শহীদ সাংবাদিক তুরাবের বাসায় বিভাগীয় কমিশনার হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত দৈনিক জালালাবাদ এর স্টাফ রিপোর্টার শহীদ এ টি এম তুরাবের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানাতে বুধবার বিকেল ৪টায় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দিকী তার বাসায় যান। এ সময় তার সাথে ছিলেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার দেবজিত সিংহ, সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার।
এ সময় দৈনিক জালালাবাদ সম্পাদক শহীদ তুরাব পরিবারের প্রতি সহমর্মিতার জন্য বিভাগীয় কমিশনারসহ সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, তুরাব পরিবার, তাঁর সহকর্মী ও সিলেটের মানুষ সেদিনই খুশি হবে যেদিন তুরাব হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হবে। তিনি তুরাব হত্যাকান্ডকে টার্গেট কিলিং আখ্যায়িত করে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে দ্রæত বিচারের দাবী জানান।
এ সময় শহীদ তুরাবের বড় ভাই এ এ এম আজরফ জাবুর ও তার সহকর্মী অন্যান্য সাংবাদিক কোর্ট পয়েন্টকে আনুষ্ঠানিকভাবে তুরাব চত্বর ঘোষণা এবং বিয়ানীবাজার সদরে তার স্মৃতি রক্ষার্থে তার বাড়ির সামনে তুরাব চত্বর বাস্তবায়নের আহবান জানান।
বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দিকী তুরাবের হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়ে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। বিভাগীয় কমিশনার শহীদ তুরাবের স্মৃতিরক্ষায় সিলেট ও বিয়ানীবাজারে পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি এ সময় শহীদ এ টি এম তুরাবের বড় ভাই এ এ এম আজরফ জাবুর এর কাছে ১ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে দৈনিক জালালাবাদ এর স্টাফ ফটোগ্রাফার হুমায়ুন কবির লিটন ও সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

হবিগঞ্জে জামায়াত কর্মীকে কুপিয়ে আহত

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা

হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা মামলার বাদী জামায়াতকর্মী মোহাম্মদ মুশাহিদকে কুপিয়ে আহত করেছে মামলার আসামি আওয়ামী লীগ কর্মীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরতলির আলমপুর এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বানিয়াচং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আউয়াল।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হয়েছে মর্মে গত ৮ সেপ্টেম্বর জামায়াতকর্মী বানিয়াচং উপজেলার আলমপুর গ্রামের কাজী মুশাহিদ বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের ৫৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কয়েকজন আসামি তাকে ধরে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে আটকে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
আহত মুশাহিদ গণমাধ্যমকে বলেন, আন্দোলনে হামলার মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আসামিরা আমাকে কুপিয়ে আহত করে। এ ঘটনায় আমার স্ত্রীও আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জ পৌর জামায়াতের আমির আতিকুল ইসলাম সোহাগ জানান, আহত মুশাহিদ জামায়াতের কর্মী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেন তিনি। তখন তিনিও আহত হয়েছেন। মূলত মামলার বাদী হওয়ার কারণে তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।
বানিয়াচং থানার এসআই আব্দুল আউয়াল বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জকিগঞ্জে দু’গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত

জকিগঞ্জ সংবাদদাতা

জকিগঞ্জে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি সোমবার ও মঙ্গলবার দুই দফায় উপজেলার কালিগঞ্জ বাজারে ঘটেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্যাটারি চালিত (টমটম) গাড়ির ধাক্কা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার রাতে মানিকপুর ইউপির খাসেরা ও মাতারগ্রামের লোকজনের মধ্যে প্রথমে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে উভয়পক্ষের অন্তত ৪০-৫০ জন আহত হন। সংর্ঘষের খবর পেয়ে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে ঘটনাটি আপসে সমাধান করার উদ্যোগ নেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এ নিয়ে মঙ্গলবার রাতে মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদে দুটি গ্রামের লোকজনের মধ্যে আপস বৈঠক শুরু হয়। বৈঠক চলাকালে আবারও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে দুটি গ্রামের লোকজন লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু করেন। দ্বিতীয় দফার সংর্ঘষে ইটপাটকেলের আঘাতে উভয়পক্ষের আরো প্রায় ৩৫-৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পরপরই বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয় যায়। সংঘর্ষ চলাকালে ব্যাটারি চালিত কয়েকটি ব্যাটারি চালিত (টমটম) গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আহতদের নাম তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত ১১ টায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংর্ঘষ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।
জকিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) এস.এম মাহমুদ হোসেন রিপন বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুদিন সংর্ঘষে জড়ায় মাতারগ্রাম ও খাসেরা গ্রামের লোকজন। সোমবার রাতের ঘটনা আপসে নিস্পত্তি করার জন্য মঙ্গলবার বৈঠক শুরুর পর আবার সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর ও পুলিশের একটি টিম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকাবাসীর সবাই দায়িত্বশীল হতে তিনি অনুরোধ জানান।

