এবার বালাগঞ্জে প্রেমিকার অনশন

31

ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকের পর বালাগঞ্জে বিয়ের দােিবতে প্রেমিকের বাড়িতে গত দুইদিন ধরে অনশন করে যাচ্ছে প্রেমিকা। গত বুধবার উপজেলার বোয়ালজুর ইউনিয়নের নশিওরপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার নওশিরপুর গ্রামের ছদ্ধ নাম জনির সাথে গত ১ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে একই গ্রামের তইমুছ আলীর পুত্র সাদ্দাম হোসেনের। এক পর্যায়ে উভয় পরিবারের অভিভাবকরা জানতে পেরে বিষয়টি নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিশ বৈঠক বসে। কিন্তু প্রেমিকের বড়ভাই চেরাগ আলী কোন ভাবেই এ প্রেমের সম্পর্কটি মেনে নেননি। এক পর্যায়ে প্রেমিক সাদ্দাম ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৮ ফেব্র“য়ারী সন্ধ্যা রাতে প্রেমিকা জনির ঘরে গিয়ে জোরপূর্বক জনি তুলে নিতে চাইলে তার শোরচিৎকারে পার্শ্ববর্তী ঘরের বাসিন্দা এগিয়ে এসে আহত অবস্থায় জনিকে উদ্ধার করেন এবং প্রেমিক সাদ্দামকে আটক করে তার ভাই চেরাগ আলীকে খবর দেন। অবশেষে ঐ দিন রাতে গ্রামের মুরব্বিয়ানদের সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে কিছু দিনের ভিতরে পারিবারিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হবে মর্মে মৌখিক অঙ্গিকার করে চেরাগ আলী তাঁর ভাই সাদ্দাম হোসেনকে নিয়ে যান। কিন্তু কয়েকদিন পর বিষয়টি জনির মা বিয়ের ব্যাপারে সাদ্দামের ভাই চেরাগ আলীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন তুমার মান সম্মানের জন্য কিছু টাকা নিতে পার কিন্তু কোন ভাবেই আমার ভাইয়ের সাথে তোমার মেয়ের বিয়ে হবে না। অবশেষে বুধবার সকাল থেকে প্রেমিকা জনি বিয়ের দাবিতে প্রেমিক সাদ্দাম হোসেন বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে।
প্রেমিকার মা কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, আমরা গরীব বলে আমাদের কোন মান-সম্মান নেই। চেরাগ আলী পঞ্চায়েতের সবার সামনে বলেছে কিছু দিনের মধ্যে পারিবারিক ভাবে বিয়ে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু ভাইকে ছাড়িয়ে নেওয়ার পর সে বিয়ে মেনে না নিয়ে উল্টো টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গতকাল আমার মেয়ে তাদের বাড়িতে চলে যাওয়ার পর প্রথমে তারা আমার মেয়েকে ঘরে তুলেনি। পরবর্তীতে গ্রামের মুরব্বিয়ান এগিয়ে আসলে মেয়েকে ঘরে তুলে নিয়ে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে নেয়ার পায়তারা করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে না জাননোর জন্য আমাদের বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিয়ে রেখেছে।
গতকাল সরেজমিনে নশিওরপুর গ্রামের চেরাগ আলীর বাড়িতে গিয়ে  দেখা যায় প্রেমিকা জনি প্রেমিক সাদ্দামের বাড়িতে রয়েছেন। এ সময় প্রেমিক সাদ্দাম আহমদ কোথায় আছেন জানতে চাইলে বাড়ির লোকজন জানান সাদ্দাম গত তিন দিন ধরে বাড়িতে নেই। প্রেমের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাই প্রেমিক সাদ্দামের ভাই চেরাগ আলী বলেন একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে সড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। জনিকে তাঁর মা মেরেছেন তাই আমাদের বাড়িতে এসে আশ্রয় নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (গতকাল) রাতে গ্রামের সালিশ ব্যক্তিদের মাধ্যমে জনিকে তার মায়ের কাছে তুলে দেয়া হবে। এ সময় চেরাগ আলী কৌশল করে প্রেমিকা জনিকে উপস্থিত সাংবাদিক সামনে এনে শেখানো বক্তব্য দেয়ার পাঁয়তারা করেন।
স্থানীয় ইউ/পি সদস্য শাহজাহান আহমদ বলেন, বিষয়টি নিয়ে মেয়ের মা পূর্বে আমার কাছে নালিশ করেছিল। পরবর্তীতে আমি গ্রামের মুরব্বিয়ানদের বিষয়টি সমাধান করে দেওয়ার জন্য বলেছিলাম। বুধবার বিয়ের দাবিতে মেয়েটি প্রেমিক সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে চলে গিয়েছে খবর পেয়ে রাতে আমরা গ্রামবাসী সহ সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে বৈঠক করেছি। কিন্তু সাদ্দাম হোসেন বৈঠকে অনুপস্থিত থাকায় বিষয়টির কোন সমাধান হয়নি। বর্তমানে মেয়েটি সাদ্দামের বাড়িতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে বালাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।