ইয়াবা ও গাঁজাসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা

সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ থেকে বিপুল পরিমান ইয়াবা ও গাঁজাসহ ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেল, সন্ধ্যায় ও রাতে মধ্যনগর, চুনারুঘাট ও মাধবপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
র‌্যাব জানায়, মঙ্গলবার বিকেল ও রাতে অভিযান চালিয়ে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট ও মাধবপুর থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেট ও গাঁজাসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৯।
র‌্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র এএসপি মো. মশিহুর রহমান সোহেল জানান- গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৯ এর শায়েস্তাগঞ্জ ক্যাম্পের একটি দল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চুনারুঘাট থানাধীন চন্দনা ধলাইপাড় এলাকা থেকে ১ হাজার ৯০০ পিস ইয়াবাসহ মো. কাজল (৪৫) নামের একজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত কাজল চন্দনা ধলাইপাড় এলাকার মৃত জহুর হোসেনের ছেলে। এদিকে শায়েস্তাগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মাধবপুর বাজার থেকে ১০ কেজি গাঁজাসহ ২ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার দিতপুর গ্রামের ইমরান শাহ’র ছেলে শাহিন (২২) ও ফেনী জেলার পশুরাম থানার মহেশপুরষ্করনী মো. হাছানের ছেলে ওমর ফারুক (২১)।
পরে পৃথক মামলা দায়েরপূর্বক গ্রেফতারকৃত ৩ জনকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
পুলিশ জানায়, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ৯২ পিস ইয়াবাসহ জাহাঙ্গীর আলম (১৯) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ওই মাদক ব্যবসায়ী উপজেলার বংশীকুÐা উত্তর ইউনিয়নের গোলগাঁও গ্রামের রবি মিয়ার ছেলে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার বংশীকুÐা উত্তর ইউনিয়নের ভোলাগঞ্জ সার্ব্বজনীন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ওই মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সজীব রহমান বলেন, গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে। বুধবার গ্রেফতারকৃতকে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।

বানিয়াচংয়ে বরখাস্তকৃত ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের বনিয়াচংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৯ জনকে হত্যা মামলার আসামী আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা সদরের দক্ষিণ পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান (সাময়িক বরখাস্ত) আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে উপজেলা সদরের বাশিয়াপাড়া মহল্লা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। আনোয়ার হোসেন ওই এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে। বানিয়াচং থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাত্র আন্দোলনে ৯ জন হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী আনোয়ার পলাতক ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
পুলিশ ও এলাকাসী জানায়, গত ৫ আগস্ট বেলা ১১টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাগরদিঘীর পশ্চিমপাড় ঈদগাহ মাঠ থেকে একটি মিছিল বের করে। গ্যানিংগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিণ শেষে মিছিলকারী ৪-৫ হাজার লোক বড়বাজার শহিদ মিনারে গিয়ে জড়ো হন। পরে তারা মিছিল নিয়ে থানার সামনে এলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় গুলিতে সাংবাদিকসহ ৯ আন্দোলনকারী নিহত হন। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা থানার উপ-পরিদর্শক সন্তোষ চৌধুরীকে পিটিয়ে হত্যা করেন।
নিহত ৯ জনের পরিবারের পক্ষ থেকে একজনের বাবা একটি এবং এসআই সন্তোষ হত্যাকাÐের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

