কুলাউড়ায় গৃহবধূর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের

35

কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
কুলাউড়া আজিরুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্বারের ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল জলিলসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু হয়েছে কুলাউড়া থানায়। নিহতের বড়ভাই আব্দুল হক বাদী হয়ে এ হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ০৭। মামলার প্রধান আসামী নিহতের স্বামী আনছার মিয়া। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন  নিহতের শশুর ওসমান মিয়া(৮০) ও ওসমান মিয়ার ২য় স্ত্রী শাশুড়ী হাছনা বেগম (৩৫)ও ননদ রিমা বেগম(১৮)সহ আরও ৯ জন। পুলিশ ইতিমধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত ৩ আসামী শ্বশুর ওসমান মিয়া, শাশুড়ী হাছনা বেগম ও ননদ রিমাকে আটক করে মৌলভীবাজার কোর্টে সোপর্দ করেছে। উল্লেখ্য, গত বুধবার (পহেলা এপ্রিল ) পারিবারিক কলহের জের ধরে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন আজিরুনকে হত্যার পর লাশ গুম করে থানায় নিখোঁজের জিডি করে বলে নিহতের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
নিহত গৃহবধূ আজিরুনের পরিবারের অভিযোগ, ২০০০ সালে রাজনগরের কলাগাঁও গ্রামের মৃত তোতা মিয়ার মেয়েকে বিবাহ দেন কুলাউড়ার সদর ইউপির গাজিপুর গাংপার গ্রামের ওসমান মিয়ার পুত্র আনছার মিয়া(৪৫) এর সাথে। বিয়ের পর ১৭/১৮ বার যৌতুকের জন্য নির্যাতন করা হয় আজিরুনকে। সংসারের মায়ায় আজিরুনের পিতা কয়েকদফা স্বামী ও শ্বশুরের দাবীকৃত টাকা পরিশোধ করেন। সর্বশেষ ২টি সেলাই মেশিন ক্রয় করে দেওয়া হয় স্বামীকে।
নিহতের ভাইপো আব্দুর রহিম (১৯) বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে তার ফুফু আজিরুন এর ঘর তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। আমরা  ঘর খুলতে চাইলে ওসমান আলী জানান, ঘরের চাবি মেম্বার আব্দুল জলিলের কাছে। তখন আমরা মেম্বারকে ঘর খুলতে বললে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। আর সেই ঘরেই পাওয়া গেলো আমার ফুফুর লাশ। ’ এছাড়াও স্বামী আনছার মিয়া স্ত্রীকে খুন করে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে রেখে নিজে তার গলার একটি অংশ কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার পর আমরা আহতের হাসপাতালে ভর্তি করেছি। নিহতের ঘরের চাবি ওসমান মিয়ার কাছে ছিল।
এদিকে ঘটনার পর গৃহবধূ নিখোঁজ বলে থানায় জিডি করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কিন্তু আনছার গংদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে গেলে আইনি সহায়তা পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুলাউড়া থানার এসআই রফিক জানান, আজিরুন হত্যাকান্ডের ঘটনায় ইউপি সদস্য, স্বামী, শশুর-শাশুড়ীসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজ করা হয়েছে। এবং তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষীদের আইনের আওতায় হবে।