মোঃ শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে গাড়িতে যাত্রী উঠানোকে কেন্দ্র করে দুই পরিবহন শ্রমিক সমিতির চালকদের মধ্যে সংঘর্ষে ও পুলিশের লাঠিচার্জে উভয় পক্ষের গাড়ি চালক, অন্য সমিতির গাড়ির চালক, শালিসি ব্যক্তি, ব্যবসায়ী, পথচারীসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। সংঘর্ষে গাড়ি ও দোকান ভাংচুরের ঘটনায় প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান। ঘটনাটি ঘটেছে পৌর শহরের হবিবনগর এলাকায়।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার দুপুরে জগন্নাথপুর পূর্বপার অটোরিক্সা শ্রমিক সমিতির চালক রুবেল মিয়া জগন্নাথপুর পৌর শহর থেকে যাত্রী নিয়ে উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের রাণীগঞ্জ বাজার এলাকায় যান। সেখান থেকে ফেরার পথে তিনি রাণীগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে এক মহিলা যাত্রীকে তার গাড়িতে উঠান। সময় রাণীগঞ্জ অটোরিক্সা সমিতির চালকরা তাকে যাত্রী নিতে বাধা দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তখন আহত চালক রুবেল মিয়া জগন্নাথপুর এসে তার সমিতিকে ঘটনাটি জানালে সমিতির সকল চালকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় জগন্নাথপুর পূর্বপার শ্রমিক সমিতির উত্তেজিত প্রায় অর্ধশত শ্রমিক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হবিবনগর এলাকায় গিয়ে রাণীগঞ্জ শ্রমিক সমিতির অন্যান্য চালকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা সড়কের পাশে পার্কিংয়ে থাকা গাড়িগুলো একের পর এক ভাংচুর করতে থাকে। তখন রাণীগঞ্জ শ্রমিক সমিতির চালকরা এসে তাদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। প্রায় আধাঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। প্রাণভয়ে ব্যবসায়ী ও পথচারীরা দিকবিদিক ছুটাছটি করতে থাকেন। এ সময় দুই সমিতির সংঘর্ষে গাড়ি চালক, ব্যবসায়ী ও পথচারীসহ ১৭ জন আহত হন। সংঘর্ষে ২টি মিনিবাস, ৭টি লেগুনা, ৫টি অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন সমিতির ১৪টি গাড়ি ও আশপাশের প্রায় ৮/১০ টি দোকান ভাংচুর করা হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে থানা পুলিশের লাঠিচার্জে আরো ৩ চালক আহত হন। সংঘর্ষে আহতরা হচ্ছেন, জগন্নাথপুর লাইটেস শ্রমিক সমিতির সভাপতি মঈন উদ্দিন, অটোরিক্সা শ্রমিক সমিতির ম্যানেজার রাজা মিয়া, চালক সুজন মিয়া, শাহীনুর মিয়া, সুহেল মিয়া, ফারুক মিয়া, রাসেল মিয়া, রুপ মিয়া, রুকন মিয়া, আব্দুস শহীদ, আলফু মিয়া, ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া, জাহিদুল হক, পথচারী হিমাংশু দাস। আহতদের জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
রাণীগঞ্জ অটোরিক্সা শ্রমিক সমিতির সভাপতি আলা উদ্দিন জানান, প্রতিপক্ষের অতর্কিত হামলায় আমাদের পক্ষের অধিকাংশ লোক আহত হন এবং গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। জগন্নাথপুর পূর্বপাড় অটোরিক্সা শ্রমিক সমিতির আহবায়ক শফিকুল ইসলাম খেজর জানান, তারা অন্যায়ভাবে আমাদের সমিতির চালককে মারপিট করার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, সংঘর্ষে আমাদের দোকান ভাংচুরের ঘটনায় প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। জগন্নাথপুর থানার ইর্মাজেন্সি অফিসার এস আই লুৎফর রহমান জানান, শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়েছে।