স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর ঐতিহ্যবাহী কুদরত উল¬াহ জামে মসজিদের ইমাম নিয়ে চলমান উত্তেজনার অবসান হয়নি এখনো। এটি এখন আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। বেআইনীভাবে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ এনে কুদরত উল্লাহ মসজিদের ইমাম ও খতিব মো. আব্দুল মতিন মসজিদের দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। স্বত্ত মোকদ্দমা নং ১৫১/১৭। এতে আসামী করা হয়েছে মসজিদ কমিটির মোতাওয়াল্লি বদরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি মোকতাবিস-উন-নূরকে। ১৯ সেপ্টেম্বর আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন ইমাম আব্দুল মতিন।
ওই মামলার প্রেক্ষিতে আদালত মসজিদ কমিটির মোতাওয়াল্লি তেলিহাওরের বাসিন্দা মৃত চুনু মিয়ার ছেলে বদরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি উপশহরস্থ স্প্রিং টাওয়ারের বাসিন্দা মৃত ইব্রাহিম আলীর ছেলে মোকতাবিস উন নূরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রেরণ করেছেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর এ নোটিশটি প্রেরণ করা হয়। নোটিশ অনুযায়ী আগামী পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে তাদের দু’জনকেই আদালতের দ্বারস্থ হতে বলা হয়েছে।
সিলেট সদর আদালতের ঊর্ধ্বতন সহকারী বিচারক নোটিশে উল্লেখ রয়েছে, মামলার বাদীপক্ষ দেওয়ানী কার্য্যবিধি আইনের ৩৯ নং আদেশের ১ নং রুলের বিধানমতে শপথনামা সহকারে দরখাস্ত দ্বারা নিম্ন তপশীল বর্ণিত মসজিদের ইমাম ও খতিব পদে যাতে কাউকে কোনরূপ নিয়োগ প্রদান করতে না পারেন কিংবা বাদীকে মসজিদের তার নামীয় হুজুরা (কক্ষ) হতে জোর পূর্বকও বেআইনীভাবে তাড়িয়ে দিতে না পারেন তদমর্মে ১-২ নং বিবাদীপক্ষকে বিরত করে তাদের বিরুদ্ধে এক অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদানের প্রার্থনা করেন বাদীপক্ষ। আদালত এর প্রেক্ষিতে নথি পর্যালোচনা করে বাদীপক্ষের মোকাবিলা বিবাদীগণের মতে কেন ১-২ নং বিবাদীগণের প্রতি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করা হইবে না তদমর্মে নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেছেন।
কারণ দর্শানোর এই নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মাথায় মোতাওয়াল্লি ও সেক্রেটারিকে আদালতে কারণ দর্শানোর কথা থাকলেও মুকতাবিস উন নূরের বিরুদ্ধে নতুন করে আরেকটি অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ অভিযোগে সিলেট কোতোয়ালি মডেল পৃথক আরেকটি সাধারণ ডায়েরি (নং- ১৯৪৪) করেছেন কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মো. আব্দুল মতিন। ডায়েরিতে তিনি উল্লেখ করেছেন- আদালতের নির্দেশ থাকা স্বত্ত্বেও সেক্রেটারি মোকতাবিস উন নূরের নেতৃত্বে একদল লোক তার অনুপস্থিতিতে হুজরা কক্ষে আমার তালার উপর নতুন করে আরেকটি তালা দিয়েছেন। এবং আমার নেইম প্লেট ভেঙ্গে দূরে সরিয়ে রেখেছে।
এর আগে গত ২২ আগষ্ট মাগরিবের নামাজের পর কমিটির এক সভায় বর্তমান ইমাম ও খতিব মো. আব্দুল মতিনকে মৌখিকভাবে মসজিদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন মসজিদ কমিটি। বিষয়টি ইমাম মো. আব্দুল মতিন মৌখিকভাবে না জানিয়ে লিখিতভাবে জানানোর অনুরোধ করেন। এবং বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের ২০১৬ সালের ধর্মমন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত গেজেট অনুযায়ী তাকে বিদায় দেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু মসজিদের মোতাওয়াল্লি বদরুল ইসলাম ইমামকে বলেন লিখিত কোন কিছুই দেয়া হবে না। অতীতেও লিখিত কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। এ সময় ইমাম আব্দুল মতিন এর জবাবে লিখিত না দেয়া পর্যন্ত কুদরত উল্লাহ মসজিদের বৈধ ইমাম হিসেবে রয়েছেন বলে দাবি করেন। এমন অবস্থার প্রেক্ষিতে মসজিদ কমিটি এবং ইমাম মুখোমুখি অবস্থান করছে। যা এখন আদালতে মামলায় গড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, মো. আব্দুল মতিন দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে ইমামতি করে আসছেন।