নারী ও শিশুর উপর সকল প্রকার নির্যাতন বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে ৭ জুলাই শুক্রবার সকাল ১০ টা থেকে দিনব্যাপী সিলেট জেলা জজ কোর্টের ২নং বার হল মিলনায়তনে আঞ্চলিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক তামান্না আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইশরাত রাহী রিশতার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাসদ(মার্কসবাদী) সিলেট জেলা শাখার আহবায়ক কমরেড উজ্জল রায়, সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সীমা দত্ত, সিলেট জেলার সদস্য মিতা সিং, নমিতা রায়, লক্ষ্মী পাল, রুবাইয়াৎ আহমেদ প্রমুখ।
সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, নারীরা আজ কোথাও নিরাপদ নয়, কর্মস্থলে, বাসে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমনকি নিজ পরিবারেও নারী নির্যাতিত। হত্যা, ধর্ষণ, খুন, নির্যাতন এগুলো পত্র-পত্রিকার নিত্য-নৈমত্তিক খবর। অথচ সরকার এ ব্যাপারে নির্বাক। আজকের সমাজে নারীরা দু’ধরনের নির্যাতনের শিকার। একটা হচ্ছে পুঁজিবাদী শাসন অন্যটা হচ্ছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ও মানসিকতা। পুঁজিবাদী শাসন ব্যবস্থায় মেয়েরা পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মালিক শ্রেণী তাদের স্বার্থে সমগ্র মানুষকে ব্যবহার করছে। প্রতিদিন নিত্যনতুন উপায়ে নারী নির্যাতন বেড়েই চলেছে। কিন্তু সেই নির্যাতনের প্রকৃত কারণ খোঁজার বা আসল দোষী খোঁজে বের করে শাস্তি দেয়ার চেষ্টাও করছেনা এই রাষ্ট্র। বরঞ্চ প্রতিনিয়ত মেয়েদের দোষারুপ করা হচ্ছে যে তারা উগ্রভাবে চলাফেরা করে বলে সমাজে নির্যাতন বাড়ছে। তিন বছরের শিশু থেকে সত্তর বছরের বৃদ্ধা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বর্তমানে। অবাধ পর্নোগ্রাফি, অশ্লীল সিনেমা, বিজ্ঞাপন-নাটকে নারী দেহের ব্যবহার প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। এইভাবে নারী দেহকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপনের ফলে সমাজের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে বিকৃত মানসিকতা। বর্তমান পুঁজিবাদী শোষণমূলক ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে শাসকশ্রেণী সমাজের মধ্যে এ বিকৃতি ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং নারীকে পুঁজিবাদী সমাজের পণ্যের মতো করে নানাভাবে উপস্থাপন করছে। ফলে নারীদের আজকে সকল ধরনের শোষণ-নিপীড়ন ও বিকৃতির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। নারী-পুরুষ সবাই মিলে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং এই লড়াইকে সমাজমুক্তির আন্দোলনে যুক্ত করলেই মানুষের প্রকৃত মুক্তি হবে। বিজ্ঞপ্তি