গাজায় দৈনিক ৪২ শিশু হত্যা করেছে ইসরাইল

কাজির বাজার ডেস্ক

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসন ৪১০তম দিনে পৌঁছেছে। এই সময়ে বর্বর ইসরাইলি বাহিনী অন্তত ১৭, ০০০ ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করেছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ৪২ শিশুকে হত্যা করেছে ইসরাইল।
এই হত্যাকাÐ স্পষ্টতই একটি গণহত্যার উদাহরণ। যা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তায় পরিচালিত হয়েছে। ফিলিস্তিনের মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের ক্রমাগত হামলায় শিশুদের মৃত্যুর হার অত্যন্ত উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। প্রতিদিন গড়ে ৪২টি শিশু প্রাণ হারাচ্ছে, যা একটি চরম মানবিক বিপর্যয়।
এছাড়া গাজায় গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৪৩, ৯৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১, ০৪, ০৯২ জন।
এই গণহত্যা গাজার জনসংখ্যার ওপর এক গভীর মানবিক সংকট তৈরি করেছে।
অধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ইসরাইলি বাহিনী ধারাবাহিক বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে, যার প্রধান শিকার হচ্ছে বেসামরিক জনগণ, বিশেষত নারী ও শিশু।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বারবার মানবিক সহায়তা এবং যুদ্ধবিরতির আহŸান জানালেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি ঘটেনি।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা এবং প্রধান শক্তিগুলোর সমর্থনে এই সহিংসতা আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসরাইলি হামলার এই ধারা স্পষ্টতই আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং এটি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের শামিল। এতে গাজায় মানবিক সংকট ক্রমেই বাড়ছে। খাদ্য, পানি, বিদ্যুৎ এবং ওষুধের সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এর ফলে বেঁচে থাকা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়ার আহŸান জানিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এই নৃশংসতা বন্ধ করা এবং ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্ষা করা মানবিক দায়িত্ব’।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতা এবং প্রভাবশালী দেশগুলোর রাজনৈতিক সমর্থন ইসরাইলকে আরও আগ্রাসী করে তুলছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। সূত্র: ইরনা

নামছে সেনা, ফিরছে ২২৫ বছর পুরনো ‘ভিনগ্রহী আইন’

কাজির বাজার ডেস্ক

আমেরিকায় সদ্যসমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী বছরের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে প্রবেশের কথা রয়েছে তাঁর। তবে প্রসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করার পর থেকেই একের পর এক সিদ্ধান্তের কথা জানাচ্ছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প সোমবার নিশ্চিত করেছেন যে, সীমান্ত নিরাপত্তায় একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছেন। পাশাপাশি, আমেরিকায় অবৈধ শরনার্থীদের ফেরত পাঠানোর জন্য আমেরিকার সেনাকে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।
সম্প্রতি আমেরিকার ধনকুবের ইলন মাস্ক এবং ভারতীয় বংশো™‚¢ত শিল্পপতি বিবেক রামস্বামীকে নিয়ে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ বা ‘ডজ’ নামে একটি মন্ত্রক চালু করার ঘোষণা করেছেন তিনি। এই নিয়ে আমেরিকার রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই হইচই পড়েছে। তবে সম্প্রতি ট্রাম্প আরও একটি ঘোষণা করেছেন, যা আলোড়ন ফেলেছে আমেরিকা-সহ তার পড়শি দেশগুলির রাজনীতিতে। কী সেই ঘোষণা?
বিনা নথিতে আমেরিকায় শরণার্থী সমস্যা নিয়ে উদ্বেগের কথা নির্বাচনী প্রচারে নেমে বার বার শোনা গিয়েছিল ট্রাম্পের কণ্ঠে। বলা ভালো, আমেরিকায় অবৈধ ভাবে শরণার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করার প্রতিশ্রæতিই ছিল তাঁর নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম ‘ট্রাম্প-কার্ড’। ট্রাম্পের দাবি, জো বাইডেন সরকারের আমলে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ ভাবে আমেরিকায় প্রবেশ করেছেন। একই সঙ্গে ওই লক্ষ লক্ষ অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর এবং মেক্সিকো সীমান্ত স্থিতিশীল করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে নতুন ঘোষণার পরে ট্রাম্প তাঁর সেই প্রতিশ্রæতি পূরণের পথে এক ধাপ এগোলেন বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। সম্প্রতি সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ আমেরিকার এক জন রক্ষণশীল সমাজকর্মী পোস্ট করেন যে, আমেরিকার নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার জন্য প্রস্তুত এবং একটি গণ নির্বাসন কর্মসূচির জন্য সামরিক শক্তি ব্যবহার করবেন।
সেই পোস্টেই ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই কথা সত্যি। সম্মতিসূচক মন্তব্য হিসাবে লেখেন ‘ইয়েস’। আর তার পর থেকেই জল্পনা তৈরি হয়েছে।

