দোয়ারাবাজার সীমান্তে ৫২ বস্তা চোরাই চিনি জব্দসহ আটক ২

দোয়ারাবাজার সংবাদদাতা

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্তে ৫২ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ দুই চোরাকারবারিকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হচ্ছে- দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের উত্তর শ্রীপুর গ্রামের মৃত আজর আলীর ছেলে আছকির আলী (৪০) এবং একই গ্রামের আব্দুন নুরের ছেলে মাইনুদ্দিন (২৫)। পুলিশ জানায়, শনিবার দুপুরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে আটককৃতদের বসতঘর থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরাইপথে নিয়ে আসা ৫২ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার করা হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। দোয়ারাবাজার থানার ওসির দিক নির্দেশনায় অভিযানে অংশ নেন এস আই মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান, এএসআই সুমন চন্দ্র দেবসহ সঙ্গীয় ফোর্স।
দোয়ারাবাজার থানার ওসি জাহিদুল হক জানান, উদ্ধার হওয়া চোরাই চিনি জব্দ করে আটককৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

দেশে ফ্যাসিবাদের জনক শেখ মুজিবুর রহমান : মির্জা ফখরুল

কাজির বাজার ডেস্ক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ কখনোই গণতান্ত্রিক দল ছিল না। তারা ফ্যাসিবাদী দল। দেশে ফ্যাসিবাদের জন্ম দেন শেখ মুজিবুর রহমান। শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল ময়দানে বিএনপির এক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭২-৭৫ সাল পর্যন্ত প্রথম ফ্যাসিবাদের অবতারণা করেন সেই শেখ মুজিব, যাকে মানুষ অন্ধভাবে বিশ্বাস করেছিল। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল নয়, বরং তারা ফ্যাসিবাদী দল। তাদের বডি ক্যামিস্ট্রিতে গণতন্ত্র নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৬ বছরে তারা অসংখ্য বিএনপি নেতাকর্মীদের গুম করেছে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশকে ব্যবহার করেও তারা হত্যা করেছে। গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে যেভাবে ব্যবহার করা হয়েছে সেটি কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘ইউনিক নেতৃত্ব’ দিয়েছেন। দমন-পীড়ন, নির্যাতনের মাধ্যমে এক ভয়ঙ্কর স্বৈরাচার রূপ নিয়েছিল আওয়ামী লীগ, শেষে জনগণের রোষে তারা দেশ থেকে পালিয়েছে।
জেলা বিএনপির আহŸায়ক মাহমুদ হাসান খানের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফের সঞ্চালনায় সম্মেলনে সম্মেলনে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

রিমান্ড শেষে ব্যারিস্টার সুমনকে আজ আদালতে হাজির করা হবে

চুনারুঘাট সংবাদদাতা

ছাত্রজনতার ওপর হামলার মামলায় হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারি স্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পর থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। শুক্রবারে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই লিটন রায়। আজ রবিবার তাকে আদালতে পাঠানোর কথা রয়েছে। ব্যারিস্টার সুমনের রিমান্ডকে ঘিরে থানায় বিশেষ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কাউকে থানায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
কড়া নিরাপত্তায় চলছে সাবেক এমপি সুমনের জিজ্ঞাসাবাদ। এ জন্য থানার প্রবেশপথ ও থানা প্রাঙ্গণে করা নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ
র আগে বৃহস্পতিবার সুমনের উপস্থিতিতে আদালতে রিমান্ড আবেদন করেন চুনারুঘাট থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লিটন রায়। এসময় সুমনের আইনজীবীর পক্ষ থেকে রিমান্ড বাতিল ও জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর করে ২ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুলাই চুনারুঘাট উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ গোলচত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে ১১ সেপ্টেম্বর সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনসহ ৯৭ আসামির নাম উল্লেখ করে প্রায় ২০০ জনের বিরুদ্ধে চুনারুঘাট থানায় মামলা করেন চুনারুঘাট উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহŸায়ক মো. নাসির উদ্দিন। এছাড়াও হবিগঞ্জের মাধবপুরে সরকারি ডাকবাংলোয় হামলা ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এবং রাজধানীর বনশ্রীতে আন্দোলনের হামলা মামলায়ও তিনি আসামি। এদিকে রিমান্ডের খবরে বিকেলে চুনারুঘাট উপজেলা ছাত্রদল ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অভিযুক্ত সাবেক এমপি সুমনের কুশপুতুল নিয়ে বিক্ষোভ শেষে তাতে জুতা নিক্ষেপ করে আগুনে পুড়িয়ে দেন।

