সেচ সংকটে তাহিরপুরের ২৩ টি হাওরের ১৭ হাজার হেক্টর ইরি বোরো ফসল

4

তাহিরপুর প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সেচ পানির তীব্র সংকটে কারনে ইরি-বোরো ফসলি জমির মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কোন বৃষ্টিপাত নেই। বৃষ্টিপাত না হলে বোরো ফসল উৎপাদন কম হওয়ার আশংকা স্থানীয় হাওর পারের কৃষকদের।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, দেশি জাতের ধান চাষাবাদে সেচ পানির তেমন কোনো প্রয়োজন নেই কিন্তু হাইব্রিড জাতীয় ও উচ্চফলশীল ধান চাষাবাদে প্রচুর সেচ পানির প্রয়োজন পড়ে। ফলে একদিকে যেমন সেচ সুবিধা নাই অন্যদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় ফলন বিপর্যয়ে মুখে পড়েছে শনি, মাটিয়ান, মহালিয়া, দরুন, আঙ্গারুলি হাওর সহ উপজেলার ২৩ টি ছোটবড় হাওরে ১৭ হাজার ৮শ ৪০ হেক্টর জমির ইরি বোরো ফসল।
বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ হাওর গুলোতে সেচ পানি দেয়ার কোনরূপ সুবিধা নেই। বিভিন্ন হাওরে নদী তীরবর্তী স্থানে সামান্য জমি রয়েছে। সে জমিগুলোতে যত সামান্য পানি দেয়া যায়। অপরদিকে সেচ মৌসুমের আগেই নদী নালা, খাল, বিল জলাশয় শুকিয়ে যায়। ফলে বৃষ্টির পানির অপেক্ষাই বসে থাকতে হয় কৃষকদের। বর্তমানে হাওরে হাওরে কৃষকের রোপণকৃত জমিতে পানির অভাবে ধান গাছের পাতা হলদে রং ধারণ করছে। এ অবস্থা আরও কিছুদিন চলমান থাকলে বোরো উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকা প্রকাশ করছেন হাওর পারের কৃষক।
উপজেলার বৃহৎ বোরো ফসল উৎপাদনে হাওর শনি মাটিয়ান, মহালিয়া, আঙ্গুরুলি অন্যতম। কিন্তু কোনো একটি হাওরে বড় কোন সেচ পাম্প নেই। না থাকার কারণ হিসেবে কৃষকরা জানান, মাটির নীচে পানির স্তর অনেক গভীরে হওয়ায় সেচ পাম্প বসাতে অনেক টাকা খরচ পরে তাদের। সে কারণে তারা সেচ পাম্প বসাতে পারছেন না।
শনি হাওর মধ্য তাহিরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মিয়া, তিনি জানান, শনি হাওরের মধ্যবর্তী স্থানে এবার ৩০ একর জমিতে বিভিন্ন ধরনের উচ্চ ফসলশীল ধান রোপন করেছেন। কিন্তু জমিতে সেচ দেয়ার ব্যবস্থা না থাকায় শুধুমাত্র বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছেন। একই অবস্থার কথা জানালেন মাটিয়ান হাওরপার সূর্যেরগাও গ্রামের কৃষক আশিকনুর মিয়া, তিনি জানা, বৌলাই নদীতে সামন্য পানি থাকালেও তার জমি মাটিয়ান হাওরের ভেতর অনেক দুর থাকার কারনে তিনি সেচ পানি দিতে পারছেন না। তাই তিনিও বৃষ্টির অপেক্ষাই করছেন। তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিস উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহিমা বেগম বলেন, ইরি জমিতে প্রচুর পরিমাণ পানির প্রয়োজন কিন্তু পানির কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কৃষক জমিতে পানি দিতে পারছেন না।
তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো.শরীফুল ইসলাম বলেন, সেচ সংকটের কারনে অনেক হাওরেই পানি দেয়া সম্ভব না। অনেক স্থানে সেচ সুবিধা থাকালেও নদীতে পানি নেই।