মুজিববর্ষে খরচ ১২শ’ কোটির বেশি

কাজির বাজার ডেস্ক

শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ বা মুজিববর্ষ উদযাপনের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, সেটি বাতিল করেছে অন্তর্র্বর্তী সরকার। বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।
জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মুজিববর্ষ পালনের বিষয়টি উঠে আসে। সেখানে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও আওতাধীন দপ্তর/সংস্থা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় সংসদ, বাংলাদেশের মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মোট এক হাজার ২৬১ কোটি পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় সম্পর্কে উপদেষ্টা পরিষদ অবহিত হন। শফিকুল আলম বলেন, মুজিববর্ষকে ঘিরে একটা উন্মাদনা হয়েছে। মুজিববর্ষে কি ধরনের কাজ হয়েছে, কত টাকা অপচয় হয়েছে সেটা নিয়ে ডকুমেন্ট করার কথা উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়েছে। মুজিববর্ষের নামে কোন মন্ত্রণালয় কত টাকা খরচ করেছে তা নিয়ে ডকুমেন্টেশন হবে। মুজিববর্ষের নামে কোন কোন মন্ত্রণালয় কী কী খাতে কত টাকা অপচয় করেছে তার একটা তালিকা করা হবে। এর আগে গত ৭ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম জানান, শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকীর নামে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার মুজিববর্ষ নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করে। এ কর্মসূচির নামে রাষ্ট্রের টাকা ব্যাপক অপচয় করা হয়। কোন মন্ত্রণালয় এই কর্মসূচির নামে কত টাকা খরচ করেছে তার একটি ডুকমেন্টেশন করা হবে।

মাধবপুর সীমান্তে লক্ষাধিক টাকাসহ ৫ জন আটক

মাধবপুর সংবাদদাতা

হবিগঞ্জের মাধবপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় নারীসহ ৫ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে নগদ ১ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়। মঙ্গলবার ২৫ বিজিবি সরাইল ব্যাটালিয়ন থেকে তাদের মাধবপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিবনগর উপজেলার কৃষ্ণধন দাসের ছেলে কামদেব দাস (৪৫), হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার মনিন্দ দাসের মেয়ে মায়া রাণী দাস (৪৫), তাদের মেয়ে মনিকা রাণী দাস (১৯), হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রমেশ দাসের মেয়ে স্বপ্ন রাণী দাস (৩০) ও কিশোরগঞ্জের গৌরাঙ্গ দাসের ছেলে সুকেন দাস (১৯)। বিজিবির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আটক ৫ জন ভারতের আগরতলায় কাজের জন্য যাচ্ছিলেন। মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর এলাকা দিয়ে পাসপোর্ট ছাড়া সীমান্ত অতিক্রম করার সময় বিজিবি-২৫ ব্যাটালিয়নের একটি দল বাংলাদেশের ১০ গজ অভ্যন্তর থেকে তাদের আটক করে।
মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আটকদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

বিচারের মুখোমুখি করতে হাসিনাকে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে ভারতকে -ড. ইউনূস

কাজির বাজার ডেস্ক

ক্ষমতা ছেড়ে ভারত পালিয়ে যাওয়া সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক কর্মকাÐ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বিচারের মুখোমুখি করতে হাসিনাকে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে ভারতকে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, হাসিনাকে ফিরিয়ে না দিলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে খুব একটা সুখের সম্পর্ক তৈরি হবে না। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগকে আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতার সুযোগ দেওয়া হবে কিনা, সে প্রশ্নেও কথা বলেছেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ। সোমবার সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দেখা না হওয়া নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, হ্যাঁ, এটি এখনও ঘটেনি। আমি যখন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে গিয়েছি, তখন মোদি সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন। আমি বাকুতে জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলাম, কিন্তু মোদি সেখানে ছিলেন না, বিমসটেক (থাইল্যান্ডে) বাতিল করা হয়েছে এবং আমরা কেউই কমনওয়েলথ বৈঠকে যায়নি। কিন্তু তার মানে এই নয় যেÑ আমরা দেখা করব না। আমরা শুধু প্রতিবেশী নই, ইতিহাস আমাদের একত্র করেছে। ভ‚গোল আমাদের একত্রিত করেছে। ভাষাগত সম্পর্ক আমাদের একত্রিত করেছে। সাংস্কৃতিক যোগসূত্র আমাদের একত্রিত করে। প্রথম দিন থেকেই আমি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার প্রস্তাব দিয়েছি। অকার্যকর গোষ্ঠী হতে হবে কেন? এমনকি আমি পরামর্শ দিয়েছিলাম যে, সার্ক নেতারা নিউইয়র্কে মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও যেন বৈঠক করতে পারেন।
ভারত ও বাংলাদেশ এখন বিমসটেক, বিবিআইএন-এ সহযোগিতা করছে। তাহলে সার্ক কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সার্ক নয় কেন? আমরা যত বেশি বন্ধু এবং সম্পর্ক তৈরি করতে পারি, ততো ভাল। সার্ককে চলতেই হবে… এমন হওয়া উচিত নয় যে শুধুমাত্র দুই দেশের (ভারত ও পাকিস্তান) মধ্যে সম্পর্কের কারণে পুরো গোষ্ঠীটি অদৃশ্য হয়ে যায়। আমরা একটি রেজুলেশন পাস করতে পারি, ভারত-পাকিস্তানের যেকোনও ইস্যুকে এজেন্ডা থেকে স্থগিত করতে পারি, কিন্তু সার্ককে শেষ করতে পারি না।
সন্ত্রাসবাদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সার্ক এর কর্মকাÐ স্থগিত করতে ২০১৬ সালে ভারতকে সমর্থন করা কি বাংলাদেশের জন্য ভুল ছিল কিনা এমন প্রশ্নে জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা যদি এমন শর্ত সামনে রাখি, তাহলে কোনো সম্পর্কই চলবে না। দুই সদস্য দেশের সম্পর্কের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সব দেশকে কেন ভুগতে হবে?

