স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

18

স্টাফ রিপোর্টার :
বালাগঞ্জে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন ও শ্বশুর ও দেবরকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার সিলেটের বিশেষ দায়রা জজ (জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল) আদালতের বিচারক মোঃ মঈদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর নাম-মোঃ মুহিদ আলী ওরফে মুনছুর আলী (২৮)। সে বালাগঞ্জ থানার কিত্তেজালালপুর গ্রামের মোঃ আব্বাস আলীর পুত্র। খালাসপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- মুরছুর আলীর পিতা আব্বাস আলী (৫৫) ও তার ভাই শাহজাহান আলী (২৬)। রায়ে যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামী মুনছুরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানা দিতে না পারলে সাজাপ্রাপ্ত আসামী আরো ৬ মাসের কারাভোগ করতে হবে। রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ও খালাসপ্রাপ্তরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০০৭ সালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানার ষাঁড়েরগঞ্জ গ্রামের মোঃ কটু মিয়ার কন্যা মোচ্ছাঃ রতœা আক্তার (২৪) ভালোবেসে মোঃ মুহিদ আলী ওরফে মুনছুর আলীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর প্রায় ২ বছর তাদের সংসার সুখে শান্তিতে অতিবাহিত হয়। এর মধ্যে তাদের সংসারে মাহিম (১) নামের এক সন্তানের জন্ম হয়। পরবর্তীতে সাংসারিক খুটি-নাটি বিষয়কে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যে সৃষ্টি হতে থাকে। ২০১২ সালের ১৪ জানুয়ারী এশার নামাজের পর রতœা খাওয়া-দাওয়া শেষ করে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ঐদিন গভীর রাতে স্বামী মুনছুর ঘুমন্ত অবস্থায় রতœাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের রুম থেকে তার মাকে ডেকে এনে জানায় যে, রতœা রাতে ২/৩ বার বাথরুমে গেছে। এখন তার কোন সাড়া শব্দ নাই। পরে তারা দেখতে পান রতœা জীবিত নেই। এক পর্যায়ে তারা পালিয়ে যায়। পরদিন ১৫ জানুয়ারী সকালে খবর পেয়ে বালাগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূ রতœা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসামানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহত রতœার পিতা মোঃ কটু মিয়া বাদি হয়ে রতœার স্বামী মুনছুর আলী শ্বশুর মোঃ আব্বাস আলী ও দেবর শাহজাহান আলীকে আসামী করে বালাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নং- ৯ (১৬-০১-১২)। দীর্ঘ তদন্ত শেষে একই বছরের ২৯ জুলাই বালাগঞ্জ থানার এসআই সহি উদ্দিন আহমেদ ৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১৩ সালের ১৪ জানুয়ারী থেকে আদালতে এ মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানী ও ৮ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আসামী মুনছুর আলীকে ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে উল্লেখিত দন্ডাদেশ এবং মামলার অপর আসামী রতœার শ্বশুর মোঃ আব্বাস আলী ও দেবর শাহজাহান আলীর আদালতে দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি এডভোকেট নওসাদ আহমদ চৌধুরী মামলাটি পরিচালনা করেন।