স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর কোর্ট পয়েন্ট, জিন্দাবাজর ও চৌহাট্টা এলাকার সড়কে থাকা অবৈধ হকারদের ফের উচ্ছেদ নেমেছে সিটি কর্পোরেশন ও কোতোয়ালী থানা পুলিশ। সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন তারা।
এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ইন্সপেক্টর বিষ্ণু বৈদ্য রায় জানান, আদালতের নির্দেশনায় নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে এবং তা চলবে। গত কয়েক দিন আগেও আদালতের র্নিদশনায় অভিযান চালানো হলেও ঈদকে উপলক্ষ করে টিলে-টালা হয়ে যায় অভিযান। এতে আবারও হকারা দখলে নেয় ফুটপাত। এতে গত ৮ অক্টোবর আদালত তলব করেন মেয়র আরিফ ও কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি গৌছুল হোসেনকে। তাই গতকাল সোমবার অভিযানে নামে সিটি কর্পোরেশন ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ।
সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ মে সিলেটের আদালত প্রাঙ্গণসহ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিটি কর্পোরেশন কার্যালয় সংলগ্ন ফুটপাতে অবৈধ দখলদার, নেপথ্যে থাকা দখলদার পক্ষের ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা ও পরিচয় শনাক্তকরণের লক্ষ্যে সিলেটের বিভিন্ন সেক্টরের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জরুরী বৈঠক করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
গতকাল সোমবারের সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩ দিনের মধ্যে সিলেটের আদালত প্রাঙ্গণসহ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিটি কর্পোরেশন কার্যালয় সংলগ্ন ফুটপাতে অবৈধ দখলদারদের সরে যাওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়ে মাইকিং করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল।
এর আগে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৫ মে সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সংলগ্ন ফুটপাতে অবৈধ দখলদার, নেপথ্যে থাকা দখলদার পক্ষের ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে তা আদালতে দাখিল করতে সিটি কর্পোরেশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ কাজে সিটি কর্পোরেশনকে সহায়তা করতে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
দীর্ঘদিন ধরে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, আদালত প্রাঙ্গণ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিটি করপোরেশন কার্যালয়, বন্দর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করে আসছিল হকাররা। এতে চলাফেরায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় নগরবাসীকে।
এদিকে, সিলেট নগরীর ফুটপাতের অবৈধ দখলদারের তালিকাসংবলিত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল না করায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেনকে আদালতে তলব করা হয়েছে। আগামী ১৬ অক্টোবর তাদেরকে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো গত রবিবার এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আদালতের দেওয়া সময় সময়সীমার মধ্যে মেয়র এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হকার নিয়ন্ত্রণকারীদের তালিকা জমা দিতে ব্যর্থ হন। এ কারণে তাদেরকে আদালতে তলব করেছেন বিচারক। সূত্র মতে, আদেশের অনুলিপি এরই মধ্যে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
আদালত আদেশে উল্লেখ করেন, গত ৮ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় চেয়ে আবেদন করলে তাকে এক মাসের সময় দেওয়া হয়। কিন্তু, তিনি পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যেও তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেননি। উল্লেখিত কারণে কেন তিনি এই ধরনের একটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জনপ্রতিনিধি হয়েও আদালতের আদেশ মেনে প্রতিবেদন দাখিল করছেন না তার ব্যাখ্যা দিতে আগামী ১৬ অক্টোবর তাকে আদালতে তলব করা হয়েছে। একইসঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকায় কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকেও একইদিনে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
আদালতের অনুলিপি পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও কোতয়ালী থানার ওসি গৌছুল হোসেন।