পানি নামতে শুরু করেছে

1

স্টাফ রিপোর্টার

সিলেট নগরীর জলাবদ্ধ এলাকা থেকে পানি সরে যাচ্ছে। কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি কম হওয়ায় নগরীতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। তবে নগরী জলাবদ্ধ অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও মানুষের ভোগান্তি কমছে না।
এদিকে উপজেলা পর্যায়ে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে নদ-নদীর বাঁধ ভেঙে ওই সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেট কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার চারটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে গতকাল রবিবার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ পয়েন্টে ৮০ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেটের জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভেঙে এবং পানি উপচে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিয়ানীবাজারের মুড়িয়া ইউপির সদস্য বদরুল ইসলাম বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বন্যার পানি গত কয়েক দিনের মতো একই জায়গায় রয়েছে।
সিলেট নগরী জলাবদ্ধ অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও মানুষের ভোগান্তি কমছে না। নগরবাসী ঘর থেকে বের হলেই পানিতে নেমে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর ডি বøক এলাকার বাসিন্দা ফাহাদ মো. হোসেন বলেন, ঘর ও সড়ক থেকে পানি নেমে গেছে। ঘর গোছাতে এখন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, বৃষ্টি কমে আসায় পানি নামতে শুরু করেছে। তবে ধীরগতিতে পানি নামছে। আরও কয়েক দিন এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতির দ্রæত উন্নতি হবে।
এদিকে, সিলেটের জকিগঞ্জের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান। শনিবার বিকেল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে লোকজনের মধ্যে রান্না করা খাবার ও ত্রাণ বিতরণ করেন। পরিদর্শনকালে জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফসানা তাসলিম, সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) অর্ণব দত্ত, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আতাউর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণসহ জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনের পাশে সরকার রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সবাই সর্তক থাকতে হবে। বানভাসী মানুষকে খাদ্য ও চিকিৎসা সেবা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন তৎপর রয়েছে। ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ সংস্কার প্রসঙ্গে বলেন, বেড়িবাঁধ সংস্কারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সবসময় তদারকি করছেন। বন্যার পানি কমার সাথে সাথে দ্রæত বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পেছনে কারো গাফলতি পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, জকিগঞ্জে বন্যার কারণে কষ্ট চরম আকার ধারণ করেছে। বন্যা কবলিত এলাকায় নৌকা না থাকায় গ্রামের লোকজন বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। নলক‚প পানিতে ডুবে যাওয়ার কারণে অনেক এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সঙ্কটও রয়েছে।