দুই দিন ধরে নিখোঁজ দশম শ্রেণির ছাত্র সায়েম

জৈন্তাপুর সংবাদদাতা

দুইদিন ধরে নিঁখোজ রয়েছে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলাম সায়েম (১৬)। সে জৈন্তাপুর উপজেলার ২ নং জৈন্তাপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ১ নং লক্ষিপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সাব্বির আহমদ হিরণের ছেলে।
নিঁখোজ সায়েমের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সায়েমের পরিবার সিলেট সদরের বটেশ্বর খাদিমপাড়া এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। গত বুধবার রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে খাদিমপাড়াস্থ চুয়াবহর বাসা নং – ১৭৭ নং বাসা হতে নামাজের কথা বলে বের হয়ে যায়। পরবর্তীতে সে আর বাড়ী ফিরে আসেনি। ওই সময় তার বাড়ী ফিরতে বিলম্ব দেখে পরিবারের সদস্যরা সম্ভাব্য সকল আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে খোঁজ নিয়ে তার অনুসন্ধানে পাননি। পরেরদিন বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ছবি সহ স্থানীয় বাসিন্দারা তার সন্ধান চেয়ে পোস্ট করতে থাকেন। কিন্তু দিনব্যাপী তার কোন সন্ধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার তার বাবা সাব্বির আহমেদ হিরণ শাহপরান (রহঃ) থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
নিখোঁজ সায়েমের চাচা দিলাল আহমদ জানান, বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় তার পরনে ছিলো লাল খয়েরী রংয়ের টি-শার্ট। ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি লম্বা গড়নের সায়েম সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। কোন সুহৃদয়বান ব্যাক্তি তার সন্ধান পেলে ০১৭১৫-৬৪৪৩৪৩(হিরণ) এই নাম্বারে অথবা অফিসার ইনচার্জ শাহ্পরান (রহঃ) থানায় যোগাযোগ করতে সবিনয় অনুরোধ জানিয়েছেন তার পরিবার।
এদিকে নিঁখোজ সায়েমের সন্ধান চেয়ে তার বাবার সাধারণ ডায়েরী করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহপরান (রহঃ) থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ইন্দ্রনিল ভট্টাচার্য। তিনি জানান- নিঁখোজ সায়েমের সন্ধান পেতে কাজ করছে পুলিশ।

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ১৭টি বছর শ্রমিকদলের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন করেছে

জেলা শ্রমিক দলের কর্মী সভায় কেন্দ্রীয় সভাপতি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ১৭ টি বছর শ্রমিকদলের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। তাদের ওপর মিথ্যা মামলা, জেল, জুলুম, নির্যাতন করা হয়েছে। তারপরও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা ভয় না পেয়ে রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করেছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনে দেশ নতুন করে আবারো স্বাধীন হয়েছে। আমাদের সকলকে এই স্বাধীনতা ধরে রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে অসুস্থ্যতা থাকার পরেও বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা না করিয়ে স্বেরাচারী শেখ হাসিনা মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলের মধ্যে বন্দি করে রেখেছিল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল। এই সংগঠনের নেতাকর্মীরা জিয়াউর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে যাচ্ছে। তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সোরমান আলীর নেতৃত্বে সিলেট জেলায় শ্রমিকদলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে বলেই আজকে এতো সুন্দর কর্মীসভা সফল হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে শনিবার সকাল ১১টায় নগরীর রিকাবীবাজারস্থ কাজী নজরুল ইসলাম অডিটরিয়ামে আয়োজিত কর্মী সভায় উদ্বোধকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মীসভায় জাতীয় ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে কর্মী সভার উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ।
সিলেট জেলা শ্রমিকদলের আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সোরমান আলীর সভাপতিত্বে এবং জেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব নুরুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা মঞ্জুর আহমদ চৌধুরী লিটন ও শ্রমিক নেতা জুমেল আহমদের যৌথ পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. এমরান আহমদ চৌধুরী, শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহ-সভাপতি রহিম বক্স দুদু, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মহিদুল ইসলাম মোহন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব কামরুজ্জামান, ঢাকা মহানগর উত্তর শ্রমিক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক লায়ন ফরিদ আহমেদ, বরিশাল শ্রমিক দলের আহবায়ক ফয়েজ খান, মৌলভীবাজার শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রফিক, কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম, কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবুল, চট্রগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক সদস্য গাজী আইয়ুব, ঢাকা জাতীয় বিদ্যুৎ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (রেজি. বি-১৮৮৬) এর জয়েন্ট সেক্রেটারি মুজিবুর রহমান, রাঙামাটি বিএনপির শ্রম-বিষয়ক সম্পাদক হাফিজুর রহমান।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি শাহজাহান, সহ-সভাপতি এনামুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল আহমদ, মহানগর শ্রমিকদলের আহবায়ক ফয়েজ আহমেদ খান প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি

