সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ সিদ্দিকী বলেছেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শারিরীক মানসিক বিকাশের অনুকুল পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। শিশুরা যাতে দীর্ঘক্ষণ অভুক্ত না থাকে তার ব্যবস্থা নিতে হবে, তাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকতে হবে। বিশেষ করে তাদেরকে ডিভাইস এডিকশন থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। একই সাথে প্রাইমারি থেকে বিশ^বিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদেরকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে।
আকবেট ও গণসাক্ষরতা অভিযানের যৌথ উদ্যোগে এবং ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয়ের ব্রাক শিক্ষা উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
নগরীর হোটেল নির্ভানা ইন মিলনায়তনে রোববার ‘প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন : আমাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযান’এর নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী।
মতবিনিময় সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সুস্মিতা রায়, সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাখাওয়াত এরশেদ, সুনামগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম, মৌলভীবাজার জেলা শিক্ষা অফিসার এ বি এম সাইফুদ্দিন ইয়াহিয়া এবং বিশ^ শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সহকারী অধ্যাপক প্রণব কান্তি দেব। আকবেটের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর তানজিনা আক্তার মুক্তার স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় গণসাক্ষরতা অভিযানের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো: আব্দুর রউফ প্রোগ্রামের আলোচনা পত্র উপস্থাপন করেন।
প্রধান অতিথি আবু আহমদ ছিদ্দীকী আরো বলেন, আমাদের প্রাথমিক স্কুলগুলোতে এখনো শিক্ষক স্বল্পতা রয়েছে, শিক্ষকদের শূণ্য পদগুলো পূরণ করতে হবে। শুধু সিলেটে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে ২২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ শূণ্য রয়েছে। একই সাথে মাদ্রাসা শিক্ষাকেও আপগ্রেড করে তাদেরকে কাজে লাগাতে হবে।
সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ স্কুলের পাঠদান পরবর্তী সময়ে যাতে শিশুরা ব্যবহার করতে পারে এ ব্যাপারে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে তিনি সভাকে অভিহিত করেন।
সভাপতির বক্তব্যে রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমাদের শিশুদের স্কুলে না যাওয়ার প্রবণতা ও পড়ালেখার প্রতি অনীহা দূর করতে হবে। শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে শ্রেণিকক্ষে তাদের পড়াশোনার অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি, খেলার সামগ্রী প্রদান, খেলার মাঠ নিশ্চিত করাসহ তাদের শারিরীক-মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সংশ্লিষ্ট সবাইকে যতœশীল হতে হবে।
সভায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক প্রিন্সিপাল ডা. অসুল এ. চৌধুরী, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিনিয়র সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন, দৈনিক পুণ্যভুমি পত্রিকার সম্পাদক আবু তালেব মুরাদ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসস-এর সিলেট ব্যুরো চিফ সেলিম আউয়াল, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গুলজার আহমদ হেলাল, সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রভেশন অফিসার মো: তমির হোসেন চৌধুরী, ওসমানী হাসপাতালের সমাজসেবা কার্যালয়ের জাহানারা বেগম, সরকারি শিশু পরিবার বালক উপ-তত্বাবধায়ক আয়েশা আক্তার বৃষ্টি, সরকারি শিশু পরিবার বালিকা উপ-তত্বাবধায়ক মুশতাক চৌধুরী, অনলাইন প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল মুহিত দিদার, জাতীয় দৈনিক নাগরিক ভাবনা পত্রিকার সিলেট জেলা প্রতিনিধি রুবেল আহমদসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সরকারি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ, গবেষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার শতাধিক প্রতিনিধি তাদের মতামত প্রদান করেন।