জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের শ্রীধরপাশা গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের মধ্যে একটানা ১২ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে নুর আলী (২৮) নামের এক হতভাগ্য যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সে শ্রীধরপাশা গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা তছকির আলীর ছেলে। গত বুধবার রাত ১১ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রীধরপাশা গ্রামে নিজ বাড়িতে তার লাশ পৌছলে তাকে শেষ বারের মতো এক নজর দেখতে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। পরে নামাজে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাযায় কয়েক হাজার শোকার্ত মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
এদিকে-বৃহস্পতিবার জগন্নাথপুর থানা পুলিশ সংঘর্ষের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার ৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, শ্রীধরপাশা গ্রামের নুর মিয়ার ছেলে হাবিবুর রহমান (২৫), জগদিশপুর গ্রামের মৃত আবদুল কাদিরের ছেলে সিয়েব আলম (২৬), কামারখাল গ্রামের ধরাজ মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪০) ও একই গ্রামের মৃত আছলম উল্লার ছেলে নূরুল হক (৩৫)। গ্রেফতারকৃতদের সুনামগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়। আহত যুবকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জগন্নাথপুর থানার ওসি হারুনুর রশীদ চৌধুরী জানান, এর আগে পুলিশ এ ঘটনায় উভয় পক্ষের আরো ৯ আসামিকে গ্রেফতার করে। এ নিয়ে মোট ১৩ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত-গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে শ্রীধরপাশা মাদ্রাসার জমি নিলাম নিয়ে বিএনপি নেতা জাবেদ আলম কোরেশী ও আবদুল মালিক পক্ষের আ’লীগ নেতা ফয়সল মিয়ার মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জাবেদ আলম কোরেশী পক্ষের লোকজন ফয়সল পক্ষকে ধাওয়া করে বন্দুক দিয়ে গুলি চালায়। শুরু হয় দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ। চলে বন্দুকের এলোপাতারি গুলি বর্ষণ। প্রায় দেড় ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এবং প্রায় ৫০ রাউন্ড বন্দুকের গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে ৩৭ জন গুলিবিদ্ধ সহ কমপক্ষে ৭০ জন মানুষ আহত হন। এর মধ্যে ফয়সল পক্ষের মানুষ বেশি আহত হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হওয়া যুবক নুর আলী ফয়সল পক্ষের লোক ছিল।
এ ঘটনায় আ’লীগ নেতা আবদুল মালিক পক্ষের আবুল খয়ের বাদী হয়ে ৪৩ জনকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে জাবেদ আলম কোরেশীর পক্ষে মাহবুব আলম কোরেশী বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ৮০ জনকে আসামি করে আরেকটি পাল্টা মামলা দায়ের করেন।