সেনাবাহিনী কতদিন মাঠে থাকবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে সরকার

কাজির বাজার ডেস্ক

বর্তমান পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী কতদিন মাঠে থাকবে, অন্তর্র্বর্তী সরকারই তা নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছে সেনা সদর। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ঢাকা সেনানিবাসে ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় মোতায়েন করা সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত সংবাদ সম্মেলনে মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান এই কথা বলেন।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী প্রশাসনকে ৬০ দিন সহায়তা করতে এই তথ্যটি সঠিক নয়। ৬০ দিনের জন্য নির্বাহী ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কত দিন থাকব এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। কারণ সেনাবাহিনী মোতায়েন হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে, সরকারই এটা নির্ধারণ করবে কত দিন মোতায়েন থাকা প্রয়োজন।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মানবাধিকার লংঘন বা বিচারবহিভর্‚ত হত্যা বন্ধে সেনাবাহিনী ‘অত্যন্ত সচেতন’ উল্লেখ করে কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান বলেন, এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকে নির্দিষ্ট আদেশ রয়েছে, সেনাবাহিনী যে কোনো পরিস্থিতিতে তা প্রতিরোধে করবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা রয়েছে এই ধরনের (মানবাধিকার লঙ্ঘন) কোনো যেন ঘটতে না দেই। যে ঘটনাগুলো ঘটছে আপনারা সেগুলো জানতে পারছেন। এর বাইরে আমাদের কার্যক্রমের কারণে কতগুলো পরিস্থিতিতে এই ধরনের কোনো কিছু প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে, এটা হয়তো অনেক সময় জনসম্মুখে আসে না।
এই সেনা সদস্য বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টরে এ পর্যন্ত ছয়শর বেশি আনরেস্ট হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো ভায়োলেন্ট ছিল। অন্যান্য বাহিনীর সহায়তা নিয়ে এগুলো যদি সময়মত প্রতিরোধ বা শান্ত করার ব্যবস্থা না করা হত, তাহলে অনেক বেশি ঘটনা ঘটতে পারত।
সেনা সদস্যরা এক ব্যক্তিকে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন- এমন একটি ভিডিওর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, পরিস্থিতির প্রয়োজনে অনেক কিছু করতে হয়, তবে সেনাবাহিনী টার্গেট করে কাউকে মেরেছে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পুলিশের কাছে অপরাধের যেসব তথ্য থাকে, সেগুলো নিয়েও সেনাবাহিনী কাজ করছে বলে জানান এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি দাবি করেন, সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পাওয়ার পর অপরাধের সংখ্যা ‘অনেক কমেছে’।
তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়নি, তবে যতটুকু আশা করা গেছে সে অনুযায়ী উন্নতি হয়নি। পুলিশ বাহিনী ধীরে ধীরে তাদের কার্যক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে। অন্যান্য বাহিনীর সহায়তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, গুলশানে একজন মেজরের সঙ্গে একজন পুলিশ কর্মকর্তার ঘটনাটি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ থেকে হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক ‘খুবই ভালো’।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্যই সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।

