কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পারুয়াবিল গ্রামে এক কিশোরীর বিয়ে চলাকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী হাকিম ও পুলিশি অভিযানে বাল্য বিবাহের হাত থেকে রক্ষা পেলে কিশোরী। এ ঘটনায় বর ও বরের বাবাকে আটক করে কমলগঞ্জ থানা হাজতে রাখা হয়েছে। শুক্রবার বেলা দুইটায় এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, পারুয়াবিল গ্রামের মৃত আরব উল্যার মেয়ে কিশোরী আছিয়া আক্তার (১৫) বিয়ে ঠিক করা হয় একই ইউনিয়নের মাধবপুর চা বাগানের ময়না মিয়ার ছেলে ট্রলি চালক রশিদ মিয়া (১৬)-র সাথে। বর কনের বিয়ের বয়স হয়নি এলাকাবাসী বর পক্ষকে আগে জানালেও তারা ঘরুয়া পরিবেশে গোপনে কোন প্রকার আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই বিয়ের আয়োজন করেছিল। কনে কিশোরী আছিয়াকেও রাখা হয়েছিল প্রতিবেশী রফিক মিয়ার বাড়িতে।
পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকবর্তা নির্বাহী হাকিম বাল্য বিবাহের খবর পেয়ে দ্রুত কমলগঞ্জ থানার এসআই শহিদুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নিয়ে পারুয়াবিল গ্রামে রফিক মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বাল্য বিবাহ বন্ধ করেন। গ্রাম পঞ্চায়েত ও জনপ্রতিনিধিরা কিশোরী কনের পরিবারের পক্ষে নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অঙ্গীকার করেন প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার বিয়ে হবে না তখনই কনে ও তার পরিবার সদস্যদের জনপ্রতিনিধি ও পঞ্চায়েতের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে বর কিশোর রশিদ মিয়া ও তার বাবা ময়না মিয়াকে আটক করে কমলগঞ্জ থানা হাজতে রাখা হয়। মাধবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটক বর ও তার বাবার পক্ষে স্বজনরা এসে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে বিয়ে করবে না বলে অঙ্গীকার করলে তখন তাদের জিম্মায় নিয়ে আসা যাবে।
কমলগঞ্জ থানা হাজতে আটক কিশোর বর রশিদ মিয়া ও তার বাবা ময়না মিয়া ঘটনার দায় স্বীকার করে বলেন, এখন জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম পঞ্চায়েত মাধ্যমে তারা মুচলেখা দিতেও রাজি। আর ছেলের বয়স ২১ না হওয়ার আগ পর্যন্ত বিয়ে করাবেন না বলেও ময়না মিয়া জানান।
এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী হাকিম মোহামম্মদ মাহমদুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আটক ট্রলি চালক কিশোর রশিদ মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সে আগের বছরও এক কিশোরীকে বিয়ে করতে চাইলে সচেতন এলাকাবাসীর কারণে ব্যর্থ হয়েছিল। এখন আবারও বাল্য বিবাহের চেষ্টা করে। তাই বাবা ও ছেলেকে এখন থানা হাজতে আটকে রাখা হয়েছে। এখন পরবর্তী কাজ পুলিশ প্রশাসন করবে বলে তিনি জানান।