সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বিদেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানী করতে হবে। প্রবাসীরা আমাদের সম্পদ; তাদের অর্জিত রেমিটেন্স আমাদের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে। দেশের উন্নয়ন রেখেছেন ব্যাপক অবদান।
তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ সুরমার আলমপুরস্থ বিভাগীয় কমিশনার সম্মেলন কক্ষে মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ব্র্যাক সিলেটের বিভাগীয় পর্যায়ে নিরাপদ শ্রম অভিবাসন বিষয়ে স্টেক হোল্ডারদের অংশ গ্রহণ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। অতিরিক্ত বিভাগীয় সার্বিক এমডি আল আমিনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ কামরুল আহসান।
কর্মশালায় ব্র্যাকের ধারনা পত্রে বলা হয় আমাদের দেশ থেকে প্রতি বছর কাজের খোজে কয়েক লাখ মানুষ বিদেশে যাচ্ছেন এবং তাদের প্রেরিত রেমিটেন্সের মাধ্যমে দেশ স্বনির্ভর হচ্ছে। এই যাত্রাটিতে প্রতিনিয়ত তারা প্রতিকুল পরিস্থিতির মুখোমুখি হন; ফলশ্র“তিতে আশানুরূপভাবে লাভবান হতে পারেন না। বাংলাদেশের অভিবাসী কর্মীদের অন্যতম মূল সমস্যা সঠিক তথ্য প্রাপ্তির অভাবে নিরাপদে বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকা। কর্মজীবী হিসেবে নিরাপদে বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবিবাসী কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা প্রায়শই ভোগান্তিতে পড়েন।
ধারণা পত্রে আরো বলেন মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম ব্র্র্যাক দেশের ৩৩টি জেলার অধীনে ১২৪টি উপজেলাতে সাফল্যের সাথে বিদেশগামী কর্মজীবী নারী ও পুরুষের সঠিক তথ্যের মাধ্যমে নিরাপদে অভিবাসন গ্রহণ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে। এই কার্যক্রমের সফলতার জন্য সরকারি বিভিন্ন বিভাগ, বেসরকারি সংস্থা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও মিডিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন। সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ব্র্যাক কর্ম এলাকার সকল উপজেলা ও জেলাগুলোতে স্থানীয় স্টেক হোল্ডারদের অংশগ্রহণে বেশ কিছু কর্মশালা সম্পন্ন করে। বিভাগীয় পর্যায়ের এ কর্মশালায় ধারণা পত্রে আরো বলা হয় তৃণমূল পর্যায়ে সম্পাদিত কর্মশালায় যে সকল সুপারিশ উঠে আসে যা বাস্তবায়নে সরকারের জাতীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারকের দৃষ্টি আকর্ষণ প্রয়োজন। আমরা মনেকরি অভিবাসীদের কল্যাণে সরকারের নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হলে তৃণমূলের পাশাপাশি আরো একটি বিভাগীয় কর্মশালা আয়োজনের প্রয়োজন। যেখানে বিভাগীয় পর্যায়ে আয়োজন, কর্মশালা শেষে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশমালা সরকারের পলিসি প্রণয়ন, বাস্তবায়ন যেন অভিবাসী বান্ধব নীতি, আইন প্রণয়ন, পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এছাড়া একর্মশালায় সুপারিশমালা অভিবাসীদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করবে। ফলে অভিবাসী, তাদের পরিবার তথা সমাজের সকল উপকৃত হবেন। ব্র্যাক প্রধান কার্যালয়ের ফিল্ড কো-অডিনের্টর মো. সাজ্জাদ হোসেনের সঞ্চলনায় শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা মো. আলমগীর হোসাইন। গীতা পাঠ করেন বিভাষ চন্দ্র তরফদার। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রধান কার্যালয়ের ফিল্ড কো-অডিনেটর মুশফিকা জাহান।
কর্মশালার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্র্যাক সিলেটের জেলা প্রতিনিধি বিভাষ চন্দ্র তরফদার। কর্মশালার উদ্বোধন শেষে শুরু হয় গ্র“প ডিস্কাশন। মূল প্রতিপাদ্যের উপর ৪ গ্র“পে বিভক্ত ডিসকাশন মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম বিষয়ে সুপারিশমালা উপস্থাপন করা হয়। গ্র“প ডিসকাশন ও উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন জেরা ম্যান পাওয়ার অফিসের সহকারী পরিচালক মীর কামরুল হোসনে, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডষ্ট্রির পরিচালক মো. লায়েছ উদ্দিন, বাংরাদেশ ওভারসিজ সেন্টারের নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুল আলম, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সিলেটের সিনিয়র প্রশিক্ষক মো. মনিরুল ইসলাম, সময় টেলিভিশনের সিলেট ব্যুরো প্রধান ইকরামুল কবির, দৈনিক সিলেটের ডাক’র সিনিয়র রিপোর্টার এম. আহমদ আলী, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সিলেটের উপ-ব্যবস্থাপক কবির আহমদ, ব্লাষ্ট সিলেট ইউনিটের প্রকল্প কর্মকর্তা এডভোকেট সত্যজিৎ কুমার, রাইজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, জামাল উদ্দিন ফয়সল, মো. ফাহিম সারওয়াত, ফিরোজা আক্তার, ছাইম উদ্দিন, মো. ইজাজুর রহমান ইজাজ প্রমুখ। কর্মশালার সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন ব্র্যাক সিলেটের সিনিয়র ফিল্ড কমিউনিকেটর শুভাশিষ দেবনাথ।
কর্মশালায় পাসপোর্ট প্রাপ্তি, ইমিগ্রেশনসহ অভিবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশ কমিশনার সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বিজ্ঞপ্তি