কানাইঘাটে শ্বশুর বাড়ির গাছের ডাল থেকে লাশ উদ্ধার

কানাইঘাট সংবাদদাতা

সিলেটের কানাইঘাটে শ্বশুর বাড়িতে গাছের ডালে ঝুলন্ত অবস্থায় জুবায়ের আহমদ (৫০) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে উপজেলার বড়চতুল ইউনিয়নের চতুল সরুফৌদ গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত জুবায়ের আহমদ পার্শ্ববর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় তিন বছর আগে নিহত জুবায়ের আহমদের সঙ্গে কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল ইউনিয়নের সরুফৌদ গ্রামের হুসন আহমদ ওরফে ফেড়াইর মেয়ের বিয়ে হয়। বুধবার ভোরে ফজরের নামাজের ওজু করতে গেলে জুবায়েরের শাশুড়ি একটি গাছের ডালের সঙ্গে জামাইয়ের ঝুলন্ত মরদেহ দেখে বাড়ির লোকজনকে জানান। পরে এলাকাবাসী পুলিশকে জানালে তারা লাশ উদ্ধার করে।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আউয়াল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।

হবিগঞ্জে পাগলা কুকুরের কামড়ে ১৫০ জন আহত

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা

হবিগঞ্জ শহরে এক পাগলা কুকুরের কামড়ে দেড় শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও রয়েছে। গুরুতর আহত অন্তত ২০ জনকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জ শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে একটি পাগলা কুকুরকে সড়কের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়াতে দেখা যায়। কুকুরটি সামনে যাকে পেয়েছে, তাকেই কামড়াতে থাকে। এভাবে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরের নানা স্থানে দেড় শতাধিক মানুষকে কামড়ায় কুকুরটি।
এ তথ্য নিশ্চিত করে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বুধবার সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত কুকুরের কামড়ে আহত ১৫০ জনকে তারা চিকিৎসা ও টিকা দিয়েছেন। গুরুতর আহত ২০ জন ভর্তি হয়েছেন।
দুপুর ১২টার দিকে শহরের মাতৃছায়া কিন্ডারগার্টেনে সন্তানকে নিতে আসেন অভিভাবক অর্জিত দাশ (৪০)। প্রতিষ্ঠানটির গেটের কাছে যাওয়ামাত্রই হঠাৎ কুকুর তার হাঁটুতে কামড়াতে থাকে। তার পাশে থাকা অপর এক অভিভাবককেও একইভাবে কামড় দেয় কুকুরটি। একইভাবে শহরের পৌর বিপণির সামনে রিকশা থেকে নেমে হেঁটে বাসায় যাচ্ছিলেন জয়ন্তী দাস নামের এক নারী। কিছু বোঝার আগেই কুকুরটি তার পায়ে কামড়ে ধরে। এ সময় এক ব্যবসায়ী কুকুরটি ছাড়াতে লাঠি নিয়ে এগিয়ে এলে কুকুরটি ওই ব্যক্তির ঘাড় কামড়ে ধরে। এভাবে শহরের ডাকঘর, বাণিজ্যিক এলাকা, পুরান মুন্সেফ, টাউন হল সড়ক, সিনেমা হল রোডসহ শহরে বিভিন্ন স্থানে তাÐব চালায় কুকুরটি। শহরের ১৫০ জনকে কামড়ানোর তথ্য পাওয়া গেছে।
শহরের মাতৃছায়া কিন্ডারগার্টেনের পরিচালক বন্ধুমঙ্গল রায় বলেন, দুপুর ১২টার দিকে আকস্মিক পাগলা কুকুরটি তাদের স্কুলে ঢুকে পড়ে। এ সময় স্কুলের ভেতরে দুজন অভিভাবককে কামড় দেয়। তখন স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ভয়ে শ্রেণিকক্ষের দরজা বন্ধ করে নিজেদের নিরাপদ রাখতে সক্ষম হন। পরে পৌরসভার লোকজন খবর পেয়ে স্কুলে আসেন। প্রায় ৩০ মিনিট চেষ্টার পর লোকজন কুকুরটিকে হত্যা করেন।