কানাইঘাটে আইসক্রিম বিক্রেতা হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ১ : আদালতে ঘাতকের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি

 

কানাইঘাট প্রতিনিধি

কানাইঘাটে আইসক্রিম বিক্রেতা আব্দুর রহমান লাল মিয়া (৩৯) হত্যাকান্ডের ঘাতক রুবেল আহমদ (৩৬) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার ভোর রাতে গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী হাদারকান্দি বেরিবিল এলাকার আত্মীয়ের বাড়ি থেকে কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি অলক কান্তি শর্মা, থানার ওসি আব্দুল আউয়ালের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ষাড়াসী অভিযান চালিয়ে রুবেল আহমদকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত রুবেল আহমদ কানাইঘাট পৌরসভার ধর্মপুর গ্রামের নজিমুল হকের পুত্র।
থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল জানিয়েছেন, আইসক্রিম বিক্রেতা আব্দুর রহমান @ লাল মিয়াকে রুবেল আহমদ নিজে হত্যা করেছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে। রুবেল আহমদ জানিয়েছে, আইসক্রিম বিক্রেতা লাল মিয়ার সাথে ২০১৮ সাল থেকে তার বন্ধুত্ব রয়েছে। সেই সুবাদে রুবেল আহমদের নিকট থেকে লাল মিয়া বেশ কিছু টাকা ধার নেয়। ধার নেয়া টাকা লাল মিয়ার কাছে রুবেল ফেরত চাইলে গত ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার রাতে লাল মিয়া রুবেল আহমদকে তার ভাড়াটিয়া দোকানে ডেকে নেয়। তখন লাল মিয়া টাকা ফেরত দিবে বলে তাকে বলাৎকার করে। বলাৎকারের পর রুবেলকে পরদিন টাকা দিবে বলে জানায়। লাল মিয়ার কথামতো পরদিন বুধবার রাত দেড়টার দিকে ভাড়াটিয়া দোকানে আসলে লাল সাটার খুলে ভিতরে ঢুকিয়ে সাটারে তালা লাগিয়ে দেয় আবারো জোরপূর্বক ভাবে রুবেলকে বলাৎকার করে। রুবেল আহমদ তার স্বীকারোক্তি জবানবন্দীতে আরো বলে, তাকে বলাৎকার করার পর লাল মিয়া ক্লান্ত হয়ে খাটের উপরে বিছানায় শুয়ে পড়লে তখন সে ক্ষিপ্ত হয়ে দোকানের ভিতর থাকা লোহার পাইপ সদৃশ্য বস্তু দিয়ে মাথায় দু’টি ও অন্ডকোষে ১টি আঘাত করলে লাল মিয়া মারা যায়। পরে সে দোকানের সাটারে বাহির দিকে তালা দিয়ে চলে যায়।
আইসক্রিম বিক্রেতা লাল মিয়ার লাশ গত শুক্রবার সকালে থানা পুলিশ দোকানের ভিতর থেকে উদ্ধার করে। হত্যাকান্ডের ঘটনায় লাল মিয়ার মামাতো ভাই উপজেলার বড়চতুল ইউনিয়নের লখাইরগ্রাম (বাগবাড়ি) গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র আহসান উল্লাহ বতাই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে শুক্রবার কানাইঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
লাশ উদ্ধারের পর থেকে থানা পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় লাল মিয়ার হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আটক করতে অভিযানে নামে। কললিস্ট তুলে সন্দেহভাজন হিসেবে রুবেল আহমদের ছোট ভাই সহ কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার পর লাল মিয়ার খুনি হিসেবে রুবেল আহমদকে চিহ্নিত করে পুলিশ। পরে পালিয়ে থাকা অবস্থায় গোয়াইঘাট উপজেলার হাদারকান্দি বেরিবিল গ্রাম থেকে থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

