মিয়াদ হত্যাকান্ড নিয়ে উত্তপ্ত ছাত্রলীগের দু’পক্ষ, জেলা কমিটি বিলুপ্ত

75

স্টাফ রিপোর্টার :
ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে খুন হওয়া উমর আলী মিয়াদ হত্যাকান্ড নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সিলেট নগরী Omor Ail-1টিলাগড় কেন্দ্রীক ছাত্রলীগের রাজনীতি। মিয়াদের খুনের ঘটনার পর থেকে চলছে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ। কেউ বলছেন এটি ব্যক্তিগত বিরোধ। কেউ বলছেন এটি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। এসবের রেশ পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। একপক্ষ অন্যপক্ষকে ঘায়েল করতে চালাচ্ছেন নানা প্রচারণা। করছেন নানা মন্তব্য। এমন অবস্থা টিলাগড়ে ছাত্রলীগের বিভক্তিকে আরোও স্পষ্ট করে তুলেছে।
নিহত ছাত্রলীগ কর্মী, সিলেট এমসি কলেজ ও লিডিং ইউনিভার্সিটির ছাত্র উমর আলী মিয়াদ ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিরন মাহমুদ নিপু গ্র“পের সক্রিয় কর্মী। আর এই খুনের পিছনে নিপু ও তার অনুসারীরা প্রথম থেকেই দোষারোপ করছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরী ও তার অনুসারীদের। খুনের ঘটনায় গত বুধবার রাতে শাহপরাণ থানায় দায়ের করা মামলাতেও (নং-৬) এক নম্বর আসামী করা হয়েছে এম রায়হান চৌধুরীকে। এছাড়া আরোও ৯ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে এজাহারে। অজ্ঞাত আরোও ৪/৫জন আসামীও রয়েছেন মিয়াদের পিতার দায়ের করা মামলার এজাহারে।
এদিকে মিয়াদ খুনের ঘটনা নিয়ে টিলাগড় কেন্দ্রীক ছাত্রলীগের সাথে জড়িত দুই শীর্ষ নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের মন্তব্য জানিয়েছেন। দু’টি মন্তব্যই দেয়া হয়েছে হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর। এরমধ্যে গত বুধবার রাত ৯টা ৫১ মিনিটে নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে মন্তব্য করেন রায়হান। আর এর পরপরই মন্তব্য করে নিপু।
এম. রায়হান চৌধুরী বলেন-  সম্পূর্ণ হিংসার বশবর্তী হয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ষড়যন্ত্রমূলক, সাজানো, মিথ্যা হত্যা মামলায় যারা আজ আমাকে ফাঁসিয়েছেন, মনে রাখবেন ইতিহাস কাউকেই ক্ষমা করেনি, করবেও না। আমি ভীত নই, সত্য কে সত্য, আর মিথ্যা কে মিথ্যা বলে যদি ফাঁসির মঞ্চে দাঁড়াতে হয় আমি নির্দ্বিধায় তা বরণ করে নিবো। সত্যের মৃত্যু নেই। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
হিরন মাহমুদ নিপু বলেন- সোমবারে যে খুন হয়েছিল সে জাকারিয়া মাহমুদ মাসুম নয়, সে উমর আলী মিয়াদ। সব কিছু নিয়ে খেলা খেলার চেষ্টা করবেন না। হুমকি ধামকি দিয়ে কোন লাভ নেই। মনে রাখবেন হিরন মাহমুদ এর গুর্দা সব মানুষের মত বাম পাশে নয়। প্রত্যেকটি আসামি গ্রেফতার হবে যে হবেই। হিরন ফকিরের ঘরে জন্ম নেয়নি যে লাশ বিক্রী করতে হবে।
দুই নেতার মন্তব্যই তাদের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এসব কারণে জেলা ছাত্রলীগের বিভক্তি আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সিলেট জেলা শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক জরুরী সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সিলেট জেলা শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। এছাড়া আগামী ২৫ অক্টোবরের মধ্যে সিলেট জেলা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতবৃন্দের কাছে পদ প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার আহবান করা হয়।
গত সোমবার নগরীর টিলাগড়ে ছাত্রলীগ কর্মী ওমর আহমদ মিয়াদ খুন হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত আসল। মিয়াদ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ছাত্রলীগ সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরীকে আসামি করে ছাত্রলীগের ১০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে হত্যা মামলা হয়েছে।