জগন্নাথপুরে সংঘর্ষে নিহত হওয়ার ঘটনায় চারজন গ্রেফতার

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ফেসবুক পোস্ট নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত নিহত পক্ষ কর্তৃক চিহিৃত করা ৪ জন সন্দেহভাজন আসামীকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গত ১২ নভেম্বর মঙ্গলবার জগন্নাথপুর উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বাগময়না তাজপুর গ্রামে রণসাজে সজ্জিত হয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে সুজাত মিয়া নামের এক বৃদ্ধ নিহত সহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ আহত হন।
এ ঘটনায় জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান আকন্দ এর দিকে-নির্দেশনায় থানার এসআই রফিজুল মিয়া ও এসআই সাকিব হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ দল মঙ্গলবার রাতেই অভিযান চালিয়ে ৪ জন সন্দেহভাজন আসামী গ্রেফতার করেন। সংঘর্ষে বৃদ্ধ সুজাত মিয়া হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে নিহত পক্ষ কর্তৃক চিহিৃতকৃত ওই ৪ সন্দেহভাজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বাগময়না তাজপুর গ্রামের মৃত আবুল বশরের ছেলে জামিল মিয়া (২২), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রিপন মিয়া (৪০), মৃত আঃ মোনাফের ছেলে আনসার মিয়া (৭০) ও আঃ আহাদের ছেলে শাহ আলম (১৯)। ১৩ নভেম্বর বুধবার ধৃত আসামীদের ৫৪ ধারায় সুনামগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে থানা সূত্র নিশ্চিত করেছেন।

চুনারুঘাটে ভুয়া আদেশনামায় বালুমহাল ইজারা নেয়ার চেষ্টায় আটক ১

চুনারুঘাট সংবাদদাতা

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার একটি চা-বাগানের ২০ একর সিলিকা বালুমহাল মন্ত্রণালয় থেকে ইজারা এনেছেনÑএমন ভুয়া আদেশনামা জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দিয়ে আটক হয়েছেন দুলাল মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক। আটক ওই ব্যক্তির বাড়ি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ইনাতাবাজ গ্রামে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার চন্দ্রিছড়া চা-বাগান এলাকায় অবস্থিত চÐিছড়া টিজি ও রামগঙ্গা সিলিকা বালুমহালের ২০ একর ভ‚মি মেসার্স সালমান এন্টারপ্রাইজ বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে ইজারা নিয়েছেনÑমন্ত্রণালয়ের উপসচিব দীপক কুমার চক্রবর্তীর স্বাক্ষরিত এমন একটি আদেশনামা প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী দুলাল মিয়া মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আরও তিন ব্যক্তি।
চিঠি পাওয়ার পর হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফরিদুর রহমানের সন্দেহ হয়। তিনি বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে আদেশনামার কপিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠান। পরে সেখান থেকে মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব বেগম সায়মা আক্তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, এ ধরনের কোনো আদেশ মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়নি। পরে জেলা প্রশাসক দুলাল মিয়াকে আটক করেন। খবর দেওয়া হয় হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা-পুলিশকে। সন্ধ্যা ৭ টায় আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদেশনামা জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ এনে হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা করা হয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। ঘটনার সময় দুলাল মিয়ার সঙ্গে থাকা অপর তিন ব্যক্তি আটক হওয়ার ভয়ে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে পালিয়ে যান।
দুলাল মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আমি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন দালালকে ৫০ লাখ টাকা দিয়েছিলাম মন্ত্রণালয় থেকে ইজারার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে। সে আমাকে এ ইজারা আদেশনামাটি দিয়েছে। এটি ভুয়া কি না, তা জানি না।
হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) প্রিয়াঙ্কা পাল গণমাধ্যমকে বলেন, যে সিলিকা বালুমহালটি মন্ত্রণালয় থেকে ইজারা আনার দাবি করা হয়, প্রকৃতপক্ষে এ বালুমহাল নিয়ে আদালতে মামলা রয়েছে। এ বালুমহাল ইজারা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
জেলা প্রশাসক ফরিদুর রহমান বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে এ সিলিকা বালুমহাল ইজারা দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া চা-বাগানের ভেতর এ ধরনের বালুমহাল ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধও আছে। আদেশনামা পাওয়ার পর সন্দেহ হলে তা মন্ত্রণালয়ে পাঠাই। সেখান থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়, এ ইজারা আদেশ সেখান থেকে দেওয়া হয়নি। আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেওয়া হয়েছে।