নবীগঞ্জে ৬টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি

নবীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে মোবাইল চুরির হিড়িক পড়েছে। প্রতিদিন কোন কোন স্থান বা ভিআইপি বিভিন্ন প্রোগ্রাম থেকে মোবাইল চুরি হচ্ছে। মোবাইল চোরচক্র বেঁচে নিয়েছে বড় বড় জনসভা, ইসলামি সভা ও সরকারি অফিস আদালত। একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব চুরি সংগঠিত হচ্ছে। এদিকে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ গত বৃহস্পতিবার বিশেষ অভিযান চালিয়ে ৬টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে- শীতের মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে ওয়াজ মাহফিল হয়ে থাকে। এসব ওয়াজ মাহফিলে জনপ্রিয় ইসলামী বক্তাগনের আগমন ঘটলে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হন।
তখন মোবাইল চোরাচক্র সেখানে জটলা সৃষ্টি করে মোবাইল চুরি করে থাকে। গত দুই মাসে নবীগঞ্জে প্রায় শতাধিক মোবাইল চুরি হয়েছে। বিশেষ করে শীত মৌসুমে এসব জনপ্রিয় কোথায় আসে তারা খোঁজ খবর নেয়। কারণ ওয়াজ মাহফিলে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। এছাড়া বিভিন্ন বড়বড় দরবার গুলোর মাহফিলের খোঁজ নেয় সেখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়।
নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি আন্তর্জাতিক সুন্নী কনফারেন্সে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল। এখানে থেকে ৪০/৫০টি মোবাইল চুরি হয়, ওই সভায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের মোবাইলও চুরি হয়। ওইদিন ৩ জন মোবাইল চুরকে জনতা আটক করলে পুলিশ তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে জেল হাজতে প্রেরণ করে। নবীগঞ্জ শহরে মোবাইল বিভিন্ন সভা সমাবেশ ও আলোচনা সভায় ইদানিং মোবাইল চুরি ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব চুরির সাথে নবীগঞ্জের কিছু চিহিৃত লোক জড়িত রয়েছে। এদের কাছে থেকে সম্প্রতি অনেক মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। এসব মোবাইল চোর চক্র বিভিন্ন সভা সমাবেশ ও ব্যাংক বীমার সামনে ওৎ পেতে থাকে তারা বিভিন্ন কৌশলে মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়। পরে ঢাকা ও সিলেট শহরের করিম উল্লাহ মার্কেট সহ বিভিন্ন মার্কেটে মোবাইল বিক্রি করে চোরচক্র।
নবীগঞ্জ শহরের মোবাইল চোর সিন্ডিকেটের প্রধান হোতা আনমনুর গ্রামের দারগা মিয়ার পুত্র বাদল আহমদ (৩৬)। তাকে সহযোগিতা করেন পৌর আওয়ামীলীগ নেতা ও নবীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নানু মিয়া। বাদল মোবাইল চুরি, বিদ্যুতের ট্রান্সমিটার চুরিসহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে। তার এক অঙ্গে অনেক রুপ সে কখনও মোবাইল মেকার, কখনও ইলেকট্রনিক দোকান কর্মচারী, কখনও সাংবাদিক, কখনও রাজমিস্ত্রী পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে নানা রকম প্রতারণা করে আসছে। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত লেখা পড়া চোরা বাদল নিজেকে কখনও সাংবাদিক পরিচয় ফেইসবুকে নানা অপপ্রচার করে বেড়ায়। ফেইসবুক পেইজে ভুলবাল পোষ্ট দিয়ে সাংবাদিক সমাজের মানহানী করে যাচ্ছে। অতি সম্প্রতি বাগাউউড়া গ্রামের একব্যক্তির মোবাইল নবীগঞ্জ শহর থেকে চুরি হলে সেই মোবাইলটি নবীগঞ্জ থানার এসআই পরিমল তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট শহরের করিম উল্লাহ মার্কেটের ইসলাম টেলিকম থেকে উদ্ধার করে। সেখানে মোবাইলটি বিক্রি করেন আনমনু গ্রামের বাদল আহমদ। পরে পুলিশ বাদল আহমদকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করে। পরে সাবেক কাউন্সিলর নানু মিয়া মাধ্যমে টাকা ফেরত দিয়ে মুক্তি পায়। ইদানিং বাদল এর নেতৃত্বে মোবাইল ও ছিনতাই বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন।
দিনারপুরের রফিক মিয়া নামে এক ব্যক্তি জানান- কয়েকদিন আগে নবীগঞ্জ শহরে একটি কাজে গিয়েছিলাম, হঠাৎ হাত থেকে আমার ফোন কেড়ে নিয়ে দৌড় দেয় একটি যুবক, পরে আর তাকে খোঁজে পাওয়া যায়নি।
দেওতৈল গ্রামের সাফি বলেন- নবীগঞ্জে মোবাইল চুরি বেড়ে গেছে, গত কিছুদিন আগে নতুন বাজার পয়েন্ট থেকে আমার বোনের মোবাইল চুরি হয়।
এ বিষয়ে এসআই পরিমলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন চোরাই মোবাইলের বিক্রির টাকা বাদল ফেরত দিয়েছেন।
নবীগঞ্জ থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, মোবাইল চোর সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের ধরতে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সব ধরনের মোবাইল সনাক্ত করা সম্ভব। তিনি বলেন কারো মোবাইল চুরি হলে থানায় জিডি করলে আমরা সেটা উদ্ধারে চেষ্টা করবো। নবীগঞ্জ থেকে চুরি হওয়া মোবাইল আমরা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্রাষ্মন বাড়িয়া জেলার নাসির নগর উপজেলার ধরমন্ডল থেকে অভিযান চালিয়ে ৬টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করেছি।

