গণমানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন হাফিজ মজুমদার এমপি ॥ সিলেটের শিক্ষার উন্নয়নে তিনি অনন্য অবদান রেখে চলেছেন

71

Hafiz Mozumdar Recieption-21-04বৃহত্তর সিলেটের গণমানুষের ভালবাসায় সিক্ত হলেন দেশবরেণ্য শিক্ষানুরাগী, শিল্পপতি, রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবী হাফিজ আহমদ মজুমদার।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর রিকাবীবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে তাঁকে দেয়া সবংর্ধনা অনুষ্ঠানে বসেছিল নগরীর শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি, সরকারী বেসরকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পেশাজীবী নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের মানুষের মিলনমেলা।
স্বনামখ্যাত শিক্ষানুরাগী, পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান, হাফিজ মজুমদার এডুকেশন ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মনোনীত হওয়ায় সর্বস্তরের সিলেটবাসীর পক্ষ থেকে এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
হাফিজ আহমদ মজুমদার গণসংবর্ধনা বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের আহবায়ক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. সালেহ উদ্দিন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বহু মাত্রিক প্রতিভার অধিকারী হাফিজ আহমদ মজুমদার একাধারে একজন শিল্প ও বাণিজ্য উদ্যোক্তা, কৃতি ব্যাংকার, একজন সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, একজন প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদ ও একজন বিশিষ্ট অর্থনীতি বিশ্লেষক। কিন্তু তার সব পরিচয় ছাপিয়ে একজন প্রকৃত মানবতাবাদী হিসেবে সিলেটসহ দেশবাসীর হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন হাফিজ আহমদ মজুমদার। সিলেটের শিক্ষার উন্নয়নে তিনি গত প্রায় তিন দশক ধরে অবদান রেখে চলেছেন তিনি। প্রচার বিমুখ এই মানুষটির হৃদয় জুড়ে সিলেটবাসীর উন্নয়ন ও তাদের প্রতি নির্মোহ ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার প্রতিদান তিনি পেয়েছেন শতগুণ। তিনি সিলেটবাসীর হৃদয়ের মণিকোটায় স্থান করে নিয়েছেন। গুণ কখনো চাপা থাকেনা। তার গুণের সৌরভে মোহিত হয়েই মহামান্য রাষ্ট্রপতি হাফিজ আহমদ মজুমদারকে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মত একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের মত গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছেন। সিলেটবাসীর একজন সুহৃদ হাফিজ আহমদ মজুমদার মার্যাদাপূর্ণ এই পদে আসীন হওয়ায় বৃহত্তর সিলেটের মানুষ গৌরবান্বিত হয়েছেন।
অধ্যাপিকা শামীমা চৌধুরীর সঞ্চালনায় গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাফিজ আহমদ মজুমদার গণসংবর্ধনা বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্যের নটিংহাম ও মানচেস্টার ইউনিভার্সিটির সাবেক অধ্যাপক, প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রফেসর ড. কবির চৌধুরী ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী। এসময় মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন হাফিজ আহমদ মজুমদারের সহধর্মীনি হাফছা মজুমদার।
সভাপতির বক্তব্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, সোনার হাতে সোনার কাঁকন- কে কার অলংকার- এই আপ্ত বাক্যটির মত হাফিজ আহমদ মজুমদারকে সংবর্ধনার মাধ্যমে সিলেটবাসী নিজেরাও সম্মানিত হয়েছেন। তিনি নিভৃতে দান করেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণার জন্য তিনি প্রতি বছর ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন, এটি অনেকেই জানেনা। সিলেটে শিক্ষার জন্য তিনি যে যুগান্তকারী অবদান রেখেছেন, তা একমাত্র প্রাচীন ভারতের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সাথে সমতূল্য। বিদ্যাসাগর যেভাবে ভারতবর্ষে আধুনিক শিক্ষার বিকাশ ঘটিয়েছেন হাফিজ মজুমদারও সিলেটে বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় নির্লোভ মানসিকতা নিয়ে কাজ করে চলেছেন।
সংবর্ধনা জবাবে হাফিজ আহমদ মজুমদার বলেন, সিলেটবাসী আমাকে যে ভালবাসায় আলিঙ্গন করেছেন, তাতে আমি অভিভূত-আপ্লুত। আমি একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমৃত্যু কাজ করেছি। তবে, শুধু আমি আমার অবস্থান থেকে সমাজ ও মানবতার কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশের সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বিশ্বাস করে রেডক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান পদের মত একটি গুরুত্ব দায়িত্ব দিয়েছেন। মানব্যর রাষ্ট্রপতি আমাকে এই পদে নিয়োগ দিয়ে আমার প্রতি তার আস্থা স্থাপন করেছেন। আমি তাদেরকে বলেছি, জীবনের শেষ লগ্নে এসে আমি এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমি আমার সাধ্যমত আর্ত মানবতার কল্যাণে কাজ করবো। রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি বিশ্বময় দুর্গত মানবতার জন্য আশার প্রদীপ। আমি মনে করি ¯্রষ্টার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের জন্য কাজ করার একটি সুযোগ আমার সামনে এসেছে।
