ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটে অবশেষে ভর্তি হয়েছেন বিরল রোগে আক্রান্ত ওসমানীনগরের রাজিয়া সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তামণির চিকিৎসার খবর শোনার পর শেষ আশা হিসেবে রাজিয়া বেগমের পরিবারের লোকজন তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। হাসপাতালের বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ব্লু ইউনিটে তাকে ভর্তি করা হয়েছে। রেজিয়া বেগমের পায়ের চিকিৎসা করতে কম চেষ্টা করেননি তার স্বামী। জানা গেছে, ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের এওলাতৈল গ্রামের দরিদ্র কৃষক মানিক মিয়ার স্ত্রী রাজিয়া বেগম (৪৫) গত ১৮ বছর ধরে বহু ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছেন। কিন্তু কেউ তাকে আশার আলো দেখাতে পারেনি। প্রতিবেশী আর সব কৃষক পরিবারের স্ত্রীদের মতই অত্যন্ত পরিশ্রমী ছিলেন রেজিয়া। কৃষক পরিবারের হওয়ায় স্বামীর কাজে সব সময় তাকেই সাহায্য করতে হতো। কিন্তু ১৮ বছর আগে দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের পর তিনি (রাজিয়া) প্রথম বুঝতে পারেন কোথাও একটা সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যা গত প্রায় দুই দশকে তার জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। হাঁস মুরগি বা গবাদি পশু লালন পালন থেকে ঘরদোরের কাজে সেই অক্লান্ত রাজিয়া বেগম এখন বলতে গেলে কোনও কাজই করতে পারেন না। নিজের ছোটখাটো প্রয়োজনেও অন্যের সাহায্যের ওপর নির্ভর করতে হয়। গরীব পরিবারটির জন্য এখন অনেকটাই বোঝা হয়ে গেছেন তিনি। রাজিয়ার সমস্যার কথা জানাতে গিয়ে তার স্বামী মানিক মিয়া বলেন, দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের সময় খেয়াল করি আমার পা ফুলে যাচ্ছে। অল্প চিকিৎসাতে সমস্যাটা সেরেও গিয়েছিল। কিন্তু বছর যেতে না যেতেই এটা আবার ফিরে আসে। তার ডান পা ফুলতে-ফুলতে এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে ইতিমধ্যে ভিটামাটি হারিয়েছি। রাজিয়ার ছোট ভাই ইসলাম উদ্দিন বলেন, আমার বোন রাজিয়ার পায়ের ওজন প্রায় দুই মণ। তাকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিতে অন্তত তিন জন লোকের সাহায্য নিতে হয়। তিনি পরিবারের জন্য বোঝায় পরিণত হয়েছে। বাসার কোনো কাজ তাকে দিয়ে হয় না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা: সামন্ত লাল সেন বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে রেজিয়া বেগমের এলিফেন্টিসিস রোগ হয়েছে। সার্জারি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার রোগের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তার রোগ নির্ণয় করা যাবে বলেও আশাবাদী ব্যক্ত করেন ডা: সামন্ত লাল সেন।