জৈন্তাপুর জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গা রেখে ফোর-লেন কাজ করার দাবীতে মানববন্ধন

মুরাদ হাসান, জৈন্তাপুর

সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ফোর-লেন উন্নিত করণ প্রকল্প কাজে বাজার এলাকার জনগুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা অক্ষত রেখে রাস্তা নির্মাণের দাবী জানানো হয়েছে। বুধবার বিকাল তিনটায় সিলেট তামাবিল-জাফলং মহাসড়কের ফোর-লেন উন্নিত করণ প্রকল্প কাজে দরবস্ত বাজার এলাকার জনগুরুত্বপুর্ণ স্থাপনা অক্ষত রেখে এবং বিকল্প জায়গা অধিগ্রহণ করার দাবী জানিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসি আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধন কর্মসুচি’তে বক্তারা বলেন, সিলেট তামাবিল জাফলং মহাসড়কের দরবস্ত বাজার এলাকা জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট এই তিন উপজেলার অতি জনগুরুত্বপুর্ণ একটি মিলন স্থল। তিন উপজেলার কেন্দ্রস্থল হিসাবে উত্তর সিলেটের মধ্যে পরিচিত দরবস্ত সেন্ট্রাল এলাকা। বিষয় বাজার এলাকায় ২ টি মসজিদ, শাহী ঈদগাহ, স্কুল ও খেলার মাঠ সহ অনেক সরকারি-বেসরকারি বহু স্থাপনা রয়েছে। এসব স্থাপনা অক্ষত রেখে এবং বিকল্প জায়গা অধিগ্রহণ করে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের ফোর-লেন উন্নিত করণ প্রকল্পের নিমার্ণ কাজ বাস্তবায়ন করার দাবি জানানো হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জয়নাল আবেদীন, দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাহারুল আলম বাহার, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জৈন্তাপুর উপজেলা শাখার আমীর গোলাম কিবরিয়া,, প্রবীণ মুরব্বি মাস্টার এনায়েত উল্লাহ, সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফ উদ্দিন লিটু, মাস্টার আতাউর রহমান, আব্দুল মালিক, জমিয়ত নেতা মাওলানা কবির আহমদ, দরবস্ত বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তাজুল ইসলাম, ইউপি সদস্য হাজী বশির উদ্দিন, আব্দুর রকিব, মুদছির আহমদ, দরবস্ত তরুন সংঘের সভাপতি নজরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী নূরুল আমিন, নাছির উদ্দিন, হাফিজ জয়নাল আবেদীন ডালিম সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধনে এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সেন্ট্রাল জৈন্তা উচ্চ বিদ্যালয়, দরবস্ত আল মনসুর মাদ্রাসা ও পাকড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সহ অত্র অঞ্চলের সবর্স্থরের জনগণ অংশগ্রহণ করেন।

ছাতকে পিতার সাথে অভিমান করে পুত্রের আত্মহত্যা

ছাতক প্রতিনিধি

ছাতকের পল্লীতে পিতার সাথে অভিমান করে শায়েখ নামের এক ব্যাক্তি আত্বহত্যা করেছে বলে জানা গেছে।
বুধবার সকালে লাকেশ্বর পশ্চিমপাড়া গ্রামে এঘটনা ঘটেছে। তিনি উপজেলার ছৈলা আফজলাবাদ ইউনিয়নের লাকেশ্বর পশ্চিমপাড়া গ্রামের হারিস আলীর পুত্র শায়েখ মিয়া (২৫)।
জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে পিতার কথার অবাধ্য হওয়ায় ছেলেকে বকাঝকা করে পিতা। পরিবারের সদস্যদের অগোচরে শায়েক ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ে। সকাল ৮টার দিকে খবর পাওয়া যায় শায়েখ মিয়া ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এক পর্যায়ে বাড়ি পাশে গাছের ডালে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় লোকজন। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হলে থানার উপপরিদর্শক এসআই শফিকুল ইসলাম শফিক ঘটনাস্থলে পৌছে সুরতহাল প্রতিবেদন লিপিবদ্ধ শেষে মরদেহটি উদ্ধার করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নোয়াব আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শুনেছি পিতার সাথে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কিবরিয়া হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।