সত্যসন্ধানী গবেষক অধাপক মুহম্মদ আসাদ্দর আলীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার কেমুসাসের সাহিত্য আসর কক্ষে তাঁর জীবন ও কর্ম শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে কেমুসাসের সভাপতি প্রফেসর মো. আব্দুল আজিজ বলেন, সত্যিকারের একজন বিদ্বান ব্যক্তি ছিলেন অধ্যাপক আসাদ্দর আলী। অন্তত দু’টো পিএইচডি ডিগ্রি তাঁর প্রাপ্য ছিল। কিন্তু একাডেমিক জীবন না থাকায় তিনি তাঁর কাজের প্রকৃত মূল্যায়ন ও সম্মান পাননি। তিনি বলেন, মূলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলে গবেষণাসহ মৌলিক কর্মের যথাযথ স্বীকৃতি মিলে না। অধ্যাপক আসাদ্দর আলীর ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে উল্লেখ করে তাঁর সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের স্মৃতিচারণে বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনি কী করেন। তিনি বলেছিলেন, তেজারতি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেমুসাসের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মানিক। বক্তব্য রাখেন, কেমুসাসের সহসভাপতি আব্দুল হামিদ মানিক, গল্পকার জামান মাহবুব, দৈনিক কাজির বাজারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ সুজাত আলী, গল্পকার সেলিম আউয়াল, কবি কামাল তৈয়ব, কবি বাসিত ইবনে হাবিব। অধ্যাপক মুহম্মদ আসাদ্দর আলীর পরিচিতি পাঠ করেন কবি মামুন হোসেন বিলাল। সঞ্চালনা করেন কেমুসাসের সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন।
সহসভাপতির বক্তব্যে লেখক ও গবেষক আব্দুল হামিদ মানিক বলেন, অধ্যাপক আসাদ্দর আলী ইতিহাসের প্রকৃত সত্য উন্মোচন করেছেন। চর্যাপদে সিলেটি শব্দের ভাণ্ডারের বিষয়টিসহ সিলেটের ঐতিহ্যকে দালিলিকভাবে প্রমাণ করে তিনি সিলেটবাসীকে ঋণী করে গেছেন। এর মাধ্যমেও জাতিও উপকৃত হয়েছে। অধ্যাপক আসাদ্দর আলী খুব উঁচুমানের লেখক ও গবেষক ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সত্য বলতে কখনো তিনি পিছপা হতেন না। একারণে বাংলা একাডেমীর প্রকাশনার ভুলও তিনি চিহ্নিত করে দিয়েছেন। তারপরও বাংলা একাডেমী তাঁকে পুরস্কৃত করেছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কামাল আহমদ। শেষে মুনাজাত করেন হাফিজ মোহাম্মদ মাসুম আহমদ।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ১২ এপ্রিল সিলেটের কৃতিসন্তান অধ্যাপক মুহম্মদ আসাদ্দর আলী ইন্তেকাল করেন। এর আগের বছর, ২০০৪ সালে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কারে ভূষিত হন।
আলোচনা সভা শেষে মামুন হোসেন বিলালে পরিচালনায় নিয়মিত সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত হয়। পঠিত লেখার উপর আলোচনায় অংশ নেন গল্পকার সেলিম আউয়াল, কবি মামুন সুলতান ও মাসুদা সিদ্দিকা রুহী। লেখা পাঠ করেন, মতিউল ইসলাম মতিন, আব্দুল কাদের জীবন, জোবায়দা বেগম আখি, মোয়াজ্জাম আনাম, জালাল আহমদ, মাসুদা সিদ্দিকা রুহী, তামিনা শহীদ চৌধুরী মান্না, আলাল আহমদ, এহসানুল করিম কাওছার, বাহা উদ্দিন বাহার, মিছবাহ উদ্দিন, সৈয়দ কামরুল হাসান প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি