কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাটে ৫ দিনের ব্যবধানে আরো এক সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। এতে করে এলাকায় জনমনে ডাকাত আতংক বিরাজ করছে। জনা যায়, গত ২০ ফেব্র“য়রী শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার সাতবাক ইউপির লালারচক গ্রামের সৌদি প্রবাসী আলীম উদ্দিনের বাড়িতে ডাকাতরা হানা দিয়ে তার স্ত্রী ও পুত্রকে রক্তাক্ত জখম করে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা দামী জিনিসপত্রসহ ১০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই উপজেলার ৫নং ইউপির বড় চতুল গ্রামের সৌদি ফেরত প্রবাসী রফিক আহমদ চৌধুরীর বাড়িতে গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে একদল অস্ত্রধারী ডাকাত চক্র হানা দিয়ে প্রথমে প্রবাসীর পাকা বসত ঘরের কলাপসিবল গেইটের তালা ও পরে একটি কক্ষের দররজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ডাকাতদের অবস্থান টের পেয়ে প্রবাসীর ভাতিজা কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী রাসেল চৌধুরী শোর চিৎকার দিলে ডাকাতরা তাকে বেদড়ক মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে হাত পা বেঁধে চাচা প্রবাসী রফিক আহমদ চৌধুরীর কক্ষে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে প্রবাসীকেও ডাকাতরা জখম করে ঘরের অন্যান্য সকল সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত পা বেঁধে ফেলে। এর পর ডাকাতরা ঘরের ৪টি কক্ষে হানা দিয়ে স্টিল ও কাটের সকেস আলমিরা ওয়াডড্রফ ভেঙ্গে সমস্ত মালামাল তছনছ করে নগদ ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা আনুমানিক ২৮ ভরি স্বর্ণালংকার, দামি জিনিসপত্র সহ প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতরা। বাড়ির গৃহকর্তা প্রবাসীর ভাই স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমাছ উদ্দিন চৌধুরী জানান, ডাকাতরা প্রায় আধা ঘন্টা ব্যাপী তান্ডব চালিয়ে উল্লেখিত মালামাল নিয়ে যায়। ডাকাতদের হামলায় আহত তার ভাই প্রবাসী রফিক আহমদ চৌধুরী ও ছেলে রাসেল চৌধুরীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর সিলেটের একটি ক্লিনিকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। ঐদিন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। ডাকাতির ঘটনা খবর পেয়ে ঐদিন রাতে ডিউটিরত পুলিশ এবং পরদিন কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রবাসীর ভাই ইউপি সদস্য আলমাছ উদ্দিন চৌধুরীর ডাকাতির ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৭/৮জনের বিরুদ্ধে গত বুধবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের পর গতকাল বৃহস্পতিবার থানার ওসি তদন্ত শফিকুল ইসলাম প্রবাসীর বাড়িতে তদন্তে যান। ৫ দিনের ব্যবধানে দুই সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হওয়ার পর পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ অদ্যাবধি পর্যন্ত লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার বা ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি। এছাড়া উপজেলার সাতঘরি, দীঘিরপার গ্রামে সম্প্রতি তিনটি বাড়িতে ডাকাতরা হানা দিলে গ্রামবাসী মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। এতে করে জনমনে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন প্রবাসী রফিক আহমদ চৌধুরী ও আলিম উদ্দিনের বাড়িতে দুর্বৃত্তরা কর্তৃক মালামাল নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পূর্ব শত্র“তার জের ধরে এ ধরণের ঘটনা বা ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে।