জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
দীর্ঘ ছয় বছর পর আগামীকাল রবিবার জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রলীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ দিয়ে তাই নেতাকর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনা রিবাজ করছে। দলীয় নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন এনিয়ে চলছে নানা আলোচনা ও হিসেব নিকেশ। সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পর থেকে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে চলছে জোর লবিং। উপজেলা, জেলা এমনকি কেন্দ্র পর্যন্ত চলছে লবিং।
দলীয় সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের শেষ দিকে সর্বশেষ জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি তনুজ কান্তি দেব ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী উজ্জ্বল স্বাক্ষরিত মুজিবুর রহমান মুজিব কে সভাপতি ও কুতুব উদ্দিন জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি ইতিমধ্যে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের সবকটি ইউনিয়নে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন শেষ করে। বেশ কিছুদিন ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছিল। উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিবকে উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রস্তাবিত কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে বলে সিদ্ধান্ত নেয়ায় উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন নিয়ে তোরজোড় শুরু হয়। যার প্রেক্ষিতে কয়েক মাস পূর্বে স্থানীয় সংসদ সদস্যর সুপারিশ নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি সিদ্দিক আহমদের আশীর্বাদে জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহ সাহেদুর রহমান সাহেদকে সভাপতি ও পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাফরোজ ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা ছাত্রলীগের একটি কমিটি অনুমোদনের জন্য জেলায় পাঠানো হয়। নানা কারণে ওই সময় এ কমিটি অনুমোদন হয়নি। আগামী ২৬ এপ্রিল সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সিদ্দিক আহমদ, সন্মেলনের উদ্বোধন করবেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ফজলে রাব্বি স্মরণ ও সাধারণ সম্পাদক রফিক চৌধুরী।
সম্মেলনের দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পর থেকে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দেয়। পদ পদবী পেতে শুরু হয় জোর লবিং। ব্যানার ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও পোষ্টারে ছেয়ে যায় উপজেলার সর্বত্র। চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জোর প্রচারণার। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কমিটি গঠন নিয়ে দেখা দিয়েছে সংকট। বর্তমানে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে যারা রয়েছেন তাদের অনেকেরই ছাত্র নেই। কেউবা আবার বিবাহিত। আবার যাদের ছাত্রত্ব আছে তাদের নেতৃত্বের দুর্বলতা রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে কারা আসছেন ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বে এনিয়ে চলছে জোর আলোচনা।
নতুন ছাত্রলীগ কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন : উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহ সাহেদুর রহমান সাহেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ কান্তি রায় সানী, যুগ্ম সম্পাদক রুমেন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মুরাদ মিয়া, পৌর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাফরোজ ইসলাম, এছাড়াও শাহিনুর রহমান, সৈয়দ জিগর মিয়া, মঞ্জুরুল ইসলাম এর নাম শোনা যাচ্ছে। তন্মধ্যে শাহিনুর রহমান চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল গফুরের ছেলে। সে সিলেট করিম উল্যাহ মাকেটে মুঠোফোনের ব্যবসা করে। জিগর ও মঞ্জুরল সিলেট বসবাস করেন। তাদের সাথে জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকমীদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। সম্মেলনকে সামনে রেখে পদ পদবী পেতে আগ্রহী নেতাকর্মী ও তাদের সমর্থকরা পোষ্টার বিলবোর্ড ও মুঠোফোনে ফেসবুকে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের উপ-সম্পাদক আব্দুল মুকিত, সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সদস্য মাহবুবুর রহমান, জগন্নাথপুর ডিগ্রী কলেজ ছাত্রলীগ নেতা তোহা চৌধুরী, রানীগঞ্জ ইউনিয়ণ ছাত্রলীগ সভাপতি আজমল হোসেন মিঠু, সহ-সভাপতি হিবলু তালুকদার এর নাম শোনা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিব ও সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন জুয়েল বলেন, দীর্ঘ ছয় বছর দায়িত্ব পালনকালে উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা নতুন কমিটি গঠন করেছি। উপজেলা ছাত্রলীগের সন্মেলনকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আশা করছি সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে।
সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রফিক চৌধুরী বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে স্থানীয় সাংসদ অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান ও জেলার প্রবীণ রাজনীতিবীদ সিদ্দিক আহমদের পরামর্শ ক্রমে গঠনতন্ত্র মোতাবেক তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।