স্টাফ রিপোর্টার :
২০৪১ সালে সমৃদ্ধশালী দেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো: নজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, কর প্রদানের কারণেই বাংলাদেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বিশ্বের কাছে এগিয়ে যাওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ এখন রোল মডেল। যে কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কিভাগ কিভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়, সে বিষয়ে জানার জন্য। গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী সিলেট কর অঞ্চল আয়োজিত রাজস্ব সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘রাজস্ববান্ধব সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিতে অভ্যন্তরীণ সম্পদের যোগান বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে করে আমাদের বিদেশ নির্ভরতা কমছে। ফলে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে এগিয়ে যাচ্ছে কর বিভাগ’।
রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, নিয়মিত করদাতাদের সিলেট থেকেই স্মার্ট কার্ড দেওয়া শুরু করা হবে। আগামী নভেম্বরে আয়কর মেলায় এই কার্ড প্রদান করা হবে। আর করদাতাদের গাড়িতে লাগানো থাকবে টেক্স পেয়ার সম্বলিত স্টিকার। বিভিন্ন অফিস আদালতে তারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেবা পাবেন।
এছাড়া রাজস্ব প্রদানে সিলেটের মানুষ ইতিবাচক মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখানের মানুষ ইচ্ছে করে আয়কর ও মুসক দিতে চায়। ফলে প্রতি বছর লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম সহজ হচ্ছে। বিশেষ করে তরুন আয়করদাতা বৃদ্ধি ও শতভাগ শিক্ষক আয়করের আওতায় আসায় ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, রাজস্ব সংলাপের মুল উদ্দেশ্য সকলের সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলা। মূলত; অনায়াসে নয়, প্রয়াসে সকলের সহযোগিতায় হবে রাজস্ব আদায়।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. নাজমুনারা খানুমের সভাপতিত্বে সংলাপে রাজস্ব সংলাপে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের মতামত গ্রহণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (প্রশাসন) এস এম আশফাক হোসন, সদস্য ( কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মো. আব্দুর রাজ্জাক, সদস্য (কাস্টমস নীতি) মো. লুৎফুর রহমান, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব আমিনুল বর চৌধুরী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি কামরুল আহসান, পুলিশ কমিশনার গোলাম কিবরিয়া, জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার, সিলেট চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি খন্দকার শিপার আহমদ, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবীর, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি হাসিন আহমদ, সিলেটের কর কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মৃতুঞ্জয় ধর ভোলা প্রমুখ।
পরবর্তীতে সিলেট চেম্বার অব কমার্স হলরুমে আয়কর ক্যাম্প ও করদাতা উদ্বুদ্বকরণ অনুষ্ঠান ২০১৭ উদ্বোধন করেন রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো: নজিবুর রহমান। সিলেটের কর কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ এর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে ও অতিরিক্ত কর কমিশনার তৌহিদুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে ২৮ জন নিবন্ধিক করদাতার প্রধান অতিথির কাছ থেকে সনদ গ্রহণ করেন।
স্বাগত বক্তব্যে কর কমিশনার সৈয়দ মোহাম্মদ আবু দাউদ সিলেট কর অঞ্চল বাংলাদেশের মধ্যে সেরা হওয়ায় করদাতাদের উৎসর্গ করেন। তিনি বলেন, ‘টিআইএনধারীদের জন্য অ্যাক্ট অব কাইন্ডনেস’ টেক্সধারীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এরআগে রাজস্ব সংলাপে তিনি মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন করেন।
অনুষ্ঠানে কর কর্মকর্তা ছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইউমেন্স চেম্বারের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, সেরা করদাতা এ.্েক এম আতাউল করিম।
এ সময় চেম্বার নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- চেম্বার পরিচালক ও ভ্যাট, বাজেট, শুল্ক, কর ও ট্যারিফ সাব কমিটির আহবায়ক মাসুদ আহমদ চৌধুরী, পরিচালক মো. হিজকিল গুলজার, জিয়াউল হক, মো. সাহিদুর রহমান, নুরুল ইসলাম, মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান (ভূট্টো), মুশফিক জায়গীরদার, মুকির হোসেন চৌধুরী, আব্দুর রহমান, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, মোঃ আব্দুর রহমান (জামিল), হুমায়ুন আহমেদ, মুজিবুর রহমান মিন্টু, প্রাক্তন সিনিয়র সহ সভাপতি শাহ্ আলম, সদস্য আলীমুল এহছান চৌধুরী, বিসিক শিল্প মালিক সমিটির সভাপতি তারেক চৌধুরী, রড সিমেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি প্রফেসর মজনু মিয়া, কর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আবুল ফজল, সিলেট ক্যাটারার্স গ্র“পের সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বাবলু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক কাজল কুমার সিংহ জানান, আয়কর ক্যাম্পে মোট কর আদায় হয়েছে ৬৬ লাখ ৩১ হাজার ৭৩ টাকা। এরমধ্যে পে অর্ডারে আদায় হয়েছে ৬২ লাখ ২২ হাজার ৮শ এবং চালান মাধ্যমে ৪লাখ ৮ হাজার ২৬৫ টাকা। রিটার্ন সংখ্যা ৫৯টি ও নতুন করদাতা হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন ১২৬ জন।