স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর টিলাগড়ে ছাত্রলীগ কর্মী উমর আলী মিয়াদ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অপরাধে ছাত্রলীগকর্মী তোফায়েল আহমদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোপনে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকার শেরেবাংলা নগরস্থ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত তোফায়েল আহতাবস্থায় সিলেট থেকে পালিয়ে গিয়ে ঢাকা হৃদরোগ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার জেদান আল মুসা তোফায়েলকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তোফায়েলের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে ঢাকার শেরেবাংলা নগরস্থ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে অভিযান চালায় মহানগর পুলিশের একটি দল। সেখানে অভিযান চালিয়ে মিয়াদ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত ছাত্রলীগকর্মী তোফায়েল আহমদকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরো বলেন, এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন মহানগর মোগলাবাজার থানার সিনিয়র সহকারি কমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার। এছাড়া অভিযানে ছিলেন শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত), এসআই মামুন, এসআই প্রদিপসহ আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্য।
এদিকে, এ ঘটনার ৩দিন পর মঙ্গলবার রাতে নিহত উমর আলী মিয়াদের পিতা আকুল মিয়া বাদী হয়ে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরীসহ ১০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। (মামলা নং-০৬)।
শাহপরাণ (র.) থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, টিলাগড়ে ছাত্রলীগকর্মী ওমর আলী মিয়াদ হত্যার ঘটনায় বুধবার রাতে নিহতের পিতা মো. আবুল মিয়া শাহপরাণ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মিয়াদ হত্যা মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন- তোফায়েল আহমদ; পিতা-ময়না মিয়া, সারোয়ার হোসেন চৌধুরী; পিতা- মৃত ময়নুল হক চৌধুরী, জুবায়ের খান; পিতা- আকরাম খান, জাকারিয়া মাহমুদ; পিতা-হাবিবুর রহমান, রুহেল; পিতা- অজ্ঞাত, ফাহিম শাহ; পিতা- সাজ্জাদ মিয়া, ফখরুল আহমদ; পিতা- ময়না মিয়া, শওকত হাসান মানিক; পিতা-মৃত ওসমান গনি ও রাফিউল করিম মাসুম; পিতা- অজ্ঞাত।
উল্লেখ্য, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত সোমবার বিকেল ৩টার দিকে নগরীর টিলাগড়ে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে ছুরিকাঘাতে উমর আলী মিয়াদ (২৬) নিহত হন। আহত হন উভয় গ্র“পের কয়েকজন। এতে আহত অবস্থায় মিয়াদ, তোফায়েলসহ আরো কয়েকজনকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা মিয়াদকে মৃত ঘোষণা করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় তোফায়েল। এর আগে পুলিশ ঘটনার পরপরই ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা তোফায়েলের ভাই ফখরুল ইসলামকে আটক করা হয়। আটক ফখরুল ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ও সিলেট সিটি করপোরেশনের লাইসেন্স শাখায় চাকুরি করেন। মঙ্গলবার দুপুরে ময়না তদন্ত শেষে মিয়াদের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগ। সমাবেশ থেকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরীর গ্রেফতার দাবি ও ৪ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। নিহত মিয়াদ নগরীর বালুচর এলাকার আকুল মিয়ার পুত্র। ৩ ভাই ২ বোনের মধ্যে মিয়াদ ২য়। তিনি লিডিং ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। অন্যদিকে আটক তোফায়েল একই এলাকার বাসিন্দা।