কোম্পানীগঞ্জে পিলার ঘেঁষে বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে ধলাই ব্রিজ

6

সোহেল আহমদ, কোম্পানীগঞ্জ

সিলেট বিভাগের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু হচ্ছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ‘ধলাই সেতু’। ২০০৬ সালে নির্মিত এই সেতুটি উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর, উত্তর রনিখাই ও গোয়াইনঘাট উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। ধলাই নদীর উপর নির্মিত এই সেতুটির দিকে নজর পড়েছে কিছু দুষ্কৃতিকারীর। গত প্রায় ১ বছর থেকে তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নুড়ি পাথর ও বালু উত্তোলন করছে সেতুটির নিচ থেকে। যার ফলে হুমকিতে পড়েছে এই সেতু। ভোলাগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশ থাকাকালীন সময়ে প্রায়ই অভিযান দিয়ে নৌকা ধরে আনত পুলিশ। এখন ফাঁড়িতে পুলিশ না থাকায় দিনরাত দেদারসে চলছে সেতুর নিচ থেকে বালু পাথর লুটপাট। আর এর নেতৃত্বে রয়েছেন দু’পাড়ের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তারা নৌকা প্রতি দেড়শো থেকে ২’শ টাকা নিয়ে থাকেন। দীর্ঘতম এই সেতুটি ভেঙে গেলে চরম দুর্ভোগে পড়বে ধলাই নদীর পূর্ব পাড়ের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। বালু শ্রমিকদের কাছ থেকে জানা যায়, ধলাই সেতুর নিচে ও এর আসেপাশের অংশে খুব ভালো মানের বালু পাওয়া যায়। তাই ঐ জায়গার মালিকানা দাবি করে প্রায় ১৫ জনের একটি চক্র আছে তারা দেড়শো থেকে ২’শ টাকার বিনিময়ে নৌকা দিয়ে বালু উত্তোলন করায়। দীর্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করে পুরো এলাকা ধ্বংস করে দিয়ে এখন সেতুর নিচ অংশ লক্ষ্য করেছে ওই চক্রটি।
উপজেলা সদরের সঙ্গে ২টি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষের সড়ক পথে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যমে হচ্ছে ধলাই সেতু। এছাড়া উৎমা ছড়া পর্যটন স্পটে যাতায়াতের একমাত্র পথও এ সেতু। সেতু এলাকা লক্ষ্য করে অবাধে বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বিভিন্ন সময় পুলিশ অভিযান চালালেও পুনরায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেতুর পিলার ঘেঁষে বালু উত্তোলন শুরু করে তারা। এ পরিস্থিতিতে সেতু রক্ষায় প্রশাসনের কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ৪’শ ৩৪ দশমিক ৩৫ মিটার দীর্ঘ ও ৯ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের সেতুটি সিলেট বিভাগের একসময়ে দীর্ঘতম সেতু ছিল। দৈর্ঘ্যরে দিক থেকে বিভাগে বর্তমানে এর অবস্থান দ্বিতীয়। ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির পাশের ধলাই নদের উভয় তীরের মানুষের যাতায়াতের জন্য ২০০৩ সালে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ধলাই সেতু নির্মিত হওয়ায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর, উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ সরাসরি সড়ক যোগাযোগের আওতায় আসে। পাশাপাশি দেশের সর্ববৃহৎ ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে পাথর পরিবহন সহজ হয়।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানা বলেন, বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। মঙ্গলবারও বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে।