। প্রায় দেড় ঘন্টা ব্যাপী এ সংঘর্ষ চলে। গতকাল সোমবার সকালে সিলেট সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রভোস্ট, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তারা হচ্ছেন- শাহপরান হলের সহকারী প্রভোষ্ট আশিষ কুমার বণিক, এসএমপি’র কনষ্টেবল সোহেল আহমদ ও ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র আ-আমিন, লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র তৌহিদ আহমদ। অপর আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। শ্রমিকদের হামলার পর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলামের নির্দেশে পুলিশ ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর পরিবহন শ্রমিকদের হামলার ঘটনায় আজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসবেন। বেলা ১১টায় প্রক্টর অফিসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সার্বিক বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রক্টর জহির উদ্দীন আহমেদ। তাছাড়া হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে জালালাবাদ থানা পুলিশ বৈঠক করেছে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন আহমেদ, প্রক্টর জহির উদ্দীন আহমেদসহ প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন বলে জানান জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।
জানা গেছে, গত এক মাসে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আখালিয়া এলাকায় কুড়িটির বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ সড়ক দিয়ে শহরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে রাত-বিরাতে চলাফেরা করে। সম্প্রতি কয়েকজন শিক্ষার্থী মোবাইল, টাকাসহ মূল্যবান জিনিসি খোয়ানোর পাশাপাশি ছিনতাইকারীদের হামলায় আহত হয়েছেন। এসব ঘটনার প্রতিকার না হওয়ায় গতকাল সোমবার সকাল ১১টা থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে রাখে ছাত্ররা। এর মধ্যে পরিবহন শ্রমিকরা হামলা চালালে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। সংঘর্ষ চলে এক-দেড় ঘণ্টার বেশি সময়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জহির উদ্দীন আহমেদ বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করি। কিন্তু এরইমধ্যে হঠাৎ শ্রমিকরা হামলা চালালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আহত হন। হামলাকারী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান প্রক্টর।