সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের নবীনগর বিজিবি ক্যাম্পের সামনে সুরমা নদীতে ইঞ্জিন নৌকা ডুবে কয়েকজন জেএসসি পরীক্ষার্থীসহ প্রায় ২০ যাত্রী আহত হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে বুধবার সকাল সোয়া ৯টায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং স্থানীয় লোকজনের দ্বারা ডুবে যাওয়া দুর্ঘটনায় পতিত নৌকাটি উদ্ধার করেন। প্রত্যেক্ষদর্শী পদক্ষেপ মানবিক ন্নয়ন কেন্দ্রের এক এনজিও কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার্থীসহ প্রায় ১৫০ জন যাত্রী নিয়ে একটি ইঞ্জিন নৌকা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের হালুয়ারঘাট বাজার থেকে জেলা সদরস্থ সরকারী জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বালুর মাঠ ঘাটে যাওয়ার পথে সুরমা নদীতে এ নৌডুবির ঘটনা ঘটে। এ সময় অধিকাংশ যাত্রী সাতরিয়ে তীরে উঠলেও পরীক্ষার্থীদের অনেককেই তাৎক্ষণিকভাবে খুঁজে না পাওয়ায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় ফেরীঘাটের ইজারাদার এরন মিয়া জানান, ডুবন্ত নৌকাটি ইতিমধ্যেই উদ্ধার করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এ পর্যন্ত ৪ ছাত্রীকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হচ্ছে সুরমা ইউনিয়নের পার্বতীপুর গ্রামের শামছুর রহমানের কন্যা সাবিনা আক্তার (১৪), মঙ্গলকাটা গ্রামের সাইফুল ইসলামের কন্যা শাকিলা বেগম (১৪), মইনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল হাই এর কন্যা রিপা বেগম (১২) ও বালিকান্দি গ্রামের আছগর আলীর কন্যা মার্জিনা বেগম (১৫)। আহতরা জেএসসি পরীক্ষার্থী। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের ফলে নৌকাটি হেলেদুলতে থাকলে মাচার উপর বসা যাত্রীরা হৈ হুল্লোড় শুরু করার একপর্যায়ে মাচাটি ভেঙ্গে গিয়ে আকস্মিকভাবেই নৌকাটি ডুবে যায়। ঐ সময় সাতরিয়ে তীরে উঠতে গিয়ে নৌকার ভাঙ্গা মাচায় আঘাত পেয়ে প্রায় ২০ যাত্রী আহত হন। আহতদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম ও সদর থানা অফিসার ইনচার্জ মকবুল হোসেন মোল্লা নৌ-দুর্ঘটনাস্থল থেকে ফিরে সাংবাদিকদের বলেন, ইঞ্জিন চালিত নৌকাটি তীরের কাছাকাছি ডুবে যাওয়ার কারণে সকল যাত্রীরাই বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। নিখোঁজ থাকার বিষয়টি তারা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেন। এদিকে আহত ছাত্রীদের অভিভাবকরা এই ঘটনার জন্য মইনপুর গ্রামের মৃত কুবাদ আলীর পুত্র নৌকাঘাটের ম্যানাজার আশিক মিয়াকে গ্রেফতারের দাবী জানিয়ে বলেন, ছাত্র ছাত্রীদের তীব্র আপত্তির মুখে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে আশিক মিয়া কর্তৃক নৌকা ছাড়ার কারণেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। পরে আহত ছাত্রীরা হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে প্রশাসনের সহযোগিতায় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে যথারীতি পরীক্ষা দিয়েছে বলেও প্রশাসন সূত্রে দাবী করা হয়। এদিকে দুর্ঘটনায় কবলিত নৌকার মালিক সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মৃত হবিব উল্লাহর পুত্র শিপুকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।