নবীগঞ্জে নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত ইসলামপুর

64

নবীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
নবীগঞ্জে যোগাযোগ ও নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত একটি নিভৃত পল্লীর নাম হচ্ছে ইসলামপুর। মাত্র ৩কি. মি. রাস্তার জন্য গ্রামের শত শত মানুষ বর্ষায় পানিবন্দী থাকতে হয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে মাত্র ৩ কি. মি. দূরত্বের এই গ্রামটিতে স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ইসলামপুর গ্রামে এখন কোন যানবাহন যেতে পারেনি। গ্রামের মানুষ “হেমন্তে পা বর্ষায় না” এই প্রবাদ বাক্যের সাথে সম্পৃক্ত। বর্ষাকালে নৌকাই তাদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। ঐ গ্রামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় শিক্ষার আলো বঞ্চিত হচ্ছে শত শত কিশোর-কিশোরী। ইসলামপুর গ্রামবাসীর কাছে এযুগেও বিদ্যুতের আলো স্বপ্নের মত। সন্ধ্যার পরেই গ্রামের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক ভূতুরে পরিবেশ।
নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের অবস্থিত ইসলামপুর গ্রামটিতে বসবাস করেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সহস্রাধিক মানুষ। প্রতি বর্ষাতেই গ্রামের লোকজন পানিবন্দী অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েন। যোগাযোগ ক্ষেত্রে আধুনিকতার ছোয়া সর্বত্র লাগলেও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক থেকে মাত্র ৩কিলোমিটার দূরে গ্রামটির লোকজন নাগরিক সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত। মাত্র একটি সড়কের জন্যই গ্রামের এতসব দুর্ভোগ। গ্রাম থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে বিবিয়ানা বিদ্যুৎ প্লান্ট থাকলেও এ গ্রামের বিদ্যুতের আলো স্বপ্নে মত।
এ গ্রামে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে কোন মুমূর্ষু রোগিকে জরুরী অবস্থায় ডাক্তারী সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। গ্রামবাসী জানান, প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থীরা রাস্তা করে দিবেন বলে ভোট আদায় করলেও জয়ী হয়ে আমাদের কথা মনে করেনি। গ্রামের প্রবীণ মুরব্বী হাজী মদরিছ আলী বলেন, যুগ যুগ ধরে আমাদের দুঃখ দুর্দশা লেগেই আছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বললেও আজ পর্যন্ত আমাদের গ্রামটি অন্ধকারেই রয়ে গেল।
আউশকান্দি র.প. উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র তানভির আহমদ জানান, আমরা প্রতিদিন অত্যন্ত কষ্ট করে স্কুলে আসা যাওয়া করছি। বৃষ্টির দিন হলে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হয় না।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গ্রামটির উন্নয়নের ব্যাপারে আমরা আন্তরিক রয়েছি এবং ইতিমধ্যে একটি রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ লুৎফর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গ্রামটির উন্নয়নের ব্যাপারে ইতিমধ্যে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারকে বলে দিয়েছি। তারা যেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উক্ত গ্রামের চলাচলের রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।