সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
পানি উন্নয় বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার এবং এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান মনোনীত পিআইস সদস্যদের দুর্নীতি ও গাফিলতির কারণে গত মার্চের শেষ দিকে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বিস্তীর্ণ হাওর এলাকা তলিয়ে যায়। অনেক বাঁধে কাজ শুরু না গওয়ায়, দুর্বল ও অসমাপ্ত বাঁধ ভেঙে প্লাবন ও ফসলহানির পেছনে বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দুর্নীতিকে দায়ী করে সুনামগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশও হয়।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সুনামগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, বাঁধ নির্মাণে কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই প্রেক্ষাপটে হাওর রক্ষা বাঁধ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু করে দুদক। দুদকের পরিচালক মোহাম্মদ বেলাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। তারা ওই এলাকায় গিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তদন্ত চলার মধ্যেই সিলেটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম সরকার, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পূর্বাঞ্চল) মো. আব্দুল হাই এবং সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফসার উদ্দীনকে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়।
রবিবার দুদকের পক্ষ থেকে ৬১ জনকে আসামী করে সুনামগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আসামিদের মধ্যে ১৫ জন সিলেট বিভাগ ও সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা। বাকি ৪৬ জন ঠিকাদার। পাউবো কর্মকর্তাদের মধ্যে আফছার উদ্দীন ছাড়া বাকিরা হলেন- সিলেট অঞ্চলের বরখাস্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নূরুল ইসলাম সরকার, সিলেট উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বরখাস্ত অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল হাই, সুনামগঞ্জ জেলা পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস, সুনামগঞ্জের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী খলিলুর রহমান। এছাড়া সুনামগঞ্জের সেকশন কর্মকর্তা মো. শহিদুল্লা, ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ খান, খন্দকার আলী রেজা, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. শাহ আলম, মো. বরকত উল্লাহ ভূঁইয়া, মো. মাহমুদুল করিম, মো. মোছাদ্দেক, সজীব পাল ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়। আসামিদের মধ্যে ৪৬ ঠিকাদার হলেন- মো. আফজালুর রহমান, খন্দকার শাহীন আহমেদ, মো. জিল্লুর রহমান, সজীব রঞ্জন দাস, পার্থ সারথী পুরকায়স্থ, হান্নান আহমেদ, খাইরুল হুদা চপল, কামাল হোসেন, কাজী নাজিমুদ্দিন, খন্দকার আলী হায়দার, মো. আকবর আলী, মো. রবিউল আলম, মো. আবুল হোসেন, শিবব্রত বসু, মোজাম্মেল হক মুন, মো বাচ্চু মিয়া, শেখ মো. মিজানুর রহমান, আবুল মহসীন মাহবুব।
এছাড়া ঠিকাদার বিপ্রেশ তালুকদার বাপ্পি, মো. জামিল ইকবাল, চিন্ময় কান্তি দাস, নিয়াজ আহমেদ খান, মিলন কান্তি দে, খান মো. ওয়াহিদ রনি, মো. সোয়েব আহমেদ, মো. ইউনুস, মো. আব্দুল কাউয়ুম, মো. আতিকুর রহমান, মো. গোলাম সরোয়ার, মো. খাইরুজ্জামান, মো. মফিজুল হক, মোখলেছুর রহমান, নুরুল হক, মো. রেনু মিয়া, মো. শাহরিন হক মালিক, শামসুর রহমান, আব্দুল মান্নান, মোকসুদ আহমেদ, মো. সাইদুল হক, মো. মাহতাব চৌধুরী, কাজী হাসিনা আফরোজ, শেখ আশরাফ উদ্দিন, লুৎফুল করিম, মো. কেফায়েতুল্লা, হুমায়ুন কবির ও ঠিকাদারের সহযোগী মো. ইকবাল মাহমুদকেও আসামি করা হয়েছে।