স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীদের টেকনিক্যাল পদ মর্যাদাসহ বেতন স্কেল প্রদানের আবেদন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী বরাবর উপস্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি।
গতকাল শুক্রবার সিলেট মহানগরীর সিলেট সার্কিট হাউজে বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগ শাখার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল আনসারীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী বরাবরে এতদসংক্রান্ত আবেদন উপস্থাপন করলে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী দীর্ঘ সময় ধৈর্য্য সহকারে বক্তব্য শুনেন এবং বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী বরাবরে উপস্থাপনের আশ্বাস প্রদান করেন। স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত সিলেট বিভাগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল আনসারী স্বাস্থ্য সহকারীদের কাজগুলো যে শতভাগ টেকনিক্যাল তা প্রতিমন্ত্রীর নিকট ব্যাখ্যা করেন। তিনি দেশে বিদেশে স্বাস্থ্য সহকারীদের কাজের সফলতা ও প্রতিমন্ত্রীর নিকট তুলে ধরেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবুল ফয়েজ সৈয়দ তোয়াহা, সাংগঠনিক সম্পাদক জয়দেব ভৌমিক, মহিলা সম্পাদিকা হেলেন রায়, যুগ্ম সম্পাদক মোঃ মাহফুজুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক আমীরুল ইসলাম (দিলসাদ) সদস্য মোঃ ফারুক আহমদ, সৈয়দ মুশাহীদুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা শাখার স্বাস্থ্য সেবার গুণগত মান উন্নয়ন সম্পাদক মোঃ আবু তাহের, কোষাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস ছবুর, জেলা কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম, দক্ষিণ সুরমা শাখার সদস্য মোঃ জাকারিয়া, সিলেট জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মুমীত, সহ সভাপতি স্বাস্থ্য সহকারী মোঃ মামুনুর রশিদ, বালাগঞ্জ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিক মিয়া, কোষাধ্যক্ষ মনিন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, সিলেট জেলা শখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শাহনাজ বেগম, সদস্য নাজমুন নাহার সুমী, সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক অশোক কুমার দাস, দোয়ারা বাজার উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মোঃ জয়নাল আবেদীন, সিলেট বিভাগের ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ মঈনুল ইসলাম, প্রমুখ। স্মারকলিপিতে স্বাস্থ্য সহকারীরা দাবি করেন তারা গত ৪ দশকের অধিক সময় ধরে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছেন। স্বাস্থ্য সহকারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশ আজ পোলিওমুক্ত। টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় ১২টি দেশের মধ্যে প্রথম। বাংলাদেশে ১৯৭৯ সালে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। ১৯৮৫ সালে ২ শতাংশ মানুষ ইপিআই-এর আওতাধীন ছিল। আজকে এটি ৮২ শতাংশে পৌঁছেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে দেশে হাম-রুবেলা কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। স্বাস্থ্য সহকারীরা দাবী করেন স্বাধীনতার চার দশকের অধিক সময় ধরে তাঁদের নিরলস প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের সাফল্য গাণিতিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ আয়ুষ্কাল বাংলাদেশের। সর্ব নিম্ন প্রজনন হার ও শিশু মৃত্যুর হার বাংলাদেশের। দেশে পাঁচ বছর বয়সের শিশু ও নবজাতকের মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য হার কমছে। বাংলাদেশে শিশু স্বাস্থ্যের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে জাতীয় পর্যায়ে যতগুলো পুরস্কার এসেছে সবগুলোই ইপিআই কর্মসূচিতে অবদানের জন্য। স্বাস্থ্য সহকারীরা দাবী করেন সীমিত জনবল ও নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে তারা মরণব্যাধি গুটিবসন্ত, ম্যালেরিয়ার মহামারি, ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে, পয়:নিষ্কাশন, দেশের গ্রামীণ আপামর জনগণের স্বাস্থ্য সেবায় সচেতনতা সৃষ্টিসহ বিশেষত টিকাদানে, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু রোধে আন্তর্জাতিকভাবে সফলতা লাভ করেছেন। দেশী বিদেশী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণের মতে তাদের কাজগুলো শতভাগ টেকনিক্যাল হওয়ায় তারা বেতন স্কেলসহ টেকনিক্যাল মর্যাদা পাওয়া দাবী করে আসছেন। প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা গণমুখী করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৮ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য সহকারীদের টেকনিক্যাল মর্যাদা প্রদানের প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন। দীর্ঘদিন দাবীটি বাস্তবায়ন না হওয়ায় স্বাস্থ্য সহকারীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। প্রদত্ত স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে তারা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রীর কৃপা দৃষ্টি কামনা করেন। বিজ্ঞপ্তি