বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বরাদ্দকৃত প্রায় দেড় হাজার রিক্সার প্লেইট ও আত্মসাতকৃত সাড়ে ৩ কোটি টাকা উদ্ধারে আবারো সো””ার হচ্ছেন সিলেটের মুক্তিযোদ্ধারা। একই সাথে আত্মসাতকারী বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিটের তৎকালীন স্বঘোষিত কমান্ডার সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েলের শাস্তি দাবি করেছেন তারা। গত রবিবার সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগপত্রে মুক্তিযোদ্ধা নেতারা এ দাবি করেন।
লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় তৎকালীন সেনা কমান্ডার কর্তৃক গঠিত সিলেট ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ১ হাজার ৭শ’ রিক্সার প্লেইট গ্রহণ করেন সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল। তবে এর মধ্যে মাত্র ৫শ প্লেইট মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানানো হলেও বাকীগুলোর হদিস মেলেনি। আবার যেসব প্লেইট বিতরণ করা হয়েছে তা নামে বেনামে হাতিয়ে নিয়েছেন জুয়েল। এরপরও ক্ষান্ত থাকেননি সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জুয়েল একাই ১ হাজার রিক্সা প্লেইট আত্মসাৎ করেছেন। প্রতিদিন গড়ে ২০ টাকা করে ধরলে বিগত ৭ বছরে এসব রিক্সা থেকে আয়ের পরিমাণ ৩ কোটি ৫২ লাখ ৮০ হাজার টাকা হয় বলে উল্লেখ করা হয়। সমুদয় টাকা জুয়েল তার পকেটে ভরেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
অন্যদিকে ২০১০ সালে সিলেট জেলা ইউনিটের কমান্ডার নির্বাচিত হওয়ার পর তৎকালীন কমান্ডার শামছুদ্দোহা অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাপ্ত রিক্সার প্লেইট উদ্ধারের উদ্যোগ নেন। এরপর খোঁজ নিয়ে জানা যায় সিলেট চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাষ্ট্রিজ এর তৎকালীন সভাপতি ফারুক আহমদ মিসবাহর কাছে বেশ কিছু রিক্সার যন্ত্রপাতি রয়েছে। এরপর শামছুদ্দোহার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিলেটের জেলা প্রশাসন প্রায় ২০ টন ওজনের যন্ত্রপাতি উদ্ধার করে। সেই যন্ত্রপাতি নিলামে বিক্রির উদ্দেশ্যে কমিটিও করে জেলা প্রশাসন। এজন্য কমিটি করে দেয়ার পরও রহস্যজনক কারণে কয়েক বছর ধরে সেইসব যন্ত্রপাতি নিলাম করা হচ্ছে না। এছাড়া প্রাপ্ত রিক্সার নম্বর নবায়নে সিলেট সিটি কর্পোরেশনেরও তেমন সাড়া মেলেনি বলেও অভিযোগ করা হয়। জেলা প্রশাসন ও এসব দুর্নীতি তদন্তে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ করেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা নেতারা।
সাবেক জেলা কমান্ডার শামছুদ্দোহা স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে প্রদানকালে সাবেক মুক্তিযোদ্ধা নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সদর উদ্দিন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু, মুক্তিযোদ্ধা তুতা মিয়া, শোয়েব আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা ওয়াছি উল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা সফিক মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মছব্বির, মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল মোহন্ত, মুক্তিযোদ্ধা মছদ্দর আলী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি