ছাতকে বিলের পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে ফসলী জমি

33

আতিকুর রহমান মাহমুদ, ছাতক থেকে :
ছাতকে দ্বিতীয় দফা কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। গত বুধবার রাতে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে কয়েকটি হাওরে বোরো ফসলের মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। শতাধিক কাঁচা ঘর-বাড়ী, বিদ্যালয় বিধ্বস্ত হয়েছে। বিদ্যুতের লাইন তছনছ হওয়ায় টানা ১২ ঘন্টা বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন ছিল পৌর শহর। কোন কোন এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। কালবৈশাখীর তান্ডবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ লাইনে গাছ-পালা উপরে পড়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ঝড়ে পাকা ধান মাটির সাথে মিশে গেছে। ছাতক সদর ইউনিয়নের তেরা বিলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে আশ পাশের ফসলী জমিতে ঢুকে পড়েছে। এতে তেরা বিল ও তিররাই-মুক্তিরগাঁও হাওরের বোরো  ফসল  তলিয়ে গেছে। এছাড়া মধুকুনী, মানসিনগর, রাতগাঁও, কাজিহাটা-নোয়াগাঁও, রুক্কা হাওরসহ আশপাশ এলাকার বোরো ফসল হয়ে পড়েছে হুমকির মুখে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হলে এসব হাওরের ফসলও তলিয়ে যাবার আশংকা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালিন শাকসবজির বাগানের সবজি ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বাগানের সবজি গাছ হয়ে গেছে লন্ডভন্ড। স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফুল আলম শেপীন জানান, চলতি মৌসুমে তেরা বিলে কোন বেরী বাঁধ দেয়া হয়নি। তেরা বিলসহ তার আশেপাশের হাওর গুলোর শতকরা ৯০ভাগ ধান পাকার উপযোগী হয়ে উঠার মুহূর্তে বুধবারের কালবৈশাখীর তান্ডবে তছনছ করে দিয়েছে এখানের কৃষকের স্বপ্ন। বিলের বৃদ্ধি পেয়ে হাওরের প্রবেশ করায় তেরা বিল ও মানসিনগর হাওরের সম্পূর্ন বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। তিররাই(ঝাই) এলাকার বাঁধ কেটে না দেয়া হলে আশপাশের হাওর গুলোর পাকা ধানও তলিয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বেশ কয়েকটি কাঁচা ঘর-বাড়ী বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেকের ঘরের চালা উড়িয়ে নেয়ায় রাত কাটাতে হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। এ অঞ্চলের পাকা বোরো ফসলের মারাত্মক ক্ষতিসাধন হয়েছে। শিলাবৃষ্টিতে শীষ থেকে ধান ঝরে পড়েছে। শ্রমিক সংকটের কারণে সময় মত ফসল কাটা সম্ভব হয়নি। ছোট-বড় গাছ-পালা উপড়ে পড়ে ভেঙ্গে পড়েছে স্বাভাবিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল হামিদ জানান, বুধবার রাতে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষতি হয়নি। শহর এলাকায় হালকা শিলাবৃষ্টি হলেও হাওরের ফসলী জমির ক্ষতি হয়নি বলে অনেকে জানান। গত ৯ এপ্রিল ভোরে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ে ৪শ’ ৬০ হেক্টর জমির বোরো ফসল আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ২শ’ ২১ হেক্টর পাকা বোরো ফসল সম্পূর্ণ রূপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আবাদকৃত ৪ হেক্টর জমির শাক-সবজিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।