স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর ফুটপাত অবৈধ দখলদার ও তাদের আশ্রয়দাতা হিসাবে ১৭ জনের তালিকা আদালতে জমা দিয়েছেন সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতোয়ালী থানার ওসি গৌছুল হোসেন। গতকাল সোমবার সকাল ১১ টার দিকে সিলেট চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো: সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে এ তালিকা তারা জমা দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সিলেট সিটি কপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দাখিলসহ অবৈধ ফুটপাত দখলকারীদের নাম ঠিকানা সম্বলিত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য্য ছিল। নির্দেশিতমতে সিলেট সিটি কপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন। তাদের লিখিত ব্যাখ্যার সঙ্গে সিলেট সিটি কপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী অবৈধ ফুটপাত দখলকারীদের একটি তালিকা দাখিল করেন। দাখিলী তালিকা দৃষ্টে দেখা যায় যে, ফুটপাত অবৈধ দখলকারদের ঠিকানা দেয়া হয়নি। শুধুমাত্র তাদের পদ ও পদবী উল্লেখ করা হয়েছে। এমতাবস্থায় আগামী ৩ দিনের মধ্যে ওসি কোতোয়ালী থানাকে ফুটপাত অবৈধ দখলকারদের বর্তমান পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হয়। আগামী ১৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) তারিখে নগরীর ফুটপাত অবৈধ দখলকারদের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা (বর্তমান) দাখিল অন্তে পরবর্তী আদেশ দেয়া হবে। আদেশের অনুলিপি মেয়রসহ ওসি কোতোয়ালী থানাকে সরবরাহ করা হোক বলে গতকালের আদেশে উল্লেখ করা হয়।
আদালতে ফুটপাত দখলকারীদের তালিকা জমা দেয়ার ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা ১৬/১৭ জনের একটি তালিকা গতকাল সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ সিলেটের চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জমা দিয়েছি।
আদালতের এপিপি মাহফুজুর রহমান বলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতোয়ালী থানার ওসি গৌছুল হোসেন গতকাল সকাল ১১ টার দিকে ফুটপাতে অবৈধ দখলদার ও তাদের আশ্রয়দাতা হিসাবে ১৬ জনের একটি তালিকা আদালতে জমা দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, সিলেট একটি আধ্যাত্মিক নগরী, একটি পবিত্র নগরী আর এ নগরীতে দলমত ও ভয় ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে নগরী রাস্তা-ফুটপাত হকারদের দখল মুক্ত ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে সিলেট সিটি মেয়র ও কোতোয়ালী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়াও এ অভিযানে আদালত সর্বাত্মক সহযোগীতা করবে বলেও জানান তিনি।
আদালত থেকে বেরিয়ে এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, পবিত্র হজ পালনে দেশের বাইরে (সৌদি আরব) থাকায় প্রতিবেদন দিতে দেরি হয়েছে। তিনি ফুটপাত দখলমুক্ত করতে গত ১৩ এপ্রিল জেলা পরিষদে নাগরিক সমাবেশে অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনাসহ পুলিশের কাছে সহযোগিতা চাওয়ার ৬টি স্মারকের বিষয়ে আদালতকে অবহিত করেন। নাগরিক সমাবেশে অর্থমন্ত্রী ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পুলিশকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেন। উচ্ছেদ না করতে পারার নেপথ্যে ১৭ দখলদারের নিয়ন্ত্রণ করার কথা উল্লেখ করা হয় আদালতে। আদালতে মেয়র আরিফুল হক বলেন, তখন আদালত তাকে ও কোতোয়ালি থানার ওসিকে নির্ভয়ে কাজ করে যাওয়ার তাগিদ দিয়ে বলেন, আপনারা কাজ চালিয়ে যান, ভয় পাবেন না, আদালত আপনাদের পাশে আছে। এছাড়া আদালতে পুলিশের তরফ থেকে ১৬ জনের নামে ও আরেকটি প্রতীকী নাম ব্যবহার করে দখলদারদের তালিকা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ফুটপাত দখলদারদের তালিকা জমা দিতে না পারায় ১৬ অক্টোবর তাদের আদালতে স্বশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেন সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম মো: সাইফুজ্জামান হিরো। গত ৭ অক্টোবর আদালত এ আদেশ দেন।