 

হয়রানিমূলক মামলা ঠেকাতে নতুন চিন্তা

কাজির বাজার ডেস্ক

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় হয়রানিমূলক মামলার প্রতিকারে নতুন চিন্তার কথা জানালেন অন্তর্র্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি জানিয়েছেন, ডিসি, এসপি, জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে জেলা পর্যায়ে কোনো কমিটি করা যায় কি না, সেই চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এই কমিটি মামলার প্রাথমিক তথ্যবিবরণী (এফআইআর) করার আগে যাচাই করে দেবে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা এ কথা জানিয়েছেন। ‘অন্তর্র্বর্তী সরকারের ১০০ দিন: আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে আইন মন্ত্রণালয়ের বিগত ১০০ দিনের কর্মকাÐ তুলে ধরেন তিনি।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মামলা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে পূর্বশত্রæতা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করা এবং চাঁদাবাজি ও হয়রানি করতেও অনেককে এসব মামলায় আসামি করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলায় ‘ইচ্ছেমতো’ আসামি করা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।
আইন উপদেষ্টা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, হয়রানিমূলক মামলা নিয়ে তাঁরাও বিব্রত। এ নিয়ে নানা রকম প্রতিকার ব্যবস্থার কথা চিন্তা করা হয়েছে। একবার সিদ্ধান্ত হলো ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে পুলিশকে একটি ক্ষমতা দেওয়া হোক যে তারা এফআইআর করার আগে একটি প্রাথমিক তদন্ত করবেন। তখন বিভিন্ন পক্ষ থেকে বলা হলো, এটা দেওয়া হলে পুলিশকে দ্বিগুণ স্বেচ্ছাচারিতা করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, এখন যেটা চিন্তা করা হচ্ছে, সেটা হলো পুলিশ সুপার (এসপি), জেলা প্রশাসক (ডিসি), জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাÑতাঁদের নিয়ে জেলা পর্যায়ে কোনো কমিটি করা যায় কি না। এ ধরনের একটা রূপরেখা তৈরি করা যায় কি না যে মামলার এফআইআর করার আগে এই কমিটি যাচাই করে দেবে।
এটা কেবল চিন্তা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, এই নিয়ে দু-একজন আইনবিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেছেন। বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, তাদের কোনো প্রস্তাব থাকলে সেটা দিক।
আসিফ নজরুল বলেন, আজ যাঁরা হয়রানিমূলক, মিথ্যা ও বাণিজ্যমূলক মামলা করছেন, কাউকে কাউকে নাকি হুমকিও দেওয়া হচ্ছে যে টাকা না দিলে মামলা করা হবে। তিনি বলেন, ‘আপনারা (হয়রানিমূলক মামলাকারী) মনে রাখেন, আমি যদি এই মন্ত্রণালয়ে থাকি, আপনাদের কীভাবে শাস্তি দেওয়া যায়, সেটির আইন খুঁজে বের করব।’
এ ধরনের মামলা নিয়ে সোমবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ভুক্তভোগী ব্যক্তি যদি মামলা করেন, তাহলে তাঁকে মানা করা যায় না উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেছিলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই, দ্রæত তদন্ত করে তাঁদের নাম বাদ দিতে বলা হয়েছে। পুলিশকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১২ নভেম্বর অন্তর্র্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও ঢালাও মামলার বিষয়ে কথা বলেছিলেন। দেশে ঢালাও মামলার প্রবণতা দেখা দিয়েছে, যা বিব্রতকর বলে উল্লেখ করে তিনি বলেছিলেন, আইনগতভাবে বিষয়টি কীভাবে সামাল (ট্যাকল) দেওয়া যায়, সে বিষয়ে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কাছে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।
মামলার বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গত ১৩ সেপ্টেম্বর এই নির্দেশনায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যাকাÐসহ অন্যান্য ঘটনা ঘিরে যেসব মামলা হচ্ছে, সেগুলোর প্রাথমিক তদন্তে কোনো আসামির সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে সঠিক তথ্য-প্রমাণ ছাড়া এসব মামলায় কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।
তবে এখনো এ ধরনের মামলা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি বলে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা রয়েছে।

