স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন সিলেট চেম্বার অব কমার্সে আওয়ামী স্বৈরাচারের মদদপুষ্ট পরিষদ বাতিল করে প্রতিনিধিত্বশীল পরিচালনা পর্যদ গঠনের দাবি জানিয়েছেন সর্বস্তরের ব্যবসায়ীবৃন্দ। তারা ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এ দাবি মেনে নিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করা না হলে ৮ ডিসেম্বর সিলেট চেম্বারের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন এবং পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার হুশিয়ারি দেন। সোমবার সিলেট নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সর্বস্তরের ব্যবসায়ীবৃন্দের পক্ষে এ দাবি জানান চেম্বারের সাবেক পরিচালক আমিরুজ্জামান চৌধুরী দুলু।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ব্যবসায়ীদের স্বার্থে তেমন কোন কার্যক্রম পরিচালনা করেনি। বরং রাজনৈতিক মদদপুষ্ট কিছু অসৎ ব্যবসায়ী সিলেট চেম্বারের নেতৃত্বে আসীন হয়ে চেম্বারকে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। এ ধারাবাহিকতার ২০২২-২৩ সালে পরিচালনা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রথমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনক্রমে নির্বাচন করতে পরিষদের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। পরবর্তীতে বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালা, লঙ্ঘন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের যোগসাজসে গোপনীয়ভাবে নির্বাচন দেখিয়ে ভোটার ও প্রার্থীগের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ২০২৪-২৫ মেয়াদের জন্য পরিচালনা পরিষদ ঘোষণা করা হয়। সিলেটের ব্যবসায়ী সমাজ এই বিতর্কিত কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে পরিচালনা পরিষদের ২০ জন পরিচালকের মধ্যে সহ-সভাপতিসহ ৫ জন পরিচালক এ পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের উপর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে চেম্বার সভাপতি তাহমিন আহমদসহ আরো ৫/৬জন পরিচালকের উপর মামলা হয়। এই মামলার আসামীরা বর্তমানে পলাতক থেকেও নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আমিতুজ্জামান চৌধুরী দুলু অভিযোগ করে বলেন, স্বৈরাচারের দোষররা গোপনীয়ভাবে পরিচালনা পরিষদ নিজেরা পূর্ণগঠন করে একজন পরিচালককে সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। যিনি স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। বর্তমানে একজন সিনিয়র পরিচালককে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বানিয়ে চেম্বার কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই গোপনীয় পরিষদ চেম্বারের এজিএম অনুষ্ঠানের পায়তারা করছে যা ব্যবসায়ীরা কোনভাবেই মেনে নিবে না। তিনি আরো বলেন, প্রতিনিধিত্বশীল পরিচালনা পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে একজন প্রশাসক নিয়োগ করে নির্বাচন আয়োজন করা এখন সময়ের দাবি। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে মহাপরিচালক বাণিজ্য সংগঠন, বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা বরাবরে পৃথক দুটি আবেদন করা হয়েছে। এরপর মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে চিঠির প্রেক্ষিতে সিলেটের জেলা প্রশাসক ব্যবসায়ীদের সাথে সভা করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু এই ব্যাপারে কোন দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন না বলে উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠন নিয়ে কোন ধরণের ষড়যন্ত্র মেনে নিতে পারি না। আমরা ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধভাবে সকল যড়যন্ত্র প্রতিহত করতে প্রস্তত রয়েছি। নির্বাচন আয়োজনের জন্য একজন প্রশাসক নিয়োগের কোন বিকল্প নেই বলে সিলেটের ব্যবসায়ীরা মনে করেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযেগিতা কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক খন্দকার সিপার আহমদ।