বহু ধারায় বিভক্ত সিলেটে আওয়ামীলীগ, বেপরোয়া ছাত্রলীগ

39

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ একাধিক গ্র“পে বিভক্ত। জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে রয়েছে অন্তত তিনটি গ্র“প। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আছে আরো তিনটি গ্র“প। এছাড়াও কিছু উপ-গ্র“প রয়েছে সিলেট আওয়ামী লীগে। এসব গ্র“পের নেতাদের ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা বেপরোয়া। নিজেদের মধ্যে রক্তারক্তি কান্ড থেকে শুরু করে দখল বাণিজ্য, প্রভাব খাটানো, হামলা, ভাংচুর করে উত্তপ্ত করছে ছাত্রলীগ।
দলীয় সূত্র জানায়, এক সময় সিলেটে আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। ওই দুই ভাগের নেতৃত্বে ছিলেন আবদুস সামাদ আজাদ ও দেওয়ান ফরিদ গাজী। পরবর্তী সময়ে এই বিভক্তি আবদুস সামাদ আজাদ এবং সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী বলয়ে রূপ নেয়। পরবর্তীতে হুমায়ুন রশীদ মারা যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের বিভক্তি সামাদ আজাদ-সুরঞ্জিত বলয়ে আবর্তিত হতে থাকে।
বর্ষীয়ান নেতা আবদুস সামাদ আজাদ মারা যাওয়ার পর সিলেট আওয়ামী লীগে কিছুদিন একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের। কিন্তু ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আবুল মাল আব্দুল মুহিত আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার পর থেকে সিলেটে তার একটি নিজস্ব বলয় গড়ে উঠে। তাতে ভাটা পড়ে সুরঞ্জিতের আধিপত্য।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের আশীর্বাদে চলেন ছাত্রলীগের মির্জাজাঙ্গাল গ্র“পের নেতা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিধান। তার ইশারাতেই ওই এলাকার সব কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়।
মিসবাহ গ্র“প মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন কামরান বলয়ের বিরোধী বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান বয়সের ভারে ক্রমেই রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হতে থাকলেও তার আশীর্বাদপুষ্ট গ্র“প বলে পরিচিত আ’লীগ নেতা এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান গ্র“প। আবার এই নাসির উদ্দিন তালতলা কেন্দ্রীক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ গ্র“পের মদদদাতা।
জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী টিলাগড় কেন্দ্রীক ছাত্রলীগের একটি গ্র“পের মদদ দেন। ওই গ্র“পের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি পংকজ পুরকায়স্থ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বাবলা।
শফিক চৌধুরীর সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদের। আবার শফিক-আশফাক বলয়ের প্রতি সুদৃষ্টি রয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের রয়েছে নিজস্ব একটি বলয়। ওই বলয়ের সাথে যুক্ত রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আজাদুর রহমান আজাদ ও রণজিত সরকার। আজাদ-রণজিত মিলে নিয়ন্ত্রণ করেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরী ও তার অনুসারীদের।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের নিয়ন্ত্রণেও রয়েছে আওয়ামী লীগের একটি গ্র“প। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি তিনি ছাত্রলীগের দর্শনদেউড়ি গ্র“প নিয়ন্ত্রণ করেন। দর্শন দেউড়ি গ্র“প ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দেন মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত তরফদার। এসবের বাইরেও আব্দুস সামাদ আজাদের ছেলে আজিজুস সামাদ ডনের ছোট একটি নিজস্ব বলয় রয়েছে। তাছাড়া অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের ভাগ্নী জামাই কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আহমদ আল কবিরও নিজস্ব বলয় তৈরীতে সক্রিয়। ওই গ্র“পে রয়েছেন মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক আলম খান মুক্তি।