বিএনপিতে সন্ত্রাসীদের কোন ঠাঁই নেই -কাইয়ুম চৌধুরী

সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেছেন, খুনী সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই। সে যেই হোক তাকে গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে, বিএনপিতে সন্ত্রাসীদের কোন ঠাঁই নেই।
সন্ত্রাসী হামলায় নিহত কানাইঘাট পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মুমিন সরকারের জানাজায় পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের ধনপুর বড় মসজিদ মাঠে শোকে মুহ্যমান এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি এসব বলেন।
তিনি বলেন, এই তরুণটি স্বপ্ন দেখেছিল, নিজেকে বিলীন করে দিয়ে দেশকে গড়ে তুলতে। ভালোবেসে রাজনীতির মত মহৎকর্মে নিয়োজিত করেছিল। জাতীয়তাবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজনীতি করেছে। আজ সে তরুণকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে আমরা জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দ্ব্যর্থহীন ভাবে বলতে চাই, এই হত্যাকারী যেই হোক এবং হত্যাকাÐের পেছনে ইন্ধন দাতা যদি কেউ থেকে থাকে তাকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে শক্ত পদক্ষেপ নেয়া হবে। আইনগত ভাবে যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা হয়। সে ব্যবস্থা করা হবে।
এসময় জানাজায় বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী ও আত্মীয় স্বজন সহ আরো উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আশিক উদ্দিন চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামী জেলা নায়েবে আমির আনোয়ার হোসেন খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম সিদ্দিকুর রহমান পাপলু ও কোহিনূর আহমেদ, কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুন রশীদ, কানাইঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক মাহবুব আলম সহ বিএনপি এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ, সহ অন্যান্য দলের নেতৃবৃন্দ।

ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ জুড়ীতে ৮ বাংলাদেশী আটক

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে আটজন বাংলাদেশীকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দু’জনকে লাঠিটিলা ও ছয়জনকে কচুরগুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বিজিবি জানায়, বিয়ানীবাজার ব্যাটালিয়ন ৫২ বিজিবি-এর অধীনস্থ লাঠিটিলা বিওপির নায়েব সুবেদার মো: আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টহলদল সীমান্ত পিলার ১৮০৫/এম এর কাছ দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের সময় দু’জনকে এবং বাকি ছয়জনকে কচুরগুল চা বাগানে অভিযান চালিয়ে আটক করে।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, মো: মোহাবব্বত আলী হাওলাদার (৬৫), মো: রবিউল হাওলাদার (১৯), মো: সেলিম মিয়া (৪০), মো: মহিম (২৬), মো: রাশেদ ইসলাম (৩৪), মো: আবু নাঈম (২৪), মো: মামুন (২৮) ও মো: আশরাফুল ইসলাম (৩৫)।
বিজিবি বিয়ানীবাজার ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান বলেন, ‘ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
জুড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মোরশেদুল আলম ভ‚ইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলা দিয়ে আসামিদের মৌলভীবাজার জেলহাজতে পাঠানো হচ্ছে।’