বালাগঞ্জে ব্যাংক কর্মচারীর ছেলে অপহরণ, ৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার

35

বালাগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
বালাগঞ্জে ব্যাংক কর্মচারীর ছেলেকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মঙ্গলবার রাতে অপহৃত মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধার করা হয় এবং উত্তেজিত জনতা অপহরণকারীর বাড়ীতে অগ্নি সংযোগ করেন। বালাগঞ্জ থানার পুলিশ ও তাজপুর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের লোকজন রাত ১২টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। এ সময় অপহরক কামরানকে গণপিটুনী দিয়ে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী ওবালাগঞ্জ থানার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার উপজেলার স্থানীয় বোয়ালজুড় বাজার মাদ্রাসার বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ঔ দিন সন্ধার পূর্ব থেকেই মাহফিলে এসে শরিক হয় অগ্রণী ব্যাংক বালাগঞ্জ শাখার কর্মচারী উপজেলার নবীনগর গ্রামের আব্দুর রশিদ ময়নার ছেলে রাহাতুল ইসলাম হৃদয়। রাত প্রায় ন’টার দিকে হৃদয় ওয়াজের প্যান্ডেল থেকে প্রশ্রাব করার জন্য বাহিরে বের হয়। এ সময় তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় উপজেলার কাজিপুর গ্রামের মৃত কাপ্তানের ছেলে কামরান ও তার সহযোগীরা। আদিত্যপুর-তিলকচাঁনপুর আলিম মাদ্রসায় ৮ম শ্রেণীর ছাত্র হৃদয়। হৃদয় প্যান্ডেলের বাইরে বের হওয়ার পর তাকে না পেয়ে হৃদয়ের সাথে ওয়াজ মাহফিলে আসা উপজেলার গৌরীনাথপুর গ্রামের ছুরাব আলীর ছেলে সাইফুল হৃদয়ের  সন্ধান করতে থাকে। এ সময় সাইফুল হৃদয়ের মোবাইলে ফোন দেয় এবং হৃদয়ের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পায় সাইফুল। তাৎক্ষণিক ওয়াজের প্যান্ডেলে এসে উপস্থিত লোকজনকে ঘটনাটি জানায় সাইফুল। হৃদয়ের সন্ধান চেয়ে ওয়াজের মাইকে ঘোষণাও দেয়া হয় এবং স্থানীয় লোকজন আশপাশ এলাকায় হৃদয়ের সন্ধান করতে থাকেন। এক পর্যায়ে রাত প্রায় পৌণে বারটার দিকে ওয়াজ মাহফিলের প্যান্ডেল থেকে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দূরবর্তী এবং বোয়ালজুড় বাজারের সন্নিকটে কাজীপুর গ্রামের একটি মৎস্য ফিশারীর ঘর থেকে অপহরণকারী কামরানের জিম্মায় থাকা হৃদয়কে উদ্ধার করে স্থানীয় জনতা। এ সময় কামরানকে ধরে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয় জনতা। হৃদয়কে অপহরন করার প্রতিবাদে উপস্থিত জনতা অপহরণকারী কামরানের বাড়ীতে অগ্নি সংযোগ করে। খবর পেয়ে বালাগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। অপহরণ হওয়া মাদ্রাসা ছাত্র হৃদয় বলেন, অপহরণকারী কামরান ও তার সহযোগীরা আমাকে জোর করে ধরে একটি মৎস্য ফিশারির ঘরে নিয়ে আটকে রেখে মারধর করে। এ সময় আমার মোবাইল ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখে। তখন কামরান আমাকে বলে তুকে ছাড়িয়ে নিতে হলে তর বাবা আমাকে দুই লক্ষ টাকা দিতে হবে। বালাগঞ্জ থানার এসআই অরুপ কুমার চৌধুরী বলেন, বোয়ালজুড় বাজারের দোকান কর্মচারী সিতু খুনের আসামী কামরান সহ তার আরও দুই ভাই। বর্তমানে তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছে। বালাগঞ্জ থানার ওসি তরিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, অপহৃত হৃদয়ের পিতা বাদী হয়ে অপহরক কামরান ও তার এক সহযোগীকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দিয়েছেন। পুলিশের হাতে ধৃত কামরান বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে আগামীকাল (আজ) তাকে কোর্টের মাধ্যমে সিলেট আদালতে চালান দেয়া হবে বলেও ওসি জানান।