জমি সংক্রান্ত বিরোধে দুই জন খুন

 

স্টাফ রিপোর্টার

জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পৃথকভাবে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জে ২ জন খুন হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে জুড়িতে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা ও ওইদিন রাতে চুনারুঘাটে ভাতিজাদের হাতে চাচা খুনের ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার রাজকি চা-বাগানে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত শুদ্র ভ‚ঁইয়া (৪০) রাজকি চা-বাগানের ২১ নম্বর লাইনের বাসিন্দা। হত্যাকাÐের ঘটনায় ওইদিন রাতে জুড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জয়জিৎ চাষা (২৫) নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজকি চা-বাগানের কিছু জমির মালিকানা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা চা-শ্রমিক সুরেশ চাষার সঙ্গে প্রতিবেশী শুদ্র ভ‚ঁইয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। সুরেশের লোকজন ওই জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুরেশের লোকজন পাকা ধান কাটতে যান। এ সময় শুদ্র তাদের বাধা দেন। একপর্যায়ে শুদ্রের আঘাতে সুরেশের আত্মীয় জয়জিৎ চাষা আহত হন। পরে ওই পক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার (শুদ্র) ওপর হামলা চালান। এ সময় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। খবর পেয়ে বিকেলে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় শুদ্রের দুই হাত, পা ও ঘাড়ের একাধিক স্থানে ধারালো অস্ত্রের কোপ দেখা যায়। রাত ৯ টার দিকে নিহত শুদ্রের স্ত্রী মণি ভ‚ঁইয়া বাদী হয়ে সুরেশ বুনারজি, জয়জিৎ চাষাসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদুল আলম ভ‚ঁইয়া শুক্রবার সকালে জানান, জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধে এ হত্যাকাÐের ঘটনা ঘটেছে। ময়নাতদন্তের জন্য শুদ্রের লাশ মৌলভীবাজার জেলা সদরে অবস্থিত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামি জয়জিৎকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ভাতিজাদের হাতে চাচা খুন হয়েছেন। উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের হাপ্টার হাওর (সাদ্দাম বাজার) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম- মো. রাজু মিয়া (৫৫)। তিনি একই গ্রামের মৃত বাহার উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় সাদ্দাম বাজারে সার-কীটনাশক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে।
পুলিশ জানায়, নিহত মো. রাজু মিয়ার সাথে তার ভাই মৃত তোতা মিয়ার ছেলে মোঃ হাছান মিয়া, হোসেন মিয়া ও মুক্তার মিয়াদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বাড়ির জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিলো। চাচা-ভাতিজার বাড়ির জায়গা বিরোধের বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ এলাকার মুরব্বীদের উপস্থিতিতে মিমাংসার জন্য শালিশ বৈঠক হয়। কিন্তুবিরোধ মিমাংসা হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে বিরোধীয় স্থানে ছোট একটি জাম্বুরা গাছ কাটা নিয়ে চাচা ভাতিজার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ভাতিজাদের দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে চাচা রাজু মিয়া গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হন। স্বজনরা তাৎক্ষণিক রাজুকে উদ্ধার করে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে ওইদিন বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজু মিয়া মারা যান।
খবর পেয়ে বিকেলে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের নেতত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল উপরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

 

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে শুল্কছাড় : বাজারে স্বস্তি ফেরাতে পদক্ষেপ নিন

 

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অন্তর্র্বর্তী সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, কিন্তু তার প্রতিফলন বাজারে খুব একটা নেই। বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের ওপর শুল্কছাড় দিলেও স্বস্তি ফেরেনি বরং নিত্যপণ্যের দাম আরও বেড়েছে। দাম লাগামহীন হয়ে যাওয়ায় সরকার আলু ও পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্কছাড় প্রত্যাহার করেছে। তার পরও দাম কমেনি এই দুই পণ্যের। বেশি বেড়েছে সোয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, আলু, ব্রয়লার মুরগির দাম। সবজির দাম কিছুটা কমেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, অক্টোবরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ১০ দশমিক ৮৭, যা গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
খাদ্যমূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। উচ্চমূল্যস্ফীতির কারণে ভর্তুকিমূল্যে টিসিবির পণ্য কিনতে মানুষের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এনবিআরের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পেঁয়াজের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ও সহনীয় পর্যায়ে রাখতে আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক ও নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হলো। এই প্রজ্ঞাপন জারির ফলে আমদানির পরিমাণ বেড়ে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়বে এবং মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকবে বলে সংস্থাটি মনে করে। কিন্তু প্রজ্ঞাপনের ১০ দিন অতিবাহিত হলেও বাজারে পেঁয়াজের ঝাঁজ রয়েই গেছে।
বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা আর আমদানি করা পেঁয়াজ ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হিমাগার পর্যায়ে আট মাসে আলুর দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ-সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে। নিত্যপণ্যের বাজার পরিস্থিতি ও সরবরাহব্যবস্থা তদারক ও পর্যালোচনা করতে গত ৭ অক্টোবর থেকে জেলা পর্যায়ে ১০ সদস্যের বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করছে।
অভিযোগ উঠেছে, অনেক ব্যবসায়ী আমদানির সুযোগ পেয়েও সমন্বয়হীনতার কারণে কিছু পণ্য আমদানি করতে পারেননি। আমদানি বাড়ানোর জন্য সরকার বিভিন্নমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করলেও তা সেভাবে বাড়েনি। ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও ডিম পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রজ্ঞাপন জারি করায় ব্যবসায়ীরা আমদানিতে উৎসাহ হারাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার কয়েক দফায় বাড়িয়েছে এবং কিছু নিত্যপণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো হয়েছে। তার পরও নিত্যপণ্যের দাম অনেক বেশি। খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ওএমএস কর্মসূচির আওতায় চাল ও আটা বিক্রি বাড়াতে হবে সরকারকে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ১০টি কৃষিপণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রি করছে। এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে ১৫ অক্টোবর থেকে। যা সংক্ষেপে কৃষি ওএমএস কর্মসূচি নামে পরিচিত। টিসিবির ট্রাকসেল ভর্তুকিমূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রি করছে। অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
নিত্যপণ্য বিক্রিতে টিসিবি ও খাদ্য অধিদপ্তরের কার্যক্রম আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এতে সাধারণ মানুষ সুফল পাবে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি যুগোপযোগী করতে হবে। শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা যাতে আমদানিতে উৎসাহী হয় সেদিকটায় নজর দিতে হবে। অর্থাৎ আমদানি প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে। বাজার তদারকি কমিটির কার্যক্রম শক্তিশালী করতে হবে। চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। বাজারে যারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দ্রব্যের দাম বাড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সরবরাহ ও দাম ঠিক রাখতে ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতার প্রয়োজন। বাজারে স্বস্তি ফেরাতে সরকারকে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, যাতে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে পৌঁছায়। অন্তর্র্বর্তী সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। সেসব উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন হোক, সেটিই কাম্য।

নতুন সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনারের শপথ কাল

কাজির বাজার ডেস্ক

নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য চার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আজ রোববার শপথ নেবেন। সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামীকাল রোববার বেলা দেড়টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের শপথ অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ শপথ পাঠ করাবেন।
বৃহস্পতিবার সাবেক সচিব এএমএম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে আরো চার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। পাঁচ বছরের জন্য নিয়োগ পাওয়া এ কমিশনের ওপর থাকবে পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভার। নতুন কমিশনে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে থাকছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব তহমিদা আহমদ ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। সার্চ কমিটির প্রস্তাব করা নামের তালিকা থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ পাঁচজনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বেছে নেন।