কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্যারিসের হামলাকারীদের একজনকে চিহ্নিত করেছে স্থানীয় তদন্তকারীরা। সন্দেহভাজন ওই হামলাকারীর নাম ওমর ইসমাইল মোস্তেফাই। সে ফ্রান্সেরই নাগরিক। শুক্রবার রাতে শহরের ছয়টি স্থানে চালানো ওই হামলায় কমপক্ষে ১২৯ জন নিহত এবং সাড়ে তিনশ আহত হয়েছেন।
স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এবং একজন ফরাসি পার্লামেন্ট সদস্যের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, ২৯ বছর বয়সী এই যুবক এর আগেও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল। এছাড়া সে চরমপন্থি আদর্শে উজ্জীবিত ছিল বলে কর্তৃপক্ষ আগেই জানতো।
তার আঙ্গুলের কয়েকটি খণ্ডাংশ পাওয়া যায় বাতাক্লঁ কনসার্ট হলে। ওই কনসার্ট হলেই শুক্রবার রাতে বন্দুক হামলা চালিয়েছিল তিন হামলাকারী। পরে পুলিশি অভিযান চলাকালে ওই আত্মঘাতী হামলাকারীরা বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিজেদেরকে উড়িয়ে দেয়।
এদিকে প্যারিস হামলার ঘটনায় মোস্তেফাইয়ের বাবা এবং ভাইকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তার বড় ভাই বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘এটা একেবারেই পাগলামি। আমি নিজেও ওই রাতে প্যারিসে ছিলাম। আমি দেখেছি, কি ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ ছিল এটা।’ মোস্তেফাই ২০১৪ সালে সিরিয়াতে গিয়েছিল কি না পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
প্যারিসের ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর কুরকুরনের বাসিন্দা মোস্তেফাই। ছোটখাটো অপরাধের ইতিহাস রয়েছে তার যদিও সে জেল খাটেনি কখনো। ২০১০ সাল থেকে সে চরমপন্থি আদর্শে উজ্জীবিত বলে নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর কাছে তথ্য আছে যদিও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কোনও তদন্তে তাকে অভিযুক্ত করা হয়নি কখনো।
মোস্তেফাইয়ের ভাই বলেছেন, পারিবারিক বিরোধের কারণে কয়েক বছর ধরে তার সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ ছিল না। মোস্তেফাই চরমপন্থী জেনে বিস্ময় প্রকাশ করেন তার ভাই। মোস্তেফাইরা ছয় ভাইবোন। এছাড়া তার নিজেরও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে বলে জানা গেছে। পরিবারকে নিয়ে একবার আলজেরিয়াতেও সফর করেছিল সে।
কৌঁসুলিরা বলছেন, সাতজন হামলাকারী কালাশনিকভ রাইফেল এবং বিষ্ফোরক ভর্তি বেল্ট পরিধান করে তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে হামলাগুলো চালিয়েছিল। অনেকে মনে করছেন, কয়েকজন হামলাকারী সম্ভবত হামলার পর পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। তদন্তকারীরা এখন এই হামলার সাথে সম্ভাব্য বেলজিয়াম সংযোগের সূত্র খুঁজছে। দেশটির ফরাসী সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তিন জনকে আটকও করেছে পুলিশ।
এদিকে প্যারিসের বাতাঁক্ল হলের সামনে একটি পরিত্যক্ত কালো রঙের ভক্সওয়াগন গাড়ি পাওয়া গেছে। গাড়িটিতে বেলজিয়ান নম্বর প্লেট সাঁটা রয়েছে। বেলজিয়ামে বসবাসরত একজন ফরাসী নাগরিক গাড়িটি ভাড়া করেছিল বলে তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন। ওই একই ব্যক্তি শনিবার আরো দুজন সঙ্গীকে নিয়ে অপর একটি গাড়িতে করে সীমান্ত পার হয়ে বেলজিয়াম ঢুকেছে বলেও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে এখন।
