শ্রীমঙ্গল থেকে সংবাদদাতা :
মিায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী, তাদের সহযোগী মগ সম্প্রদায় এবং কতিপয় বৌদ্ধ সন্ত্রাসী গণহত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়ন চালাচ্ছে। প্রাণে বাঁচতে সবকিছু ছেড়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে ওই রাজ্যে বাসিন্দা রোহিঙ্গারা। মিয়ানমারে চলমান নৃশংসতার ভয়ঙ্কর বর্ণণা শোনা গেল মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে উদ্ধারকৃত এক রোহিঙ্গা কিশোর মুখে। জেহাদুল ইসলাম নামের ওই কিশোর বয়স ১১ বছর।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার মুসলিমবাগ এলাকা থেকে জেহাদুল ইসলামকে উদ্ধার করে পুলিশ। জেহাদুল জানিয়েছে, সে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম জসিম উদ্দিন ও মায়ের নাম শাহিনা আক্তার। তার বাবা ও মাকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহযোগী মগ’রা হত্যা করেছে বলেও জানায় জেহাদুল।
পুলিশের কাছে জেহাদুল ইসলাম জানায়, গত ৯ দিন আগে সে তার ৩ বছর বয়সী ছোট ভাইকে নিয়ে মিয়ানমার সীমান্ত পার হয়ে বাংালাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় তার ভাই স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত হয়। পরে তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এর আগে মিয়ানমারের সেনারা তাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। এ সময় সেনাবাহিনীর সহযোগী মগরা তার বাবাকে ঘর থেকে বের করে গুলি করে এবং মাকে জবাই করে হত্যা করে।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি কেএম নজরুল বলেন, গত মঙ্গলবার কিশোরসহ আরো ২০-২২ জন রোহিঙ্গা সিলেটে মাজার জিয়ারত করতে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে উঠেন। ফেনী রেলস্টেশনে আসার পর রোহিঙ্গাদের পরিচয় পেয়ে পুলিশ বাকিদের নামিয়ে নিলেও ট্রেনের আসনে বসে থাকায় তাকে কেউ কিছু বলেনি। শহীদ মিয়া নামে শ্রীমঙ্গলের এক যাত্রী জেহাদুলকে শ্রীমঙ্গল নামিয়ে তার বাসায় নিয়ে যান। রবিবার দুপুরে বাড়ির লোকজন পুলিশে খবর দিলে পুলিশ জিহাদকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তাকে চট্টগ্রামে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
এদিকে, পুলিশের কাছে জেহাদুল আরো জানিয়েছে, তার ইচ্ছা কোরআনে হাফেজ হওয়ার। মংডুর একটি মাদরাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তো সে। কিন্তু মগরা সেই মাদরাসাও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে।