কাজিরবাজার ডেস্ক :
হরতাল বন্ধের পর এবার দেশব্যাপী চলমান লাগাতার অবরোধ তুলে নিচ্ছে বিএনপি। সরকারের পতন ঘটানোর অস্ত্র হিসেবে এই দুই কর্মসূচিতে কোনো কাজ না হওয়ায় হতাশ বিএনপি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
একই সঙ্গে হরতাল-অবরোধ চালু রেখে আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনগণকে পাশে পাওয়া সম্ভব নয় বলেও মনে করছে তারা।
দলীয় সূত্র বলছে, সরকারের পতন না ঘটানো পর্যন্ত খালেদা জিয়া ঘরে ফিরবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান শুরু করলেও ঘোষিত কোনো কর্মসূচিতে তার দলের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে মাঠে নামেনি।
কিন্তু কর্মীদের চোরাগোপ্তা হামলা, পেট্রোল বোমা আর ককটেল বিস্ফোরণের জেরে সারা দেশে কয়েকশ’ মামলায় আসামি হয়েছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীদের নির্বাচিত করা এবং মামলার শিকার নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তা দেওয়াই এখন তাই অন্যতম লক্ষ্য হয়ে উঠেছে বিএনপির।
দলীয় সূত্র বলছে, আন্দোলনে নাস্তানাবুদ হয়ে কেন্দ্র থেকে যথাযথ সাড়া না পাওয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এখন ভীষণ অভিমানি হয়ে উঠেছে। বিএনপির হাউ কমান্ড তাই তাদের মামলায় আইনি লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব মামলার খরচও দেবে কেন্দ্র।
সূত্রমতে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর গত ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া অবরোধ-হরতাল মাসের পর মাস চালিয়েও কোনো কাজ না হওয়ায় সারাদেশের নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তারওপর মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে একের পর এক মামলা।
এমন পরিস্থিতিতে দলের ওপর অভিমান করেই কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখছে তারা।
বিষয়টি বুঝতে পেরেই অভিমানি নেতাকর্মীদের মান ভাঙ্গিয়ে ফের তাদের আন্দোলনের মাঠে নামানোই এখন বিএনপির সামনে মূল চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই সারাদেশের নেতাকর্মীদের মামলার তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রীয় ফান্ড থেকে আইনি লড়াইকেই এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিএনপি। এর মাধ্যমে তৃণমূল কর্মীদের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দলও গোছাতে চায় তারা।
তাই আপাতত অবরোধে বিরতি দিয়েই পরবর্তী লক্ষ্য অর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপির হাউকমান্ড। এরই অংশ হিসেবে ছেদ পড়েছে হরতালে। বাসায় ফিরে গেছেন চেয়ারপারসন। অবরোধ শিথিল করা হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামে। এবার সারাদেশে চলমান অবরোধও শিগগিরই তুলে নিচ্ছে তারা।