সংবর্ধনা পরিষদের সদস্য সচিব, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, রেডক্রস ও রেডক্রিসেন্ট একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। বিশ্বময় এর ভাবমূর্তি হচ্ছে সেবার প্রতীক হিসেবে। এ ধরনের একটি আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশ প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে হাফিজ আহমদ মজমুদার সিলেটবাসীর জন্য অনন্য গৌরব বয়ে এনেছেন।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, হাফিজ আহমদ মজুমদার নাম বা খ্যাতির মোহে নয়, প্রকৃত মানবসেবার ব্রত নিয়ে নিভৃতে দান করে চলেছেন। বিশেষ করে বৃহত্তর সিলেটের শিক্ষার উন্নয়তে তিনি যে অবদান রেখে চলেছেন, তার জন্য সিলেটবাসী তার কাছে কৃতজ্ঞ। সংসদ সদস্য থাকাকালে তিনি সংসদে বৃহত্তর সিলেটের দাবীদাওয়ার নিয়ে যেভাবে কথা বলতেন, তেমনি বাজেট অধিবেশনে একজন দক্ষ অর্থনীতিবিদের মত জাতীয় উন্নয়নের বিষয়টিকে মূল্যায়ন করতেন।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. কবির এইচ চৌধুরী বলেন, সিলেটে শিক্ষাক্ষেত্রে একটি নীরব বিপ্লব সাধন করেছেন হাফিজ আহমদ মজুমদার। মাত্র ১৩ বছর আগে ৪০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল হাফিজ আহমদ মজুমদার শিক্ষা ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠান স্কলার্সহোম। এখন সিলেট নগরীতে স্কলার্সহোমের ৬টি ক্যাম্পাসে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী মান সম্পন্ন শিক্ষালাভের সুযোগ পাচ্ছে। এখন নগরীর প্রায় প্রতিটি ঘরে স্কলার্সহোমের কমপক্ষে একজন শিক্ষার্থী রয়েছে। এতদিন তিনি সিলেটের শিক্ষার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন, এবার তিনি রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ পাবেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. খলিলুর রহমান, সাবেক গণপরিষদ সদস্য এডভোকেট লুৎফুর রহমান, সাবেক এমপি সৈয়দা জেবুন্নো হক, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আব্দুল খালিক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জুবায়ের সিদ্দিকী, বিশ্ব জনসংখ্যা তহবিলের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. ওবায়দুর রব, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. কবির হোসেন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট আফতাব চৌধুরী, জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক লোকমান আহমদ, সাবেক  ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফের ডা. মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী, বিএমএ সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. রোকন উদ্দিন আহমদ, মদন মোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, সিলেট জেলা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট হুমায়ুন করিব বাবুল, গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, সিলেট জেলা বারের এডিশনাল পিপি এডভোকেট নিজাম উদ্দিন, সিলেট জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, পূবালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হেলাল আহমদ চৌধুরী, পরিচালক মনির উদ্দিন আহমদ, জিএম খায়রুল কবির, ডিজিএম আহমেদ এনায়েত মঞ্জুর, আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আব্দুল খালিক, বিজিত চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, কানাইঘাট পৌরসভার মেয়র লুৎফুর রহমান, সিলেট জেলা জাসদের সম্পাদক কে এ কিবরিয়া চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টি নেতা ড. নেসার আহমদ কায়সার, য্ক্তুরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক মিছবাহ জামাল, ডা. আজিজুর রহমান, জামিল আহমদ চৌধুরী, সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সিটি কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ, আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী, এডভোকেট আব্বাস উদ্দিন, মস্তাক আহমদ পলাশ, সংস্কৃতিকর্মী বিভাষ সেন যাদন, শামসুল বাসিত শেরো, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভবতোষ বর্মন রানা,বীর মুক্তিযোদ্ধা শোয়েব আহমদ চৌধুরী, শিশু সংগঠক অরূপ শ্যাম বাপ্পী, কাউন্সিলর সাইফুল আমিন বাকের, দৈনিক সিলেটের ডাক-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক দেওয়ান তৌফিক মজিদ লায়েক, এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া হেলাল, এডভোকেট মহব্বত খান, আনোয়ার হোসেন, খলিলুর রহমান, প্রমুখ। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি